রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর।—ফাইল চিত্র।
কিছুদিন আগেই সিএমওএইচ সুমিত গঙ্গোপাধ্যায়কে বদলি করা হয়। তা নিয়ে বিতর্ক দানা বেঁধেছিল। এ বারে ডেপুটি সিএমওএইচ-১ বিশ্বজিৎ রায়কে বদলি করা হল। বুধবার রাতেই স্বাস্থ্য দফতর থেকে এই নির্দেশ পান তিনি। তাঁকে কলকাতার লুম্বিনী পার্ক মানসিক হাসপাতালের সুপারিন্টেন্ডেন্ট করে পাঠানো হয়েছে।
করোনা মোকাবিলায় কোচবিহারের বিশ্বজুৎবাবু ভাল কাজ করছিলেন বলেই তাঁর সহকর্মীদের দাবি। করোনার প্রকোপ যখন বাড়ছে, ঠিক এমন সময়ে কেন তাঁকে কেন বদলি করা হল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। যদিও স্বাস্থ্য দফতরের দাবি, এটা রুটিন বদলি। বিশ্বজিৎবাবু বৃহস্পতিবার বলেন, “বর্তমানে সুস্থ আছি। ভাল হলেই নতুন দায়িত্বে যোগ দেব।” ওই বিষয়ে অবশ্য স্বাস্থ্য বা জেলা প্রশাসনের কোনও আধিকারিক মন্তব্য করতে চাননি।
অভিযোগ, কোভিড হাসপাতালের স্থান নিয়ে বিরোধের জেরেই প্রাক্তন সিএমওএইচকে তাঁর পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বিশ্বজিৎবাবুর সঙ্গে প্রাক্তন সিএমওএইচের সম্পর্ক খুবই ভাল ছিল। বিশ্বজিৎবাবু করোনা প্রকোপের শুরুর সময় থেকেই সামনের সারিতে থেকে লড়াই করেছেন। প্রথমটায় জেলায় ঘুরে ঘুরে সবাইকে সচেতন ও সতর্ক থাকার পরামর্শ। নিজে হাতে লালারস সংগ্রহের কাজ করেছেন। প্রায় তিন হাজার বাসিন্দারা লালারস তিনি সংগ্রহ করেন। তাঁর ঘনিষ্ঠদের বক্তব্য, কোভিড হাসপাতালের পরিকাঠামো তৈরিতে তাঁর ভূমিকা ছিল। সরাসরি ফোন করেও বহু মানুষ তাঁর কাছ থেকে পরামর্শ নিয়েছেন। বাসিন্দাদের অনেকেই বলেন, “অন্ততপক্ষে আরও কয়েক মাস তাঁকে রাখলে ভাল হত।”
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, কোচবিহারে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দেড় হাজার পেরিয়ে গিয়েছে। প্রতিদিনই আক্রান্তের সংখ্যা তিন অঙ্কের ঘর ছাড়িয়ে যাচ্ছে। এর মধ্যে অবশ্য বেশিরভাগ সুস্থ হয়ে উঠেছেন। মৃত্যু হয়েছে কয়েকজনের। এই অবস্থায় জেলায় দক্ষ স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রয়োজন বলে চিকিৎসক মহলের অনেকেই মনে করছেন। এই অবস্থায় একজন দক্ষ অফিসারকে বদলি করায় স্বাস্থ্যকর্মীদের মধ্যেও ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক অবশ্য বলেন, “রুটিন বদলি হবেই। সেই দায়িত্ব আরেক আধিকারিক পালন করবে। সবাই মিলেই আমরা জেলাকে করোনামুক্ত করার চেষ্টা করব।”