তৃণমূল জেলা পার্টি অফিসের অনুষ্ঠানে জেলা সভাপতি পার্থপ্রতিম রায় (উপরে) ও (নীচে) প্রাক্তন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। নিজস্ব চিত্র।
পতাকা উত্তোলনের সময় ছিল সকাল ১০টা। তখনই রবীন্দ্রনাথ ঘোষ, বিনয়কৃষ্ণ বর্মণ, পার্থপ্রতিম রায়ের জেলা পার্টি অফিসে হাজির থাকার কথা। আচমকা সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি পার্থপ্রতিম রায় জেলা পার্টি অফিসে গিয়ে ২১ জুলাইয়ের পতাকা পতাকা উত্তোলন করেন। খানিকটা হতভম্ব হয়ে পড়েন রবি-অনুগামীরা। পরে নির্ধারিত সময়ে রবীন্দ্রনাথ ফের পতাকা উত্তোলন করেন।
২১ জুলাই এ ভাবেই তৃণমূলের ‘বিরোধ’ সামনে এল কোচবিহারে। পার্থপ্রতিম অবশ্য দাবি করেছেন, দলের রাজ্য সহ-সভাপতি তথা প্রাক্তন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথের কর্মসূচি নিয়ে তাঁর কিছু জানা ছিল না। তিনি বলেন, ‘‘দলের জেলা সভাপতি হিসেবে আমি কর্মসূচি পালন করেছি। পরে সেখানে গিয়ে জানতে পারি আরও কর্মসুচি রয়েছে। তাঁরা সেটা পালন করেছেন।’’
পার্থপ্রতিমের পতাকা উত্তোলন নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি রবীন্দ্রনাথ। তিনি বলেন, “আগাম নির্ধারিত কর্মসুচি ছিল। দলের পুরনো ও নতুন কর্মীরা যোগদান করেছেন। সেখানে আমরা ২১ জুলাই পালন করেছি।”
রবীন্দ্রনাথের অনুগামী বলে পরিচিত দলের কোচবিহার জেলার সাধারণ সম্পাদক খোকন মিয়াঁ জেলা সভাপতির ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তাঁর দাবি, জেলা পার্টি অফিসে রবীন্দ্রনাথ ঘোষ ২১ জুলাইয়ের কথা মাথায় রেখে আগাম একটি কর্মসূচির ডাক দেন। পরে জেলা সভাপতির অফিস থেকে তাঁকে ফোন করে জানানো হয়, ওই দিনেই পার্থপ্রতিমের কর্মসূচি হবে জেলা পার্টি অফিসে। দুটো কর্মসূচিরই সময় ছিল সকাল ১০টা। তিনি বলেন, “আমরা দলকে ঐকবদ্ধ হিসেবে দেখতে চাই। তাই একই সময়ে কর্মসূচি জেনে সবার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলাম। সেই মতোই এ দিন সেখানে যাই। জানতে পারি, সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ সভাপতি পতাকা উত্তোলন করে চলে গিয়েছেন। এতে সবাইকে অপমান করা হল।”
জেলা পার্টি অফিসের অনুষ্ঠানে প্রাক্তন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। নিজস্ব চিত্র।
দলীয় সূত্রে খবর, দীর্ঘসময় ধরে কোচবিহারে রবীন্দ্রনাথ ও পার্থপ্রতিমের অনুগামীদের মধ্যে ‘বিরোধ’ চলছে। বিধানসভা ভোটের পরে কিছুটা রাশ টানলেও ফের বিরোধ সামনে আসতে শুরু করেছে। ২১ জুলাইয়ের কর্মসূচি ঘিরে তা প্রায় প্রকাশ্যেই চলে এল।
দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন ভার্চুয়াল সভার আয়োজন হয় পার্থপ্রতিম রায়ের কোচবিহারের গোলবাগান লাগোয়া এলাকায় নিজস্ব অফিসের সামনে। তার বাইরে মা ভবানী চৌপথীতে জেলা পার্টি অফিসেও আলাদা ভাবে দু’টি কর্মসূচি হয়। ওই কর্মসূচিতে সকালে গিয়ে পতাকা উত্তোলন করেন পার্থ। অভিযোগ, সেই পতাকা পরে নামিয়ে দেওয়া হয়। বেলা ১০টা নাগাদ ফের সেখানে পতাকা উত্তোলন করেন রবীন্দ্রনাথ। রবীন্দ্রনাথের সঙ্গেই ছিলেন পার্টির জেলা চেয়ারম্যান বিনয়কৃষ্ণ বর্মণ এবং কো-অর্ডিনেটর অর্ঘ্য রায় প্রধান। পরে তাঁরা পার্থপ্রতিমের অফিসের সামনের অনুষ্ঠানেও যোগ দেন।