—নিজস্ব চিত্র।
জ্বর ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে শিশুদের সংখ্যা প্রতি দিনই বাড়ছে জলপাইগুড়ির হাসপাতালে। পরিজনের অভিযোগ, রোগীর তুলনায় হাসপাতালে শয্যা অপ্রতুল। এক-একটি শয্যায় চার জন করে শিশুকে রাখতে বাধ্য হচ্ছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এমনকি, ওই শয্যাতেই রোগীর মায়েরাও থাকছেন। ফলে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন তাঁরাও। আত্মীদের অভিযোগ, জলপাইগুড়ি হাসপাতালের চিকিৎসা পরিষেবা প্রহসনে পরিণত হয়েছে। যদিও এই অভিযোগ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে রাজি নন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, সেপ্টেম্বর থেকে এখনও পর্যন্ত জলপাইগু়ড়িতে জ্বর ও শ্বাসকষ্টে মারা গিয়েছে চারটি শিশু। যদিও বেসরকারি মতে, ওই সংখ্যাটি কমপক্ষে নয় জন। সোমবারও জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালের বহির্বিভাগে শিশুদের ভিড় উপচে পড়েছে। হাসপাতাল সূত্রে খবর, রবিবার রাত পর্যন্ত শিশু বিভাগে ১২১ জনের চিকিৎসা চলছিল। সোমবার জ্বর ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে আরও ২৪টি শিশুকে ভর্তি করানো হয়েছে। তিন জন শিশুর শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাদের স্থানান্তরিত করা হয়েছে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। তবে ২৭ জন শিশু সুস্থ হয়ে ওঠায় তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। যে গতিতে অসুস্থ শিশুর সংখ্যা বাড়ছে, তা নিয়ে উদ্বিগ্ন জেলা স্বাস্থ্য দফতর। এরই মধ্যে এক শয্যায় চার জন শিশুকে রাখা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন রোগীর আত্মীয়েরা।
রোগীর এক আত্মীয় মোস্তাফা হোসেনের দাবি, ‘‘হাসপাতালে পরিষেবার নামে প্রহসন হচ্ছে। রোগীর তুলনায় বেড কম। এক-একটা বেডে চার জন করে শিশু। রোগীদের সঙ্গে তাদের মায়েরাও রয়েছেন। ফলে একটা বেডে চার জন শিশু ও অভিভাবক মিলিয়ে আট জন করে থাকছেন। অক্সিজেন নেওয়ার জন্য দু’টি মাত্র মেশিন। সে জন্য লাইনে দাঁড়াতে হচ্ছে। চিকিৎসকও কম। আমাদের হয়রানির মুখে পড়তে হচ্ছে।’’
যদিও এই অভিযোগ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে নারাজ জলপাইগুড়ি জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক রমেন্দ্রনাথ প্রামাণিক। আনন্দবাজার অনলাইনের তরফে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘‘এ বিষয়ে ফোনে কিছু জানাব না।’’ যদিও শিশুদের শারীরিক অবস্থা খতিয়ে দেখতে সোমবার হাসপাতাল পরিদর্শনে আসেন রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান বিজয়চন্দ্র বর্মণ। শিশু বিভাগ পরিদর্শনের পাশাপাশি রোগীর পরিজনদের সঙ্গে কথাও বলেন তিনি।