কংগ্রেসে যোগ। নিজস্ব চিত্র।
জল্পনার শেষ। প্রিয়র গড়ের লড়াকু বাম নেতা বলে পরিচিত ভিক্টর অবশেষে যোগ দিলেন কংগ্রেসেই।
সোমবার কলকাতায় বিধান ভবনে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর হাত ধরে দলে যোগ দেন চাকুলিয়ার প্রাক্তন বিধায়ক আলি ইমরান রমজ (ভিক্টর)। দল পরিচালনা নিয়ে প্রশ্ন তুলে আজাদ হিন্দ মঞ্চ গড়ার পরে, ফরওয়ার্ড ব্লক থেকে তাঁকে বহিষ্কার করা হয়। এর পর থেকেই ভিক্টরকে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃত্ব নিজেদের দলে টানার জন্য যোগাযোগ করেছিল বলে সূত্রের খবর।
ভিক্টরের মতো জনপ্রিয় নবীন মুখ কংগ্রেসে যোগ দেওয়ায় জেলার কংগ্রেস শিবির উচ্ছ্বসিত। এ দিনের সভায় ভিক্টরের কাকা প্রাক্তন মন্ত্রী হাফিজ আলম সৈরানি উপস্থিত হলেও তিনি কংগ্রেসে যোগ দেননি। কংগ্রেসের জেলা সভাপতি মোহিত সেনগুপ্তের দাবি, ‘‘ভিক্টর যুবদের আইকন। ভিক্টর দলে যোগ দেওয়ায় কংগ্রেস লাভবান হবে। সংগঠন মজবুত হবে।’’ ভিক্টর যে লড়াকু নেতা, তা মানছেন ফরওয়ার্ড ব্লকের জেলা সম্পাদক গোকুল রায়ও।
এক সময়ে প্রয়াত কংগ্রেস নেতা প্রিয়রঞ্জন দাসমুন্সির জেলা উত্তর দিনাজপুর কংগ্রেসের গড় ছিল। বর্তমানে এখানে সে দল ক্ষয়িষ্ণু। ভিক্টর নিজে বাম ঘরনার। বাবা প্রয়াত রমজান আলি ছিলেন ফরওয়ার্ড ব্লক বিধায়ক। কাকা হাফিজও বাম আমলে ছিলেন বিধায়ক ও মন্ত্রী। ফলে, কংগ্রেস শিবিরে এসে ভিক্টরের রাজনৈতিক কেরিয়ার এ বার কতটা বিকশিত হবে তা নিয়ে প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে। যদিও ভিক্টরের দাবি, ‘‘দেশে সংবিধান এবং সম্প্রীতি রক্ষা করা ও রাজ্যে লাগামহীন দুর্নীতি প্রতিরোধ করতেই কংগ্রেসে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত।’’
জেলা কংগ্রেসের সম্পাদক মহম্মদ নাসিম আহসানের দাবি, ‘‘পঞ্চায়েত নির্বাচনের মুখে ভিক্টর কংগ্রেসে যোগ দেওয়া বাড়তি লাভ হল।’’
তবে জেলার ফব শিবিরে অনেকেই এখনও সংশয়ে। শনিবার চাকুলিয়ার প্রায় একশো ফব কর্মী ও সমর্থক সিপিএমে যোগ দেন। কিন্তু ভিক্টরের সঙ্গে অনেকেই রয়েছেন বলে দাবি ভিক্টর-ঘনিষ্ঠদের।
ভিক্টর অনুগামী যুব নেতা আবসার আহমদের দাবি, ‘‘আমরা ভিক্টরের সঙ্গে ছিলাম। ভিক্টরের সঙ্গে থাকব। ভিক্টর এই সময়ে দাঁড়িয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।’’
ভিক্টরের সিদ্ধান্তে জেলায় শাসক শিবিরে কিছুটা হলেও চাপ বাড়বে বলে অভিমত রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের। যদিও ভিক্টরকে নিয়ে শাসক দল ভাবিত নয়। তৃণমূল জেলা সভাপতি কানাইয়ালাল আগরওয়ালের দাবি, ‘‘জেলায় কংগ্রেস শূন্য। ভিক্টরেরও কোনও অস্তিত্ব নেই। ভিক্টর নো ফ্যাক্টর।’’