প্রতীকী ছবি
‘শ্রীধর’ প্রেমের স্বীকৃতি পেলেন কোচবিহারের বাসিন্দা এক তরুণী তমালিকা ভৌমিক। সোমবার, কোচবিহার পঞ্চানন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের উদ্যোগে তমালিকার হাতে শংসাপত্র তুলে দেন উপাচার্য দেবকুমার মুখোপাধ্যায়। শংসাপত্র তুলে দেবার সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার আব্দুল কাদেরও উপস্থিত ছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ‘শ্রীধর’ আসলে সঙ্কটাপন্ন প্রজাতির একটি কাছিম শাবক। কুড়িয়ে পাওয়া ওই কাছিম শাবকটিকে বাড়িতে এনে আগলে রাখা থেকে সেটিকে প্রাকৃতিক ডেরায় ফেরাতে উদ্যোগ নেন ওই তরুণী। তমালিকার এমন কাজ উদাহরণস্বরূপ। তাই জীববৈচিত্র্য রক্ষায় তাঁকে উৎসাহিত করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের তরফে এই স্বীকৃতি দেওয়া হয়।
উপাচার্য দেবকুমার মুখোপাধ্যায় বলেন, “কাছিম শাবকটিকে রক্ষা করতে যেভাবে কাজ করেছেন তমালিকা তা প্রশংসনীয়। জীববৈচিত্র্য রক্ষায় এমনটাই দরকার। কোচবিহারের নানা এলাকার জলায় ওই প্রাণীরা রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের তরফে কাছিম সংরক্ষণে একটি প্রকল্পের কাজও চলছে। কাছিমের অকাল মৃত্যু রুখতে অন্যরাও যাতে উৎসাহিত হন সেজন্য ওই উদ্যোগ।” প্রাণীবিদ্যা বিভাগের প্রধান হাদিদা ইয়াসমিন বলেন, “কাছিম সংরক্ষণে এমন ভাবনাই কাম্য। বন দফতরের সঙ্গে কথা বলে সমীক্ষা রিপোর্ট দেখে একই প্রজাতির কাছিমদের বসবাস রয়েছে এমন জলায়, শ্রীধরকে ছাড়া হয়েছে।” বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বীকৃতিতে খুশি শহরের পাঁচতালতলা এলাকার বাসিন্দা তমালিকা বলেন, “প্রাকৃতিক ডেরায় শ্রীধরকে ফেরাতে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলাম। বেশ কিছুদিন অপেক্ষার পর এক বন্ধুর মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করি। তবে বিদায়বেলায় খুব কষ্ট হয়েছে। শেষপর্যন্ত প্রাণীটি প্রাকৃতিক পরিবেশে ফেরায় আনন্দ হচ্ছে।”বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সপ্তাহ তিনেক আগে বৃষ্টির একদিনে বাড়ির সামনে ওই কাছিম শাবকটি দেখেন তমালিকার এক পরিচিত। বিপদ এড়াতে তমালিকা খবর পেয়ে ছুটে যান। অতিথিকে নিয়ে আসেন বাড়িতে। সেটির পরিচর্যা করেন তিনি। দিন কয়েক আগে বাড়ি থেকে ছোট্ট অতিথির বিদায় বেলায় কান্নায় ভেঙে পড়েন কলকাতার একটি কলেজের ফ্যাশন টেকনলজির ছাত্রী তমালিকা। তাঁর কথায়, “এ বার নিশ্চিন্তে আবার কলকাতায় ফিরতে পারব।” বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে গিয়েছে, কাছিমটি ‘ইন্ডিয়ান পিকক সফটশেল’ প্রজাতির। এই ধরনের কাছিম বর্তমানে সঙ্কটাপন্ন প্রজাতির একটি। তমালিকা জানান, কাছিমটিকে ডেরায় ফেরাতে সাহায্য করেন প্রাণীবিদ্যা বিভাগের পড়ুয়া করবী প্রামাণিক, রিপন দাস ও সৌরভ শাহরা।