খোঁজ: ফাঁসিদেওয়ার রহমুজোত গ্রামে চিতাবাঘের আতঙ্ক। চিতাবাঘ খুঁজতে ব্যস্ত পুলিশকর্মীরা। পাতা হয়েছে খাঁচা। (ইনসেটে) নিজস্ব চিত্র
শহর লাগোয়া এলাকায় চিতাবাঘের আতঙ্কে ঘুম উড়েছে বাসিন্দাদের। ফাঁসিদেওয়ার রহমুজোতের ঘটনা। ওই এলাকাটি ফুলবাড়ি ক্যানালের ফুডপার্ক লাগোয়া এলাকায়। সেখানে খেত, বাঁশঝাড় এবং চা বাগান রয়েছে। বাসিন্দাদের দাবি, গত এক সপ্তাহ ধরে সেখানে চিতাবাঘের মতো প্রাণী কয়েকজন দেখেছেন। তাতেই আতঙ্ক ছড়ায়। এর মধ্যে শুক্রবার সকালে স্থানীয় এক যুবক ফের চিতাবাঘের মতো একটি প্রাণী দেখেছেন বলে দাবি করেন। ওই এলাকার একটি গুদামে স্থানীয় এক ব্যক্তি তাঁর ডেকোরেটরের ব্যবসার মালপত্র মজুত করে রাখেন। সেই গুদামেই প্রাণীটিকে ঢুকতে দেখেছেন বলে দাবি করেন ওই যুবক।
স্থানীয় বাসিন্দা পাপাই সিংহ বলেন, ‘‘সকালে বাড়ি থেকে বের হয়ে ঘোরাঘুরি করছিলাম। হঠাৎ একঝলক চিতাবাঘের মত ডোরাকাটা একটা প্রাণীর দেহের কিছুটা দেখি। ভাল করে দেখতে না পেলেও চিতাবাঘই মনে হয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে এলাকার লোকজনকে খবর দিই।’’
খবর পেয়ে প্রথমে পুলিশ যায়। পরে বন দফতরের কর্মীরা গিয়ে এলাকায় তল্লাশি শুরু করেন। ওই টিনের শেডের গুদামে সার্চ লাইট দিয়ে খোঁজাখুজি করা হয়। কিন্তু কোনও প্রাণীর সন্ধান মেলেনি। শেষে বন দফতরের তরফে এলাকা লাগোয়া একটি চা বাগানে খাঁচা পাতা হয়। শুক্রবার রাত অবধি সেখানে কোনও চিতাবাঘ ধরা পড়ার খবর মেলেনি। ফাঁসিদেওয়ার বিডিও সঞ্জু গুহ মজুমদার বলেন, ‘‘চিতাবাঘের আতঙ্কের কথা শুনেছি। বন দফতর বিষয়টি দেখছে। বাসিন্দাদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।’’
বন দফতর সূত্রের খবর, শিলিগুড়ি মহকুমার তরাই এলাকার চা বাগানগুলিতে চিতাবাঘ প্রায়শই দেখা যায়। চা বাগানের নালাগুলিতে চিতাবাঘ ডেরা বাঁধে। নকশালবাড়ি, খড়িবাড়ির দিকে চিতাবাঘের হানার খবর বেশি এলেও ফাঁসিদেওয়ায় ততটা হয় না। তবে আগেও এই ব্লকের বিভিন্ন চা বাগান এলাকায় চিতাবাঘের খোঁজ মিলেছে। গোটা এলাকায় বাঁশঝাড়, চা বাগান এবং টানা ক্যানাল থাকায় বাসিন্দাদের অনেকের সন্দেহ, রাতের অন্ধকারে কোথাও থেকে চিতাবাঘ এলেও আসতে পারে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, বন দফতরকে খবর দেওয়া হলেও তাঁরা অনেক পরে এসেছে। এর আগে ফাঁসিদেওয়া থানার পুলিশ খবর পেয়ে এলাকায় আসে। রহমুজোতে ফুডপার্ক ছাড়াও একটি বিনোদন পার্ক রয়েছে। সকাল থেকে বিকাল অবধি সেখানে ভালই ভিড় হয়। এই ঘটনার জেরে সেখানেও নিরাপত্তাকর্মীরা নজরদারি বাড়িয়েছেন। বন দফতরের বাগডোগরা রেঞ্জের অধীনে এলাকাটি পড়ে। দফতরের অফিসারেরা জানিয়েছেন, এলাকায় খাঁচা পাতা হয়েছে, নজরদারিও বাড়ানো হয়েছে। এখনও কোনও চিতাবাঘের দেখা মেলেনি বলে জানিয়েছেন বনদফতরের কর্মীরা।