গৌতম দেব। —ফাইল চিত্র।
শিলিগুড়ি নিয়ন্ত্রিত বাজার পরিদর্শনের সময় নানা অবৈধ নির্মাণ, অনিয়ম দেখে বুধবার অসন্তোষ প্রকাশ করলেন রাজ্যের কৃষি বিপণন মন্ত্রী বেচারাম মান্না ও শিলিগুড়ি মেয়র গৌতম দেব। নিয়ন্ত্রিত বাজারের মধ্যেই হাই টেনশন লাইনের নীচে দোতলা নির্মাণ কী করে হচ্ছে, তা দেখে দৃশ্যত অবাক হন তাঁরা। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে নির্দেশ দেন মন্ত্রী। নিয়ন্ত্রিত বাজারের সচিব তমাল দাস ‘অনুমতি নিয়ে করা হচ্ছে’ বলে বোঝাতে গেলে, তাঁকে ধমকও খেতে হয়। মন্ত্রী বিষয়টি নিয়ে নোট নিতে বলেন। নির্মাণ বন্ধ তো করতেই হবে, ভাঙতেও হবে বলে জানান তিনি। বাজার চত্বরে অবৈধ নির্মাণ, নানা অনিয়ম নিয়ে ব্যবসায়ীদের একাংশ আগেও অভিযোগ তুলেছেন। সপ্তাহ দুয়েক আগে, কৃষি বিপণন মন্ত্রী শিলিগুড়ি পুরসভায় গিয়ে তা নিয়ে প্রাথমিক আলোচনাও করে এসেছিলেন মেয়রের সঙ্গে। এ দিন জেলাশাসক, পুলিশ এবং কৃষি বিপণন দফতরের সচিবদের উপস্থিতিতে শিলিগুড়ি স্টেট গেস্ট হাউসে সমস্যা নিয়ে বৈঠক হয় মন্ত্রী এবং মেয়রের।
বৈঠকের পরে মন্ত্রী বলেন, ‘‘বেশ কিছু সমস্যা নিয়ে দীর্ঘদিন অভিযোগ আসছিল। অবৈধ নির্মাণ কোথাও হলে, কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। একে আন্তর্জাতিক মানের বাজার হিসাবে গড়ে তুলতে সমস্ত পদক্ষেপ করা হবে।’’ বাজারের জায়গা লিজে নিয়ে নিয়ে অন্য কাউকে দিলে, কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও মন্ত্রী জানান। বাজারের মধ্যে রাস্তার জায়গায় যাঁরা বসে রয়েছেন, তাঁদের কোনও জায়গা দেখে সরিয়ে রাস্তা চলাচলের মতো করা হবে বলে জানান।
মেয়র বলেন, ‘‘মন্ত্রী ১৫ দিনে দু’বার এলেন। এ দিন বাজারের উন্নতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। উত্তর-পূর্ব ভারতের সব চেয়ে বড় নিয়ন্ত্রিত বাজার এটি। যাতে ভাল চলে, সেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
এ দিন পরিদর্শনের সময় ছিলেন ডেপুটি মেয়র রঞ্জন সরকার-সহ এলাকার পুরপ্রতিনিধি, মেয়র পারিষদদের একাংশ। তাঁরাও পরিস্থিতি দেখে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। এ দিন বৈঠকে কৃষি বিপণন দফতরের প্রধান সচিব ‘ভার্চুয়াল’ ভাবে ছিলেন। উপস্থিত ছিলেন জেলাশাসক প্রীতি গোয়েল, কৃষি বিপণন দফতরের সচিব স্তরের একাধিক আধিকারিক। প্রতিদিন ২০ হাজার মানুষ বাজারে আসেন। সেই মতো বর্ষার নিকাশি ব্যবস্থা, পানীয় জল শৌচাগার অন্যান্য পরিকাঠামো গড়ার কথা জানানো হয়। মন্ত্রী জানিয়ে দেন, এই বাজারে প্রায় ৫০টি সিসি ক্যামেরা বসানো হবে। পুলিশ এবং বাজার কমিটি নজরদারি করবে। বাজারের পিছনের দিকে পুলিশ শিবির করা হবে। বাজার চত্বর আলোকিত করা, পুরনো ভবন নতুন করে তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে। পণ্য নিয়ে আসা ট্রাক তা নামিয়ে নির্দিষ্ট সময় পরে চলে যাবে। মাছ ব্যবসায়ীদের থার্মোকলের (বাক্স) ব্যবহার বন্ধ করতে বলা হয়েছে। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে তা কার্যকর করতে হবে। যে ট্রাক থার্মোকল নিয়ে ঢুকছে, যে ব্যবসায়ীরা নির্দেশ মানবেন না, পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেবে।