জি২০: গাইডদের বিশেষ কর্মশালা। নিজস্ব চিত্র
আগামী শনিবার, ১ এপ্রিল থেকে দার্জিলিং জেলায় বসতে চলছে জি২০ পর্যটন বিষয়ক শীর্ষ সম্মেলন। তাতে যোগ দিতে আসছেন জি২০-ভুক্ত সদস্য দেশের শতাধিক বিদেশি অতিথি। তাঁদের সঙ্গে থাকা, তাঁদের দেখভাল করা, এলাকা সম্পর্কে জানানোর জন্য বাছাই করা হল ৩৫ জন বিশেষ ‘গাইড’। এঁরা সকলেই দার্জিলিং জেলার পাহাড়ি এলাকার বাসিন্দা। প্রত্যেকেই পর্যটন, ইকো টুরিজ়ম-সহ নানা কাজের সঙ্গে যুক্ত। সম্মেলন চলাকালীন তাঁদের অতিথিদের সঙ্গে থাকতে হবে। ইংরেজি কথোপকথনে সাবলীল এবং এলাকা সম্পর্কে সম্যক ধারণা রয়েছে, এমন নারী-পুরুষকেই বাছা হয়েছে।
কেন্দ্রীয় পর্যটন মন্ত্রকের তরফে ওই গাইডদের নিয়ে গত মঙ্গলবার নিউ চামটার চা পর্যটন কেন্দ্রে একটি কর্মশালা হয়েছে। সেখানে মন্ত্রকের পূর্বাঞ্চলীয় অধিকর্তা সাগ্নিক চৌধুরী, সহ-অধিকর্তা সায়ক নন্দী এবং জিটিএ-র পর্যটনের এগজ়িকিউটিভ ডিরেক্টর সোনম ভুটিয়া উপস্থিত ছিলেন। মন্ত্রকের এক যুগ্ম সচিবের কথায়, ‘‘দু’শোর কাছাকাছি বিদেশি অতিথি আসছেন। তাঁদের দেখভাল, তথ্য আদান-প্রদানের জন্য গাইড রাখা হয়েছে। প্রশিক্ষণও দেওয়া হচ্ছে।’’
সরকারি সূত্রের খবর, অন্তত ২০টি দেশের প্রতিনিধিরা শনিবার সকালে শিলিগুড়িতে পৌঁছবেন বিমানে। সেখান থেকে তাঁরা নিউ চামটা চা বাগানের রিসর্টে যাবেন। পরে, কার্শিয়াংয়ে মকাইবাড়িতে যাবেন। সন্ধ্যায় চা পাতা তোলা দেখানো, চা কারখানা দেখানো ছাড়াও ‘অ্যাডভেঞ্চার টুরিজ়ম’ নিয়ে আলোচনা হবে। একে সম্মেলনের আনুষঙ্গিক অনুষ্ঠান (সাইড ইভেন্ট) হিসাবে রাখা হয়েছে। পরদিন নিউ চামটায় যোগ-পর্বের পরে, মূল সম্মেলন। তার পরের দিন ঘুম, বাতালিয়া লুপ, দার্জিলিং স্টেশন ঘুরে প্রতিনিধিরা রাজভবনে যাবেন। রাজভবন ঘুরে দেখার পরে, বিকেলে ম্যাল চৌরাস্তায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান যোগ দেবেন। ৪ এপ্রিল অতিথি, প্রতিনিধিরা দিল্লি ফিরবেন। এই গোটা সফরসূচিতে ৩৫ জন গাইড প্রতিনিধিদের সঙ্গে থাকবেন।
গাইডদের দলটিতে আছেন কার্শিয়াঙের বাসিন্দা প্রেক্ষা শর্মা ছেত্রী। তিনি পরিবেশবান্ধব হোম-স্টেও তৈরি করেছেন। তাঁর স্বামী দিবস্কর ছেত্রীও দলে আছেন। প্রেক্ষা বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় পর্যটন মন্ত্রকের তরফে আমাদের সম্মেলনের খুঁটিনাটি বোঝানো হয়েছে। বিদেশিদের কোনও সমস্যা হলে দেখা, বিভিন্ন তথ্য বা নথিপত্র সরবরাহ করা, স্থানীয় সংস্কৃতি, পর্যটন, রাজভবন, টয় ট্রেন বা চা বাগানের মতো বিষয় নিয়ে বোঝানোর কাজও করতে হবে।’’ তাঁদের সুসজ্জিত, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন পোশাকে সম্মেলনের প্রথম থেকে শেষ দিন অবধি কাজ করার জন্য নিয়োগ করা হয়েছে।
যদিও বাছাই করা গাইডদের সকলেই প্রশিক্ষিত নন। মন্ত্রক, জিটিএ-র মাধ্যমে তাঁদের বাছাই করা হয়েছে। মন্ত্রকের কিছু অফিসার মনে করছেন, এই অঞ্চলের প্রশিক্ষিত গাইডদেরও নেওয়া যেতে পারত। তাঁদের মধ্যে ইংরেজিতে সাবলীল, তথ্য জানা লোকও আছেন। গত বছর দার্জিলিং, কালিম্পং এবং জলপাইগুড়িতে তাঁদের নতুন করে প্রশিক্ষণও হয়েছে।