প্রতীকী ছবি।
দার্জিলিং ও কালিম্পং পাহাড়ে করোনা টিকা নিয়ে ভয়-ভীতি কাটাতে সক্রিয় হয়ে উঠেছেন জিটিএ কর্তৃপক্ষ। প্রথম দফার করোনা টিকা নিয়ে পাহাড়বাসীর একাংশের মধ্যে নানা গুজব ছড়িয়েছে বলে অভিযোগ। শরীর খারাপ, সংক্রমণ, চুলকানি, মাথা ঘোরার মতো কিছুর উপসর্গের আশঙ্কার কথা না জেনেই একাংশ বাসিন্দারা ছড়াচ্ছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। এর ফলে আরও অনেকে টিকা নিয়ে আশঙ্কিত হয়ে পড়ছেন।
পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝতে পেরে ময়দানে জিটিএ কর্তৃপক্ষ। স্বাস্থ্য ও প্রশাসনকে নিয়ে প্রচার শুরু হয়েছে। বাসিন্দাদের মনোবল বাড়তে জিটিএ চেয়ারম্যান অনীত থাপা নিজে প্রথমে টিকা নেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন। কিন্তু প্রথম দফার ডোজ় স্বাস্থ্য কর্মীদের জন্য আসায় জিটিএ চেয়ারম্যান টিকা নেননি। সাধারণ মানুষের সঙ্গে একসঙ্গে তিনি টিকা নেবেন বলে নতুন করে ঘোষণা করেছেন।
তিনি বলেছেন, ‘‘মানুষের একাংশের মনে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। তাই আমি প্রথমে টিকা নেব ভেবেছিলাম। কিন্তু এটা স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য এসেছে বলে আমি পিছিয়ে এলাম। এর পরের টিকা সব বাসিন্দাদের জন্য আসছে। সেখানে সাধারণ পাহাড়ের বাসিন্দাদের মনোবল বাড়াতে তাঁদের সঙ্গেই আমি টিকা নেব।’’ পাহাড়বাসীকে কোনও রকম গুজবে কান না দিতে অনুরোধও করেছেন অনীত।
উত্তরবঙ্গে প্রথম করোনা পজ়িটিভের ঘটনা ধরা পড়ে কালিম্পঙে। চেন্নাই ফেরত এক মহিলা করোনায় উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। তাঁর পরিবারের বেশ কয়েকজন সদস্য আক্রান্ত হন। ধীরে ধীরে সমতলের সঙ্গে পাহাড়েও সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে। মৃত্যু থেকে শুরু করে পাহাড়ের প্রায় প্রতিটি ব্লকেই সংক্রমণের ঘটনা ঘটতে থাকে। একসময় লকডাউন চলাকালীন ত্রিবেণীতে আলাদা কোভিড হাসপাতাল তৈরি করে জিটিএ। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের সঙ্গে সমম্বয় রেখেই কোভিড হাসপাতালটি কাজ করছে।
টিকাকরণের কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা হতেই স্থির করা হয়, কালিম্পং থেকেই করোনার টিকা দেওয়া হবে। শনিবার সেই মতো কালিম্পং, কার্শিয়াং এবং দার্জিলিঙে তিনটি টিকাকরণের কেন্দ্র করা হয়েছিল। ১০০ শতাংশ টিকাকরণ স্বাস্থ্য কর্মীদের হয়েছে।
আজ, সোমবার ফের তিন জায়গায় স্বাস্থ্য কর্মীদের টিকা দেওয়ার কাজ হবে। স্বাস্থ্য দফতর থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, শনিবার যাঁদের টিকা দেওয়া হয়েছে। সকলেই ভাল আছেন। কারও কোনও সমস্যা তৈরি হয়নি। তাই অযথা আতঙ্কিত বা আশঙ্কার কোনও কারণ নেই। টিকা নেওয়া স্বাস্থ্য কর্মী, চিকিৎসকেরাও তা পরিচিতদের জানিয়েছেন।
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, এর মধ্যে রবিবার সকালে পাহাড়ে কি টিকা দেওয়া হচ্ছে তা নিয়ে আলোচনা তৈরি হয়। সরকারি ছাড়পত্র পাওয়া কোভ্যাক্সিন বা কোভিশিল্ড দেওয়া হচ্ছে, তা জানার চেষ্টা করেন অনেকে। স্বাস্থ্য তো বটেই, জিটিএ’র তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, জেলায় ১৮ হাজার কোভিশিল্ড ভ্যাকসিন রয়েছে। এই টিকাই স্বাস্থ্য কর্মীদের দফায় দফায় দেওয়া হবে।
দ্বিতীয় ধাপে, সাধারণ বাসিন্দাদেরও কোভিশিল্ড দেওয়া হবে বলে আপাতত ঠিক রয়েছে।