Madhyamik Examination

দুর্ঘটনায় ভাঙল হাত, পরীক্ষা ছাত্রীর

যন্ত্রণা উপেক্ষা করে নিজে লিখেই পরীক্ষা দেয়। তবে পরীক্ষা শেষ হতেই হলে লুটিয়ে পড়ে ছাত্রীটি। তাকে ভর্তি করা হয় হাসপাতালে।

Advertisement

বাপি মজুমদার

হরিশ্চন্দ্রপুর শেষ আপডেট: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৩:৪৩
Share:

অদম্য: হাসপাতালে মহাবুতুন নেশা। নিজস্ব চিত্র

বাবার সঙ্গে মোটরবাইকে পরীক্ষাকেন্দ্রে যাওয়ার সময় দুর্ঘটনায় ডান হাত ভেঙেছিল ওই ছাত্রীর। মাথা ফেটে যায় বাবার। রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তা থেকে বাবা ও মেয়েকে উদ্ধার করে বাসিন্দারা হাসপাতালে পাঠিয়েছিলেন।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে খবর, মাঝপথে বেঁকে বসে ওই পরীক্ষার্থী। বাবাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও রক্তে ভেজা স্কুলের পোশাক পরেই সে হাজির হয় পরীক্ষাকেন্দ্রে। যন্ত্রণা উপেক্ষা করে নিজে লিখেই পরীক্ষা দেয়। তবে পরীক্ষা শেষ হতেই হলে লুটিয়ে পড়ে ছাত্রীটি। তাকে ভর্তি করা হয় হাসপাতালে।

মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরের পিপলা হাইস্কুল পরীক্ষাকেন্দ্রে সোমবারের ঘটনা। দুর্ঘটনায় শরীরে একাধিক জায়গায় আঘাত নিয়েও যে ভাবে ওই ছাত্রী পরীক্ষা দিয়েছে তা নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে হরিশ্চন্দ্রপুর জুড়ে।

Advertisement

প্রশাসনিক ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মহাবুতুন নেশা নামে ওই ছাত্রী সাদলিচক হাইস্কুল থেকে এবার পরীক্ষা দিচ্ছে। তার ‘সিট’ পড়েছে পিপলা হাইস্কুলে। এ দিন বাবা নওশাদ আলির সঙ্গে মোটরবাইকে পিপলায় যাওয়ার সময় দুর্ঘটনাটি ঘটে। পুলিশ জানিয়েছে, রাতে বৃষ্টি হওয়ায় রাস্তা ভিজে ছিল। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি ভুটভুটির সঙ্গে মুখোমুখি ধাক্কায় বাবা ও মেয়ে রাস্তায় ছিটকে পড়ে। নওশাদের মাথা ফেটে যায়। মহাবুতুনেরও ডান হাতের কনুইয়ে গুরুতর আঘাত লাগে। আঘাত লাগে পায়েও। কিন্তু ওই অবস্থাতেও মহাবুতুন হাসপাতালে যেতে চায়নি।

পিপলা হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক তথা ওই কেন্দ্রের ভেনু ইন-চার্জ জয়দেব পাণ্ডে বলেন, ‘‘ছাত্রীটির মনের জোর দেখে অবাক হয়ে যাই। ওর সিট পড়েছিল দোতালায়। তবে হাঁটার ক্ষমতা ছিল না। তাই নীচেই পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়। রাইটার দিতে চাইলেও সে নিয়ে চায়নি।’’ ওই স্কুলের শিক্ষক জাহাঙ্গির আলমও বলেন, ‘‘তিন ঘণ্টা ধরে পরীক্ষা দিলেও শেষ হওয়ার পরে যন্ত্রণায় কান্নায় ভেঙে পড়ে। তড়িঘড়ি ওকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। চাইলে বাকি দুটি পরীক্ষা ও সেখান থেকেই দিতে পারবে।’’

মহাবুতুন বলে, ‘‘পরীক্ষা না দিলে একটা বছর নষ্ট হয়ে যাবে ভেবে কষ্ট হলেও পরীক্ষাকেন্দ্রে যাই।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement