মালদহের হাটে বিকোচ্ছে সরকারি ত্রাণের ত্রিপল। — নিজস্ব চিত্র।
সরকারি ত্রাণের ত্রিপল বিক্রি হচ্ছে খোলাবাজারে। এমনই অভিযোগে উত্তপ্ত হয়ে উঠল মালদহ। অভিযোগ, মালদহের মানিকচক ব্লকের মথুরাপুরের সাপ্তাহিক হাটে দেদারে বিকোচ্ছে ‘বিশ্ব বাংলা’ লোগো লাগানো সরকারি ত্রাণের ত্রিপল। অভিযোগ পেয়ে অভিযান চালিয়ে বেশ কয়েকটি ত্রিপল বাজেয়াপ্ত করেছে প্রশাসন। এই ঘটনায় যথারীতি শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতর।
মানিকচক ব্লকের মথুরাপুরে প্রতি শনিবার হাট বসে। আর সেই হাটেই রমরমিয়ে বিক্রি হচ্ছে সরকারি ত্রাণের ত্রিপল। বাজার করতে এসে কয়েক জন ক্রেতা তা দেখতে পান। তাঁদের দাবি, এক-একটি সরকারি ত্রিপল ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এ কথা চাউর হতেই গোলমাল শুরু হয় হাটে। কী করে সরকারি সিল মারা ত্রিপল খোলাবাজারে বিক্রি হচ্ছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন হাটে আসা মানুষজন। বিক্ষোভ চলাকালীন হাটে দাঁড়িয়ে থাকা একটি গাড়ি তড়িঘড়ি পালিয়ে যায়। স্থানীয়দের অভিযোগ, ওই গাড়িতে ভরা ছিল ত্রিপল। বিক্ষোভ শুরু হতে ভয়ে পালিয়ে গিয়েছে। এই ঘটনায় লেগেছে রাজনীতির রং।
বিজেপির দক্ষিণ মালদহ সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক গৌরচন্দ্র মণ্ডল বলেন, ‘‘তোলামূলের রাজত্বে আর কী হবে? পিসি-ভাইপোর দলের নেতারা গরিব মানুষদের ত্রিপলও হাটে বিক্রি করে দিচ্ছেন। প্রশাসনের উচিত অভিযুক্তদের খুঁজে গ্রেফতারির ব্যবস্থা করা।’’
স্থানীয় সিপিএম নেতা দেবজ্যোতি সিন্হা বলেন, ‘‘সিপিএমের যুব সংগঠন ডিওয়াইএফআইয়ের দুই সদস্য বিষয়টি দেখতে পেয়ে প্রতিবাদ করেন। এর পর ব্লক প্রশাসনের কাছে খবর যায় এবং ত্রিপলগুলি বাজেয়াপ্ত করা হয়।’’ তাঁর অভিযোগ, মানিকচক ব্লকের বেশির ভাগ পঞ্চায়েত তৃণমূলের দখলে। সেই সূত্রেই বাম নেতার দাবি, তৃণমূলের নেতাদের মদতেই সরকারি ত্রাণের ত্রিপল যোগ্যদের বঞ্চিত করে খোলাবাজারে বিক্রি করে দেওয়া হচ্ছে। কাটমানি ঢুকছে নেতাদের পকেটে। তৃণমূল অবশ্য বিরোধীদের তোলা সমস্ত অভিযোগই উড়িয়ে দিয়েছে। মালদহে তৃণমূলের জেলা সভাপতি আব্দুল রহিম বক্সী বলেন, ‘‘এটা ষড়যন্ত্র হতে পারে। পুলিশ-প্রশাসন তদন্ত করে দেখুক। যে দোষী তাঁকে শাস্তি পেতে হবে। এই সব তৃণমূল সমর্থন করে না। আমার মনে হয়, সরকারকে বদনাম করার জন্য এই সব করানো হচ্ছে।’’
মানিকচক ব্লকের বিডিও অনুপ চক্রবর্তী জানান, অভিযোগ পাওয়ার পর অভিযান চালিয়ে ৩৯টি সরকারি ত্রিপল উদ্ধার হয়েছে। এই ঘটনায় এক জনকে আটক করা হয়েছে। তাঁর বাড়ি কালিয়াচক থানা এলাকায়। কী করে সরকারি ত্রাণের ত্রিপল খোলাবাজারে বিক্রি হচ্ছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন বিডিও।