—ফাইল চিত্র।
একসময় ‘দাদা’ ছিলেন জেলা পর্যবেক্ষক। সেই সুবাদে দাদার সঙ্গেই ছিলেন তাঁরা। ছিল সখ্যতাও। গত পঞ্চায়েত ভোটের পর দাদারই হাত ধরে কেউ হয়েছিলেন গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান, কেউ পঞ্চায়েত সমিতি ও জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ বা কেউ সামলেছেন দলীয় পদ। কিন্তু সেই দাদা অর্থাৎ শুভেন্দু অধিকারী মন্ত্রীত্ব ছেড়ে বিজেপিতে যোগদানের গুঞ্জন জোরালো হতে শুরু করেছে। এখন কী করবেন শুভেন্দুর সেই অনুগামীরা?
নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করতে শনিবার মালদহের কালিয়াচক ২ ব্লকে তড়িঘড়ি বৈঠক করলেন তৃণমূল পরিচালিত ব্লকের সমস্ত গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান, পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য, কর্মাধ্যক্ষ, জেলা পরিষদ সদস্য ও জেলা নেতৃত্বের একাংশ। শুধু তাই নয়, বৈঠকের পর তাঁরা সাফ জানিয়েও দিলেন, ‘‘দাদা নয়, দিদির (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) সঙ্গেই রয়েছি আমরা, দিদির সঙ্গেই থাকব।’’ দিদির পাশে থাকার বার্তা দিতে এ দিন কালিয়াচকের তিনটি ব্লকে মোটরসাইকেল র্যা লিও করে যুব তৃণমূল।
বেশ কয়েক বছর ধরেই মালদহ জেলা তৃণমূলের পর্যবেক্ষক ছিলেন শুভেন্দু। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে তাঁর হাত ধরে দল মালদহ জেলায় ব্যাপক সাফল্য পায় তৃণমূল। জেলার ১৪৬টি গ্রাম পঞ্চায়েত, ১৫ টি পঞ্চায়েত সমিতির বেশিরভাগ দখলে আসে। মালদহ জেলা পরিষদও পায় তৃণমূল। দলীয় সূত্রে খবর, পর্যবেক্ষক থাকার সুবাদে দলের দখলে আসা ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের পদাধিকারী নির্বাচনে বিশেষ ভূমিকা ছিল শুভেন্দুরই। শুক্রবার শুভেন্দু মন্ত্রীত্ব পদ থেকে ইস্তফাও দেওয়ার পর পঞ্চায়েতের পদাধিকারী ও জনপ্রতিনিধিরা রীতিমতো দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে পড়েন।
দলীয় সূত্রে খবর, শুভেন্দুর সঙ্গে থাকা কালিয়াচক ২ ব্লকের ৯ টি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি থেকে শুরু করে কর্মাধ্যক্ষ, সদস্য এবং জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ ও সদস্যরা নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করতে এ দিন দুপুরে পঞ্চায়েত সমিতির সভাকক্ষে বৈঠক করেন। বৈঠক ডেকেছিলেন তৃণমূলের জেলা কমিটির সহ-সভাপতি তথা জেলা তৃণমূল সংখ্যালঘু সেলের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম। ছিলেন জেলার সাধারণ সম্পাদক দ্বিজেন মণ্ডল এবং সাধারণ সম্পাদক আসাদুল আহমেদরাও।
এ দিন নজরুল বলেন, ‘‘কালিয়াচক ২ ব্লকের ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের জনপ্রতিনিধিদের অবস্থান জানিয়ে দিতেই বৈঠক ছিল। সিদ্ধান্ত হয়েছে, দাদা নয়, আমরা দিদির সঙ্গেই আছি, থাকবও। পাশাপাশি সিদ্ধান্ত হয়েছে, আগামী বিধানসভা নির্বাচনে দল যাকে প্রার্থী করবে তার হয়েই আমরা প্রচারে নামব।"
জনতাকে নিজেদের অবস্থান বোঝাতে এ দিন কালিয়াচকের তিনটি ব্লকের যুব তৃণমূলের কর্মীরা কালিয়াচকের রামনগর থেকে শাহবাজপুর অঞ্চল পর্যন্ত প্রায় ৮ কিলোমিটার বাইক র্যা লি করেন। কালিয়াচক ৩ ব্লক যুব তৃণমূল সভাপতি অসীম বিশ্বাস বলেন, ‘‘আমাদের এলাকায় সবাই দিদির পাশে আছি। আজ তিনটি ব্লকের যুব কর্মীরা হাতে হাত রেখে সেই শপথও নিয়েছেন।’’