—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
দিন তিনেক আগে, দু’জন কৃষক ধান নিয়ে এসেছিলেন, তার পরে আর কেউ আসেননি। সরকারি ধান ক্রয় কেন্দ্রের আধিকারিকেরা বহু আবেদন করে আর এক জন কৃষককে রাজি করিয়েছেন। আজ, বৃহস্পতিবার ধান নিয়ে সরকারি কেন্দ্রে যাওয়ার কথা সেই কৃষকের।
গ্রামের ধান কাটা প্রায় সারা। কিন্তু সরকারি কেন্দ্রে এক জনও কৃষক আসেননি এখনও। আধিকারিকেরা প্রতিদিন সকালে কেন্দ্রটি খোলেন এবং বিকেলে বন্ধ করেন। চালকলের প্রতিনিধিরাও অপেক্ষা করে ফিরে যান। জনাকয়েক কৃষক গিয়েছিলেন সরকারি ধান ক্রয় কেন্দ্রে। ধান কেনার তারিখও ঠিক হয়েছিল। কিন্তু ওজনে পাঁচ কেজি করে ধান বাদ দেওয়া হতে পারে শুনে ধান নিয়ে আর আসেননি কোনও চাষি।
জলপাইগুড়ির সরকারি ধান ক্রয় কেন্দ্রগুলির অবস্থা এমনই। জেলার বেশিরভাগ মাঠেরই ধান কাটা হয়ে গিয়েছে। হাটে হাটে খোলাবাজারে ধান বিক্রি হচ্ছে। কিন্তু সরকারি কেন্দ্রে ধান বিক্রি করতে কৃষকদের দেখা নেই। বেলাকোবা হাটে ধান বিক্রি করা শিবেন রায়ের অভিজ্ঞতায়, “সরকারি কেন্দ্রে অনেকটা ধান ‘ধলতায়’ কেটে নেয়। গত বার অনেক ধান ওজনে কেটেছে। এ বারও শুনছি, পাঁচ কেজি করে ধান কাটছে।” সরকারি ধানের দাম এবং খোলাবাজারের দাম এখন প্রায় সমান সমান। খোলা বাজারে বিক্রিতে কোনও ‘ধলতা’ কাটা হয় না। সে কারণে কৃষকদের অনেকেই সরকারি কেন্দ্রে যেতে চান না।
জলপাইগুড়ি জেলায় এ বার দু’লক্ষ কুইন্টাল ধান কেনার কথা। যার পাঁচ শতাংশও এখনও কিনতে পারেনি প্রশাসন। খাদ্য দফতরের দাবি, ধান কেনার গতি বাড়বে পরে। জেলার খাদ্য নিয়ামক দাওয়া ওয়াঙ্গেল লামা বলেন, “এত দিন নানা পুজো উৎসব চলেছে। পুজো শেষ হয়েছে। এখন ধান নিয়ে আসার পরিমাণ বাড়বে। ধান কাটাও হয়নি। ধান কাটার পরে ঝাড়াই, মাড়াই করতে হয়। সে সবও চলছে। সে কারণে এখন ধান বিক্রি করতে কমই আসছেন। তবে, কৃষকেরা সব কেন্দ্রেই যাচ্ছেন।”
খাদ্য দফতর যা-ই দাবি করুক না কেন, জেলার ২২টি সরকারি কেন্দ্রের কোথাও ভিড় নেই। জেলার এক কেন্দ্রের ক্রয় আধিকারিক বললেন, “আমাদের প্রতিদিন রিপোর্ট পাঠাতে হয়। কিন্তু কৃষকেরা না এলে, কি আমরা টেনে আনব? তবু অনুরোধ করে দু’এক জন কৃষককে রাজি করিয়েছি।” জলপাইগুড়ি সব কেন্দ্রে পাঁচ কেজি করে ধান ধলতায় বাদ দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। যদিও খাদ্য দফতরের দাবি, সরকারি নিয়ম মেনেই ধান কেনা চলছে।