বৃষ্টি চলছে, দ্বিতীয় ফ্ল্যাশের চা তরতরিয়ে বাড়ছে। শনিবার জলপাইগুড়ি ডেঙ্গুয়াঝাড় চা বাগানে চা পাতা তুলতে মহিলা শ্রমিকদের ভিড়। ছবি - সন্দীপ পাল
চা গাছে পাতা এবং কুঁড়ি ফেরাল বৃষ্টি, বাড়ল পাতার দামও। দ্বিতীয় ‘ফ্লাশ’-এর গোড়াতেই চা বলয়ে আপাতত বৃষ্টির ‘সুখ’। বৃষ্টির অভাবে প্রথম ‘ফ্লাশ’-এ রাজ্যের চা উৎপাদন এখনও পর্যন্ত পাওয়া হিসাবে, প্রায় ১২ শতাংশ মার খেয়েছে। চা পর্ষদের তরফে মার্চ এবং এপ্রিলের উৎপাদনের প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, গত তিন বছরে চা উৎপাদন এ বছর সবচেয়ে কম। দ্বিতীয় ‘ফ্লাশ’ নিয়েও চা বলয়ে তৈরি হয়েছিল উদ্বেগ। যদিও দ্বিতীয় ‘ফ্লাশ’-এর গোড়া থেকেই বৃষ্টি শুরু হয়েছে উত্তরবঙ্গে। বৃষ্টিতেই প্রাণ ফিরে পেয়েছে চা গাছ, দাবি চা মহল্লার। তবে রোগ-পোকার আক্রমণ এখনও রয়েছে। দ্বিতীয় ‘ফ্লাশ’-এর পাতার গুণমানও ভাল বলে দাবি। সে কারণে গত বারের থেকে কেজিতে অন্তত ২০ টাকা করে দাম বেড়েছে চায়ের।
চা বাগান পরিতালকদের সংগঠন ‘ইন্ডিয়ান টি অ্যাসোসিয়েশন’-এর ডুয়ার্স শাখার চেয়ারম্যান জীবনচন্দ্র পান্ডে বলেন, “বৃষ্টি নিয়মিত হচ্ছে। বৃষ্টি পেয়ে পাতার মানও ভাল হয়েছে। দামও বেশি মিলছে। আশা করছি, এই বৃষ্টি থাকবে।” উত্তরবঙ্গ জুড়েই বৃষ্টি চলছে। চা বলয়ে নিয়মিত বৃষ্টি হচ্ছে। কোনও দিন সকালে তো কোনও দিন রাতভর বৃষ্টি চলছে, কখনও দুপুরেও বৃষ্টি চলছে। চায়ের জন্য যেমন প্রয়োজন সুসংহত বৃষ্টি, তেমনটাই চলছে। কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতরের সিকিম এবং উত্তরবঙ্গের মুখপাত্র গোপীনাথ রাহা বলেন, “আপাতত এমন ভাবেই বৃষ্টি চলবে। নিয়মিত বৃষ্টি পাবে উত্তরবঙ্গ।”
চা পর্ষদের প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী, উত্তরবঙ্গ তথা রাজ্যের চা উৎপাদক এই তিন এলাকা মিলে ক্ষতির পরিমাণ ১২ শতাংশ ছাড়িয়েছে। বৃষ্টির অভাবের সঙ্গে যোগ হয়েছিল রোগ-পোকার আক্রমণ। উৎপাদনের অভাবে বহু পাতা কিনে চা তৈরি করার কারখানা (বটলিফ) বন্ধও রয়েছে। তবে সম্প্রতি বৃষ্টিতে চা পাতায় রসের সঞ্চার হয়েছে এবং দ্বিতীয় ‘ফ্লাশ’-এর গুণমান বেড়ে গিয়েছে। জুন থেকে চা নিলামে দরও বাড়ছে। তবে রোগকার আক্রমণ এখনও পুরোপুরি যায়নি। ক্ষুদ্র চা চাষিদের সর্বভারতীয় সংগঠনের (সিস্টা) সভাপতি বিজয়গোপাল চক্রবর্তী বলেন, “বৃষ্টি হচ্ছে, সেটা তো খুবই ভাল। তবে লুপার-সহ কিছু রোগ-পোকা এখনও রয়েছে। বৃষ্টি নিয়মিত চলতে হবে, না হলে দ্বিতীয় ফ্লাশও ক্ষতিপূরণ করতে পারবে না।”