কুমারগ্রামের মধ্য হলদিবাড়িতে গ্রেটার কোচবিহার পিপলস অ্যাসোসিয়েশনের একটি সভা শুরুর আগে পুজোয় অনন্ত রায়। —নিজস্ব চিত্র।
জীবন সিংহের গড় বলে পরিচিত কুমারগ্রামের মধ্য হলদিবাড়িতে এসে কোচবিহার রাজ্যের প্রসঙ্গে সরব হলেন গ্রেটার কোচবিহার পিপলস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অনন্ত রায় (মহারাজ)। ‘গ’ শ্রেণির রাজ্য কোথায় গেল— সেই প্রশ্নও তোলেন তিনি। তবে জীবন অথবা কেএলও প্রসঙ্গে অবশ্য কোনও কথা বলেননি মহারাজ। তাঁর মুখে শোনা গিয়েছে কেন্দ্র-রাজ্য উভয় সরকারের প্রসংশাই।
কুলকুলিহাটে শতবর্ষপূর্তি উপলক্ষে একটি স্মারকের উদ্বোধক হিসেবে বুধবার কুমারগ্রামে আসেন অনন্ত মহারাজ। তার আগে মধ্য হলদিবাড়িতে সাংগঠনিক সভা করেন। যা কেএলও প্রধান জীবন সিংহের গড় বলেই পরিচিত। পাশেই উত্তর হলদিবাড়িতে জীবনের বাড়ি। তবে জীবন বা কেএলও প্রসঙ্গে কিছু না বললেও মধ্য হলদিবাড়ির সাংগঠনিক সভার শুরুতে অনন্তকে বলতে শোনা যায়, “বহুদিন ধরেই এই এলাকায় আসার আমার ইচ্ছা ছিল।”
এই সাংগঠনিক সভা থেকেই কোচবিহার রাজ্য প্রসঙ্গে সরব হন মহারাজ। অনন্ত বলেন, “আমরা রাজ্যের তালিকায় স্থান পেয়েছিলাম। কোথায় গেল আমাদের রাজ্য? এই প্রশ্ন রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে করেছিলাম। ভারতের সংবিধানে কোচবিহার রাজ্য ছিল। আমাদের ‘গ’ শ্রেণির রাজ্য কোথায় গেল?” এই প্রসঙ্গে ওই সভা থেকে একটা সময় অনন্ত এটাও বলেন, “আমাদের রাজ্যটাই হারিয়ে গেল!” তবে অনন্ত এদিন বলেন, “কেন্দ্র ও রাজ্য উভয় সরকারই ভাল।” রাজ্য পুলিশে নারায়ণী ব্যাটেলিয়ন প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশংসাও শোনা যায় তাঁর মুখে। সেই সঙ্গে তিনি দাবি করেন,“শিলিগুড়িতে অমিত শাহের সঙ্গে কথা হয়েছে। উনি দুই মাসের মধ্যে আমাদের ডেকে পাঠিয়েছেন। আমার মনে হচ্ছে, ভাল কিছু একটা হতে চলেছে।”
মধ্য হলদিবাড়িতে সভা শেষ করেই অনন্ত চলে যান কুলকুলিহাটের অনুষ্ঠানে। যদিও সেই সময় সেখানে অনন্তর অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত প্রেমানন্দ দাস ছাড়া বড় মাপের কোনও তৃণমূল নেতাকে দেখা যায়নি। তবে অনন্ত অনুষ্ঠান থেকে বেরিয়ে যাওয়ার কয়েক মিনিট আগে সেখানে পৌঁছান আলিপুরদুয়ার জেলা পরিষদের সভাধিপতি শীলা দাস সরকার। পরে সেখানে যান রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ, তৃণমূলের আলিপুরদুয়ার জেলা সভাপতি প্রকাশ চিক বরাইকরা। রবীন্দ্রনাথ বলেন, “উনি আমার জন্য অপেক্ষা করেছিলেন। কিন্তু কলকাতা থেকে ফিরে অনুষ্ঠানে পৌঁছতে আমার দেরি হয়। তাই অনন্ত মহারাজের সঙ্গে এ দিন দেখা হয়নি।” প্রকাশ বলেন, “গুয়াহাটি থেকে ফিরে অনুষ্ঠানে পৌঁছাতে আমারও একটু দেরি হয়। তবে অনন্ত মহারাজের অনুষ্ঠানের সময় দলের অন্যান্য নেতারা ছিলেন।”
তবেমধ্য হলদিবাড়ির সভা হোক কিংবা কুলকুলিহাটের অনুষ্ঠান- দুটি জায়গাতেই অনন্তকে এ দিন বেশ রাজকীয়ভাবে দেখা গিয়েছে। সর্বক্ষণ তাঁর চারিপাশে ছিলেন নারায়ণী স্বেচ্ছাসেবকরা।