স্টেশন ঘুরে দেখে আশ্বাস রেলকর্তার

বদলে যাবে হলদিবাড়ি

পরিদর্শনে এসে হলদিবাড়িকে একটি আন্তর্জাতিক মানের স্টেশনে পরিণত করার আশ্বাস দিলেন ডিআরএম। ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে হলদিবাড়ি দিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে রেল যোগাযোগের ব্যাপারে সম্প্রতি সিদ্ধান্ত হয়েছে। তার পরে ডিআরএমের আশ্বাসে আশাবাসী স্থানীয় বাসিন্দারা। রবিবার হলদিবাড়ি স্টেশনে পরিদর্শনে আসেন উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের কাটিহারের ডিআরএম উমাশঙ্কর সিংহ যাদব।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

হলদিবাড়ি শেষ আপডেট: ১৮ জুলাই ২০১৬ ০২:৫৬
Share:

হলদিবাড়ি সীমান্তে পরিদর্শনে উত্তর-পূর্ব রেলের কাটিহারের ডিআরএম উমাশঙ্কর সিংহ যাদব। ছবি: রাজা বন্দ্যোপাধ্যায়

পরিদর্শনে এসে হলদিবাড়িকে একটি আন্তর্জাতিক মানের স্টেশনে পরিণত করার আশ্বাস দিলেন ডিআরএম। ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে হলদিবাড়ি দিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে রেল যোগাযোগের ব্যাপারে সম্প্রতি সিদ্ধান্ত হয়েছে। তার পরে ডিআরএমের আশ্বাসে আশাবাসী স্থানীয় বাসিন্দারা।

Advertisement

রবিবার হলদিবাড়ি স্টেশনে পরিদর্শনে আসেন উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের কাটিহারের ডিআরএম উমাশঙ্কর সিংহ যাদব। তিনি বলেন, “কেন্দ্রীয় সরকার হলদিবাড়ি স্টেশন এবং বাংলাদেশের মধ্যে রেললাইন পাতা এবং হলদিবাড়ি স্টেশনের পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য ৩১ কোটি টাকা মঞ্জুর করেছেন। হলদিবাড়ি স্টেশনের চেহারা পাল্টে যাবে। এটি একটি আন্তর্জাতিক মানের স্টেশনে পরিণত হবে। এখানে ফুডপ্লাজা, পার্ক সবকিছু নির্মাণ করা হবে। বাংলাদেশ থেকে ট্রেন এসে দাঁড়াবে। তার জন্যে স্টেশন বিল্ডিং, প্ল্যাটফর্ম সবকিছু নতুন করে তৈরি করা হবে।’’

হলদিবাড়ি স্টেশনের উজ্জ্বল ইতিহাস স্মরণ করে এখনও গর্ববোধ করেন এলাকার বাসিন্দারা। ১৯৬৫ সাল পর্যন্ত হলদিবাড়ির সঙ্গে তদানীন্তন পাকিস্তানের রেল যোগাযোগ ছিল। স্বাধীনতার আগে হলদিবাড়ি দিয়ে সরাসরি কলকাতার যোগাযোগ ছিল। দার্জিলিং মেল তখন হলদিবাড়ি দিয়ে যাতায়াত করতো। তখনকার শিলিগুড়ি জংশন স্টেশন থেকে রাতে ট্রেন ছেড়ে সকালে শিয়ালদহ পৌঁছতো। একইভাবে শিয়ালদহ থেকে ছেড়ে সকালে শিলিগুড়িতে আসতো। তখন নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন ছিলনা। সেই সময় হলদিবাড়ির গুরুত্ব অনেক বেশি ছিল। কেশব সেন কলকাতা থেকে তাঁর মেয়ে সুনীতিদেবীকে নিয়ে হলদিবাড়ি স্টেশনে নেমে তিস্তা পার হয়ে কোচবিহারে গিয়েছিলেন। সুনীতিদেবীর সঙ্গে কোচবিহারের মহারাজা নৃপেন্দ্রনারায়ণের বিয়ে হয়। সুনীতিদেবীই হন কোচবিহারের মহারানি। এখনও সে সব গল্প প্রবীণদের মুখে মুখে ফেরে।

Advertisement

দেশভাগের পরে হলদিবাড়ি তার গুরুত্ব হারিয়ে ফেলে। কারণ তারপর থেকে পাকিস্তান থেকে একটিমাত্র ট্রেন হলদিবাড়ি স্টেশনে এসে দাঁড়াতো। আবার ফিরে যেত। ১৯৬৫ সালে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের পর তাও বন্ধ হয়ে যায়। হলদিবাড়িতে রেলের সমস্ত জমি দখল হয়ে যায়। এখন সেই জমি উদ্ধারের কাজ চলছে। জমি পুরোপুরি উদ্ধার হয়ে গেলেই কাজ শুরু হবে। স্টেশন এলাকায় ছয় লেনের ট্র্যাক বসবে। প্রাথমিকভাবে হলদিবাড়ি দিয়ে মালগাড়ি চলবে। তারপর যাত্রীদের নিয়ে গাড়ি যাতায়াত করবে। হলদিবাড়ির সঙ্গে বাংলাদেশের রেলপথ স্থাপন সমেত অন্যান্য কাজ শুরু করতে আরও দশ মাস সময় লাগবে বলে আধিকারিকদের অনুমান। যাদের উৎখাত করা হচ্ছে তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করার দায়িত্ব রাজ্য সরকারের বলে এ দিন জানিয়ে দেন ডিআরএম। তাঁর কথায়, “রেলের জমি যারা দখল করে আছেন তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা রাজ্য সরকার করবে। রেল কিছু করতে পারবে না।’’

এ দিন ডিআরএম হলদিবাড়ি স্টেশন থেকে সাড়ে তিন কিলোমিটার দূরে সীমান্ত এলাকায় যান। যেখানে হলদিবাড়ি থেকে রেললাইন বাংলাদেশে ঢুকেছে সেই এলাকাটি পরিদর্শন করেন তিনি। হলদিবাড়ি থেকে এই সাড়ে তিন কিলোমিটার এলাকায় রেললাইন পাতা হবে। এই পথে বেশ কয়েকটি কালভার্ট ও সেতু ভেঙে গিয়েছে। সেগুলি ফের বানানো হবে বলে তিনি জানান।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement