বক্সার ব্যাঘ্র প্রকল্পের জঙ্গলে হাতির পাল। ছবি: নারায়ণ দে
উত্তরবঙ্গে হাতির সংখ্যা সাতশোর আশপাশে, ইঙ্গিত দিচ্ছে বন দফতরের নিজস্ব সমীক্ষা। গত সাত বছরে হাতিসুমারি হয়নি সারা দেশেই। যদিও এই ক'বছরে উত্তরবঙ্গে হাতির সংখ্যা খুব একটা বাড়েনি। শেষ সরকারি সুমারিতে উত্তরবঙ্গে হাতির সংখ্যা ছিল সাড়ে ছ’শো। দক্ষিণবঙ্গে হাতির সংখ্যা ছিল কমবেশি দেড়শো। বন দফতরের ইঙ্গিত, উত্তরবঙ্গে হাতির সংখ্যা এই মুহূর্তে সাতশোর কাছাকাছি হতে পারে। বন দফতরের প্রাথমিক সমীক্ষায় উঠে এসেছে, হাতির সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে পারে ২৫ থেকে ৩০টি। এই সমীক্ষা রিপোর্টে স্বস্তিতে বনকর্তারা। হাতির সংখ্যা বেড়ে গেলে লোকালয়ে চলে আসার প্রবণতাও বাড়বে। এমনিতেই সারা বছরই উত্তরের জঙ্গল লাগোয়া গ্রামে হাতি ঢুকে পড়ছে। তা থেকেই বনকর্তাদের ধারণা হয়েছিল, হাতির সংখ্যা অনেকটাই বেড়ে যেতে পারে।
উত্তরবঙ্গের মুখ্য বনপাল (বন্যপ্রাণী) জেভি ভাস্কর বলেন, “হাতির সংখ্যা কমবেশি গতবারের থেকে ২৫ থেকে ৩০ পর্যন্ত বাড়তে পারে। তেমনিটাই আমাদের প্রাথমিক অনুসন্ধানে দেখা যাচ্ছে। সারা দেশে এক সঙ্গে ফের হাতিসুমারি হবে। দ্রুত সুমারি হলে ভাল।” বন দফতরের দাবি, গত কয়েক বছরে জঙ্গলের ঘনত্ব বাড়েনি, আয়তনও বাড়েনি। ফলে হাতির সংখ্যা গত কয়েকবছর ধরে একই রকম রয়েছে উত্তরের জঙ্গলে।
বনকর্তাদের দাবি, হাতির বৃদ্ধি বা কমে যাওয়ার নেপথ্যে জন্ম-মৃত্যু যেমন থাকে, তেমনিই পরিযায়ী হাতির দলের চলে এসে থেকে যাওয়াটাও একটা দিক। বনকর্তাদের দাবি, জন্ম-মৃত্যুর অনুপাত মোটের উপর ঠিকই রয়েছে। বেশ কিছু দুর্ঘটনায় হাতিমৃত্যু হয়েছে উত্তরে। মুখ্য বনপালের দাবি, “জঙ্গলের আয়তন অনুযায়ী হাতিরা নিজেদের থাকার অথবা বিচরণের ক্ষেত্র বেছে নেয়। উত্তরবঙ্গের জঙ্গলে এখন যতগুলি হাতি রয়েছে তা জঙ্গলের আয়তনের সঙ্গে ভারসাম্যপূর্ণ।”
উত্তরবঙ্গের জঙ্গলে হাতিদের যাতায়াতের ১৫টি করিডর রয়েছে। তার মধ্যে আন্তর্জাতিক করিডরও রয়েছে। দক্ষিণবঙ্গের হাতির দলও উত্তরবঙ্গে নানা পথে চলে আসে। পরিবেশপ্রেমীদের দাবি, বেশির
ভাগ পরিযায়ী হাতির দল উত্তরবঙ্গের জঙ্গলে এসে কিছুদিন থেকে করিডর দিয়ে চলে যায়। জঙ্গলের আয়তন বৃদ্ধি না পাওয়ায় পরিযায়ী হাতিদের স্থায়ী আশ্রয়ের পর্যাপ্ত জায়গা নেই উত্তরের বনে।