গৌতম দেব (বাঁ দিকে) ও রঞ্জন শর্মা। —ফাইল চিত্র
আগামী বছর শিলিগুড়িতে পুরভোটে রাজ্যের পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেবকে সামনে রেখে লড়তে পারে দল, সম্প্রতি এই বার্তাই দিয়েছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। এ দিন দার্জিলিং জেলা (সমতল)-এর সভাপতির দায়িত্ব থেকে তাঁকে অব্যাহতি দিয়ে আনা হল রঞ্জন সরকারকে। তখন সেখানে হাজির রাজ্যের মন্ত্রী তথা দলের দার্জিলিং জেলা পর্যবেক্ষক অরূপ বিশ্বাস বলেন, ‘‘এই রদবদল তৃণমূল নেত্রীর নির্দেশেই করা হয়েছে।’’ একই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘গৌতম দেবকে অনেক দায়িত্ব সামলাতে হয়। রঞ্জন দায়িত্ব পাওয়ায় ওঁর চাপ কমবে।’’
দলীয় সূত্রে খবর, সোমবার কলকাতায় রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর গৌতমের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘণ্টা দুয়েকের বৈঠক হয়েছে। সেখানে গৌতম নিজেই জেলা সভাপতির দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি চাওয়ার প্রসঙ্গ তোলেন। নতুন প্রজন্মের নেতাদের দায়িত্ব দিয়ে জেলার সংগঠনের কাজে লাগানো যায় কি না, তা নেত্রীকে দেখতে অনুরোধ করেন। এর পরে তৃণমূল নেত্রী জানিয়ে দেন, শিলিগুড়ি পুরসভার বিরোধী দলনেতা রঞ্জন সরকারকে আবার নতুন জেলা সভাপতি করা হোক। এর আগে প্রায় ৮ মাস তিনি ওই দায়িত্বে ছিলেন।
দলীয় সূত্রের খবর, নবান্নের ওই বৈঠকে পরে যোগ দেন রাজ্য মন্ত্রিসভার প্রবীণ সদস্য সুব্রত মুখোপাধ্যায় এবং পুরমন্ত্রী ফিরাদ হাকিম। অরূপবাবুর সঙ্গেও কথা বলা হয়। দল সূত্রে দাবি, সেখানেই গৌতম দেবকে পুরভোটের লড়াইয়ের যাবতীয় প্রস্তুতি নিয়ে ময়দানে নামার জন্য তৈরি থাকতে বলা হয়। আরও জানানো হয়, তিনি দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার জেলার কোর কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে সংগঠনের বাড়তি দায়িত্ব পালন করবেন। পড়শি রাজ্য সিকিমে দলের সংগঠন কী ভাবে করা যায়, সে বিষয়ে খোঁজখবরের দায়িত্বও তাঁকে দিয়েছেন মমতা।
দলের অন্য একটি সূত্রে অবশ্য দাবি করা হয়েছে, গৌতম অব্যাহতি চাওয়ার আগেই বিষয়টি নিয়ে কলকাতায় চর্চা চলছিল। তাঁকে সরানো হতে পারে বলে একটি অসমর্থিত সূত্রের খবর রাজ্য রাজধানীর তৃণমূল মহলেও মিলেছিল। যদিও দলের অন্য সূত্রটি এই নিয়ে দ্বিমত।
গৌতম নিজে এ দিন বলেছেন, ‘‘উত্তরবঙ্গ কোর কমিটির দায়িত্বে আছি। সেখানে অনেক কাজ করতে হচ্ছে। নতুনদের সুযোগ দেওয়াও জরুরি। তা ছাড়া দলের দ্বিতীয় পর্যায়ের নেতৃত্বও তৈরি করা প্রয়োজন।’’ রঞ্জন বলেন, ‘‘সাংগঠনিক দুর্বলতার জন্যই শিলিগুড়িতে আমরা হেরেছি।’’
তৃণমূল সূত্রের খবর, লোকসভা ভোটের পরে জুলাইয়ের শেষে কলকাতার একটি বেসরকারি সংস্থাকে দিয়ে শিলিগুড়ির রাজনৈতিক পরিস্থিতির সমীক্ষা করানো হয়। সূত্রের দাবি, গৌতমই সমীক্ষা করিয়েছিলেন। সেই রিপোর্টে শিলিগুড়িতে তৃণমূলের অবস্থায় ভাল নয় বলে জানানো হয়। রাজ্য নেতৃত্বের কাছে রিপোর্টটি রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের প্রসঙ্গে গৌতমবাবু অবশ্য বলেছেন, ‘‘এ সব আমাদের দলের অন্দরের বিষয়। বাইরে কিছু বলব না। নেত্রী আমাকে যে দায়িত্ব দিয়েছেন, সেটাই যথাযথভাবে করাটাই আমার লক্ষ্য।’’