Crime

Arrest: বিপুল টাকার আর্থিক দুর্নীতি, জালে সিপিএম থেকে তৃণমূলে যাওয়া প্রাক্তন পঞ্চায়েত প্রধান

ওই পঞ্চায়েতের নির্মাণ সহায়ক মিলন ঘোষের বিরুদ্ধেও জারি হয়েছে গ্রেফতারি পরোয়ানা। পুলিশ খোঁজ চালাচ্ছে মিলনের।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মালদহ শেষ আপডেট: ০৫ ডিসেম্বর ২০২১ ২০:০৪
Share:

আদালতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ধৃত আরতি সরকারকে। —নিজস্ব চিত্র।

দলীয় সদস্যদেরই তোলা অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেফতার করা হল তৃণমূলের এক প্রাক্তন মহিলা পঞ্চায়েত প্রধানকে। মালদহের মানিকচক থানার নুরপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান আরতি সরকারকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পাশাপাশি ওই পঞ্চায়েতের নির্মাণ সহায়ক মিলন ঘোষের বিরুদ্ধেও জারি হয়েছে গ্রেফতারি পরোয়ানা।
ঘটনার সূত্রপাত ২০১৮ সালে। সেই সময় নুরপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান ছিলেন আরতি। তিনি জিতেছিলেন সিপিএম থেকে। পরে দলবদল করে তৃণমূলে যোগ দেন। আরতির বিরুদ্ধে ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূলের নয় সদস্য আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ তোলেন। তাঁদের অভিযোগ, কাজ না করে বিপুল অঙ্কের টাকা আত্মসাৎ করেছেন আরতি। ১০০ দিনের কাজ, আবর্জনা আধার নির্মাণ, বৃক্ষরোপণ-সহ নানা প্রকল্পে দুর্নীতি হয়েছে বলে তাঁদের অভিযোগ। এ নিয়ে তাঁরা মানিকচকের বিডিও-র দ্বারস্থ হন। পরে তাঁরা তথ্য জানার অধিকার আইনে অভিযোগ দায়ের করেন। শেষ পর্যন্ত কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন ওই নয় তৃণমূল সদস্য। উচ্চ আদালত মালদা জেলার তৎকালীন জেলাশাসক কৌশিক মুখোপাধ্যায়কে তদন্তের নির্দেশ দেন।

Advertisement

সেই তদন্তের ভিত্তিতে আর্থিক দুর্নীতির তথ্য সামনে আসে। জানা যায়, ২৬ লক্ষ ৬৮ হাজার ২২৫ টাকা আত্মসাৎ করেছেন আরতি। এই খরচের প্রয়োজনীয় নথিও আরতি এবং মিলন দেখাতে পারেননি বলে দাবি অভিযোগকারীদের। এর পর আরতি এবং মিলনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন মানিকচকের তৎকালীন বিডিও সুরজিৎ পণ্ডিত। ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তাঁদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানাও জারি হয়। এর পর গা ঢাকা দেন আরতি। এর পর আদালতের কাছে নতুন করে আবেদন করেন আরতি। সেই সময় স্থির হয়, তছরুপের টাকা ফেরত দেবেন আরতি। তাতে রাজি হন প্রাক্তন পঞ্চায়েত প্রধান। কিন্তু অনেকটা সময় পেরিয়ে গেলেও সেই টাকা সরকারি তহবিলে জমা পড়েনি। শেষমেশ আদালতের নির্দেশে ফের আরতি এবং মিলনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়। শনিবার রাতে আরতিকে গ্রেফতার করে মানিকচক থানার পুলিশ। রবিবার মালদা জেলা আদালতে পেশ করা হয় তাঁকে। আরতিকে আপাতত জেল হেফাজতে রাখা হবে।

Advertisement

আরতির গ্রেফতারে অবশ্য খুশি নন অভিযোগকারীরা। অভিযোগকারীদের অন্যতম পঞ্চায়েত প্রাক্তন সদস্য লিয়াকত খান বলেন, ‘‘শুধুমাত্র ২৬ লক্ষ টাকা নয়, এক কোটিরও বেশি টাকা নয়ছয় করেছেন প্রধান।’’ এ নিয়ে কটাক্ষ করেছে বাম এবং বিজেপি শিবির। আরতি জিতেছিলেন সিপিএমের টিকিটে। মালদহের সিপিএম নেতা দেবজ্যোতি সিংহের কটাক্ষ, ‘‘সিপিএমে থেকে উনি চুরি করতে পারছিলেন না। শুধুমাত্র চুরি করতে তৃণমূলে গিয়েছিলেন। আর চুরি করে ধরা পড়ে জেলে গিয়েছেন। এই ঘটনায় আমি অবাক হচ্ছি না। কারণ তৃণমূল দলটা চুরি-ডাকাতি করার লাইসেন্স দেয়।’’ বিজেপি নেতা গৌড়চন্দ্র মণ্ডল বলেন, ‘‘এটা তো একটা মাত্র পঞ্চায়েতের ঘটনা। আদালতের নির্দেশে যদি সঠিক তদন্ত হয় তবে সব তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধানের ঠাঁই হবে হাজতে।’’

এ নিয়ে মানিকচকের তৃণমূল নেতা বিশ্বজিৎ মণ্ডলের বক্তব্য, ‘‘আইন আইনের পথে চলবে। তৃণমূলের প্রধান বা নেতা যিনিই হোন না কেন দুর্নীতি প্রমাণিত হলে তাঁর পাশে দাঁড়াবে না দল।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement