Virat Kohli and Sam Konstas

‘মাঠের লড়াই মাঠেই থাকুক’, প্রিয় কোহলির চোখে চোখ রেখে লড়াই করে বললেন কনস্টাস

তাঁর প্রিয় ক্রিকেটার বিরাট কোহলি। সেই কোহলির সঙ্গে প্রথম সাক্ষাৎ যে এ রকম হবে তা ভাবতে পারেননি স্যাম কনস্টাস। ইচ্ছাকৃত ভাবে ধাক্কা মারার অভিযোগ উঠেছে কোহলির বিরুদ্ধে। তা নিয়ে মুখ খুলে কনস্টাস কী বললেন?

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪ ১১:০৪
Share:

ব্যাগি গ্রিন টুপি পরে স্যাম কনস্টাস। ছবি: সমাজমাধ্যম।

তাঁর প্রিয় ক্রিকেটার বিরাট কোহলি। অতীতে বার বার বলেছেন সে কথা। সেই কোহলির সঙ্গে প্রথম সাক্ষাৎ যে এ রকম হবে তা ভাবতে পারেননি স্যাম কনস্টাস। ১৯ বছরের তরুণ ক্রিকেটারকে ইচ্ছাকৃত ভাবে ধাক্কা মারার অভিযোগ উঠেছে কোহলির বিরুদ্ধে। তবে কনস্টাস তা পাত্তা দিতে চাইলেন না। অভিষেক টেস্টে মাঠে যে রকম পরিণত ইনিংস খেললেন, মাঠের বাইরেও যে তিনি একই রকম পরিণত, সেটাও বুঝিয়ে দিলেন।

Advertisement

প্রথম সেশনে জলপানের বিরতিতে সম্প্রচারকারী চ্যানেলে সাক্ষাৎকার দেন কনস্টাস। তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, “কোহলি আপনার প্রিয় ক্রিকেটার। হঠাৎই মাঠের মাঝে ঝগড়া লাগল। আপনাকে ও ধাক্কা দিল। কী বলেছিল তখন?” কনস্টাস উত্তর দেন, “মনে হয় আমরা দু’জনেই তখন আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছিলাম। আমি ঠিক বুঝতে পারিনি ঘটনাটা। নিজের গ্লাভস ঠিক করছিলাম। তার পরেই কাঁধে ধাক্কা খেলাম। তবে এ রকম হতেই পারে। এটাই ক্রিকেট। মাঠের লড়াই মাঠেই থাকুক।”

ঘটনাটি ঘটেছে ১০ ওভারের পর। মহম্মদ সিরাজ সেই ওভার শেষ করার পর দিক পরিবর্তন করার জন্য হেঁটে আসছিলেন কোহলি। উল্টো দিক থেকে আসছিলেন কনস্টাসও। দু’জনের কাঁধে ধাক্কাধাক্কি হয়। কনস্টাসের বিষয়টি পছন্দ হয়নি। তিনি কোহলিকে কিছু একটা বলেন। পাল্টা কোহলিও রক্তচক্ষু দেখিয়ে কনস্টাসকে উত্তর দেন। বিষয়টি বেশি দূর গড়ায়নি। সতীর্থ ওপেনার উসমান খোয়াজা এসে কনস্টাসকে সরিয়ে নিয়ে যান। পাশাপাশি কোহলিকেও অনুরোধ করেন ঘটনাটি সেখানে শেষ করে দেওয়ার জন্য। ঝামেলা থামাতে এগিয়ে আসেন আম্পায়ারেরাও।

Advertisement

বার বার সেই ঘটনার রিপ্লে দেখাতে থাকে সম্প্রচারকারীরা। সেখানে অবশ্য দেখা গিয়েছে, কনস্টাস মাথা নিচু করে ব্যাট হাতে যাচ্ছিলেন। কোহলিই যাওয়ার পরে দিক পরিবর্তন করে কনস্টাসের কাছে গিয়ে তাঁকে গিয়ে ধাক্কা মারেন। ধারাভাষ্যকার মাইকেল ভন বলছিলেন, কনস্টাসকে উত্তেজিত করার জন্যই এ কাজ করেছেন কোহলি। এই কাজের তীব্র নিন্দা করেন। বলেন, “কোহলির মতো সিনিয়র ক্রিকেটারের এমন কাজ শোভা পায় না।”

খুশি হতে পারেননি সুনীল গাওস্করও। বলেন, “দু’জনকেই শাস্তি দেওয়া উচিত।” রিকি পন্টিং বলেন, “কোহলির হাঁটাটা এক বার খেয়াল করুন। সোজা হাঁটতে হাঁটতে ডান দিকে এসে জোর করে ওকে ধাক্কা মারল।”

