প্রতীকী ছবি।
ডেঙ্গি প্রতিরোধে উত্তরবঙ্গে জেলাগুলোর ক্ষেত্রে ‘হাই অ্যালার্ট’ জারি করে গেলেন স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকরা। সেই সঙ্গে ‘জিরো টলারেন্স’ অর্থাৎ ডেঙ্গির চিকিৎসায় কোথাও কোনও গাফিলতি যাতে না হয়, সে ব্যাপারেও সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।
মঙ্গলবার শিলিগুড়ি হিলকার্ট রোডে বিবেকানন্দ ভবনে কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি, কালিম্পং, দার্জিলিং জেলায় ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণের কাজে যুক্ত পর্যবেক্ষক, মেডিক্যাল কলেজগুলোর এমএসভিপি, হাসপাতালগুলোর সুপারদের নিয়ে বৈঠক হয়। উপস্থিত ছিলেন রাজ্যে ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণের কাজে যুক্ত বিশেষ আধিকারিক সুদীপ্ত ভাদুড়ি এবং রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের ডেপুটি ডিরেক্টর (ম্যালেরিয়া) সিদ্ধার্থ নিয়োগী। জেলাগুলোয় ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণের কাজে নোডাল অফিসার বা উপমুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ২-রা ছিলেন। স্বাস্থ্য দফতরের একটি সূত্রেই জানা গিয়েছে, বৈঠকে ডেঙ্গি নিয়ে উত্তরবঙ্গের ওই জেলাগুলোকে ‘হাই অ্যালার্ট’ বা অতি সতর্ক থাকতে বলেছেন তাঁরা। এই পরিস্থিতিতে কোন কোন দিকে নজর দিতে হবে, সে সবও বিস্তারিত জানানো হয়েছে।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ডেঙ্গি নির্ণায়ক পরীক্ষার ক্ষেত্রে রক্তের নমুনা যে দিন সংগ্রহ এবং পরীক্ষার জন্য পাঠানো হবে, সেই দিনই রিপোর্ট দিতে হবে। ডেঙ্গি রোগীদের ক্ষেত্রে দুই বেলা রক্ত পরীক্ষা বাধ্যতামূলক। এবং সকালের রক্ত পরীক্ষা রিপোর্ট সকালেই দিতে হবে। সকালের রিপোর্ট বিকেলে দিলে চলবে না। তা ছাড়া রোগীদের কী চিকিৎসা হচ্ছে, তার তথ্য রাখার উপর জোর দিতে বলা হয়েছে। বিশেষ করে রোগীর ঠিকানা যেন পরিষ্কার ভাবে লেখা থাকে। যে রোগীকে চিকিৎসা করালে সুস্থ হওয়ার কথা, সেই রোগী যেন মারা না যান, বিষয়টিতে গুরুত্ব দিতে বারবার বলা হয়েছে। চিকিৎসার ক্ষেত্রে দ্রুততার সঙ্গে যাতে ‘ফ্লুইড থেরাপি’ শুরু করা হয় নজর রাখতে হবে সে দিকেও। বলা হয়েছে, পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার বজায় রাখার দিকেও। কোথাও জ্বরের রোগী বেশি হচ্ছে, খবর পেলে সেখানে স্বাস্থ্য দফতরের তরফে টিম পাঠাতে বলা হয়েছে।
ইতিমধ্যেই শিলিগুড়ি শহর এবং লাগোয়া এলাকায় ডেঙ্গিতে আক্রান্তের খবর মিলেছে। জলপাইগুড়ি জেলাতেও ডেঙ্গি মিলছে। যদিও ডেঙ্গিতে মৃত্যুর কোনও খবর নেই বলে দাবি করা হয়। দু’বছর আগে ডেঙ্গি ভয়াবহ আকার নেয় শিলিগুড়িতে। অন্তত ১৩ জন মারা যান। আক্রান্ত হন কয়েক হাজার। সরকারি হিসেবে অবশ্য সংখ্যা অনেক কম বলে দাবি করা হয়।
ডেঙ্গির চিকিৎসার ক্ষেত্রে নানা অনিয়মের অভিযোগ জেলাগুলোতে গত কয়েক বছর ধরেই উঠছে। অভিযোগ, রক্ত পরীক্ষার রিপোর্ট পেতে তিন-চার দিনও দেরি
করা হয় অনেক ক্ষেত্রে। রোগীর পরিবারকে অন্ধকারে রাখা হয়। শয্যার অভাবে মেঝেতে বিছানা পেতেও হাসপাতালে রোগী রাখতে হয়েছে।
এ বছর তাই ডেঙ্গি রোগীদের জন্য আলাদা ব্যবস্থাও রাখতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে হাসপাতালগুলোকে।
ওয়ার্ডে সচেতনতা মূলক পোস্টার লাগাতে হবে। ফিভার ক্লিনিকে লিফলেট বিলি করতে হবে। হাসপাতাল এবং নার্সিংহোমগুলোতে ডেঙ্গির চিকিৎসা নিয়ম মেনে
হচ্ছে কি না ঘুরে দেখবেন পর্যবেক্ষকরা।