—ফাইল চিত্র
কয়েক বছর আগেও বিভিন্ন প্রশাসনিক দফতর হস্তান্তর নিয়ে বিস্তর টানাপড়েন চলেছে রাজ্য সরকার ও দার্জিলিঙের গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (জিটিএ) মধ্যে। দু’বছর আগে জিটিএ-র দায়িত্বে বিনয় তামাং, অনীত থাপারা আসার পর থেকে তা অনেকটাই কমেছে। এবার বড়সড় দায়িত্ব পেতে চলেছে জিটিএ। পাহাড় লাগোয়া জিটিএ এলাকার মধ্যে থাকা পাঁচটি স্কুলের দায়িত্ব জিটিএ শিক্ষা দফতরের হাতে তুলে দিতে চলেছে রাজ্য শিক্ষা দফতর। ফলে, এরপর থেকে প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ নয়, ওই পাঁচটি স্কুলের প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণ চলে আসছে জিটিএ-র হাতে।
দীর্ঘদিন ধরে আলোচনা চলার পর সরকার এই সিদ্ধান্ত নিল বলে বিশেষ সূত্রের খবর। সরকারি ওই সূত্রেই জানা গিয়েছে, গত ২৪ ডিসেম্বর জিটিএ-র শিক্ষা দফতর থেকে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি হয়েছে। তা রাজ্য শিক্ষা দফতরের বিভিন্ন স্তরে পাঠানো হয়েছে। শিলিগুডির নকশালবাড়ি, মাটিগাড়া এবং সেবক লাগোয়া নেপানিয়া প্রাথমিক স্কুল, বেলগাছি প্রাথমিক স্কুল, সিঙ্গিমারি ফরেস্ট ভিলেজ প্রাথমিক স্কুল, সেবক ১০ মাইল প্রাথমিক স্কুল এবং সমরডাঙা গ্রামীণ প্রাথমিক স্কুলের নিয়ন্ত্রণ বদল হবে। বাম আমলের পর তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসার পর জেলা প্রশাসনের তরফে শ্যামল সেন কমিটির সুপারিশ মেনে মৌজা হস্তান্তর করা হয়েছিল। কিন্তু স্কুলগুলি জিটিএ-র তরফে দাবি করা হলেও তা গত ৭/৮ বছরে নানা প্রশাসনিক জটিলতায় করা সম্ভব হয়নি। নকশালবাড়ির নেপানিয়ার মত এলাকায় আদিবাসীদের একটা বড় অংশ এর বিরোধিতা করেন। এসবের জেরে আটকে যায় স্কুলের প্রশাসনিক দায়িত্ব হস্তান্তর। গত পুজোর আগে থেকে আবার সবপক্ষকে নিয়ে আলোচনায় সমস্যা মেটে। শিলিগুড়ির প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারপার্সন তথা ডিআই (প্রাথমিক) বালিকা গোলে বলেন, ‘‘পাঁচটি প্রাথমিক স্কুলের প্রশাসনিক ক্ষমতা হাত বদলের সিদ্ধান্ত হয়ে গিয়েছে। রাজ্য সরকারের তরফে আজ, সোমবার নির্দেশ দিলে মঙ্গলবারের মধ্যে সমস্ত প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়ে যাবে। সেই রকম প্রস্ততি রাখা হয়েছে।’’
স্কুল শিক্ষা দফতর সূত্রের খবর, পাঁচটি প্রাথমিক স্কুলের সঙ্গে পাহাড় লাগোয়া জিটিএ-র এলাকার একটি জুনিয়র এবং একটি হাইস্কুলও জিটিএ-কে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়ে গিয়েছে। গত সপ্তাহে জিটিএ-র তরফে জারি করা বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছিল, ৩০ ডিসেম্বর নকশালবাড়ির নেপানিয়া স্কুলে পাঁচটি স্কুলের নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা হাতবদল করা হবে। গত সেপ্টেম্বর থেকে এই প্রশাসনিক দায়িত্ব বদল নিয়ে নতুন করে চিঠি চালাচালি চলছিল। শীতের ছুটির পর শতাধিক ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক-শিক্ষিকাদের দায়িত্ব নেবে জিটিএ। তাঁদের স্কুলের পরিকাঠামো ছাড়াও বেতন, ছাত্রছাত্রীদের পোশাক, বইপত্র, মিড-ডে মিল সব কিছুই এবার দেখবে জিটিএ।