অভিষেক টেস্টে নেমেই মন জয় করে নিয়েছেন কনস্টাস। কোন ভাবনা নিয়ে খেলতে নেমেছিলেন? কনস্টাসের উত্তর, “আমার কাছে গোটা ব্যাপারটা এখনও ধোঁয়াশার মতো। তবে স্বপ্ন সত্যি হয়েছে। দেখুন মাঠে কত লোক এসেছে। দলের সবাই আমাকে স্বাগত জানিয়েছে। নিজের ঘরই মনে হচ্ছে।”

অধিনায়ক প্যাট কামিন্সের বিশেষ বার্তার কথাও উল্লেখ করেছেন, “কামিন্স বলেছিল ভয়ডরহীন ক্রিকেট খেলতে। গত কাল আমরা সবাই একসঙ্গে মধ্যাহ্নভোজ করেছি। বাকিদের পরিবারের লোকেরাও ছিল। তাই দলের মধ্যেও একটা পরিবারের মতো ব্যাপার রয়েছে।”

এ দিন বুমরাকে উইকেটের পিছন দিয়ে একাধিক র‌্যাম্প শট মেরেছেন তিনি। তবে আগে থেকে কনস্টাস এমন পরিকল্পনা করে নামেননি বলেই জানালেন। তাঁর কথায়, “গত কালও এমন কিছু মাথায় ছিল না। ভাল ক্রিকেটীয় শট খেলতে চেয়েছিলাম। বুমরা নিঃসন্দেহে বিশ্বমানের বোলার। তবে ওকে চাপে ফেলতে চাওয়াই আমার উদ্দেশ্য ছিল। ওকে কৌশল বদলাতে বাধ্য করেছি।”

প্রথম তিন টেস্টে নেথান ম্যাকসুইনি ব্যর্থ হওয়ায় তাঁকে বাকি সিরিজ়ে বাদ দিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। ভারতের বিরুদ্ধে শেষ দু’টি টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ওপেন করবেন কনস্টাস। ভারতীয় পেসারদের সামলাতে যে তিনি তৈরি, আগেই বুঝিয়ে দিয়েছিলেন। প্রস্তুতি ম্যাচে ভারতের বিরুদ্ধে শতরান করেছিলেন তিনি। দিন-রাতের টেস্টের আগে প্রধানমন্ত্রী একাদশের বিরুদ্ধে একটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলেছিল ভারত। সেখানে অবশ্য যশপ্রীত বুমরা বল করেননি। কিন্তু মহম্মদ সিরাজ, আকাশ দীপরা করেছিলেন। তাঁদের বিরুদ্ধে ওপেন করতে নেমে ৯৭ বলে ১০৭ রান করেছিলেন কনস্টাস। পেসারদের বিরুদ্ধে রিভার্স সুইপও খেলতে দেখা গিয়েছিল তাঁকে। ১৪টি চার ও একটি ছক্কা মেরেছিলেন তিনি। সেই ইনিংসই তাঁকে জায়গা করে দিয়েছে অস্ট্রেলিয়া দলে।

নিউ সাউথ ওয়েলসের ব্যাটার কনস্টাস ১১টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলেছেন। করেছেন ৭১৮ রান। তার মধ্যে তিনটি অর্ধশতরান রয়েছে। শেষ প্রথম শ্রেণির ম্যাচে ৮৮ রান করেছিলেন তিনি। গত মাসে ভারত ‘এ’ দলের বিরুদ্ধে অস্ট্রেলিয়া ‘এ’ দলের হয়ে খেলেছিলেন কনস্টাস। প্রথম ম্যাচে মুকেশ কুমারের বলে শূন্য ও ১৬ রানে আউট হন তিনি। দ্বিতীয় ম্যাচে করেন ১৪ ও ৭৩ রান। দ্বিতীয় ইনিংসে ১২৮ বল খেলে কনস্টাসের ৭৩ রান অস্ট্রেলিয়াকে জিতিয়েছিল। নিউ সাউথ ওয়েলসের হয়ে শেফিল্ড শিল্ডে আটটি ইনিংসে ৪৭১ রান করেছেন কনস্টাস। ৫৮.৮৭ গড়ে রান করেছেন তিনি। মেরেছেন দু’টি শতরান ও একটি অর্ধশতরান। শেফিল্ড শিল্ডে দ্বিতীয় সর্বাধিক রান করেছেন তিনি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement