(বাঁ দিকে) দুলালচন্দ্র সরকার ওরফে বাবলা। হাসপাতাল থেকে বাড়ির পথে তৃণমূল নেতার দেহ (ডান দিকে)। —নিজস্ব চিত্র।
মালদহের তৃণমূল সহ-সভাপতি দুলাল সরকার ওরফে বাবলাকে খুনের ঘটনায় আরও পাঁচ জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। ধৃতদের মধ্যে এক জন স্থানীয় হলেও বাকিরা অন্যান্য এলাকার বাসিন্দা বলে জানিয়েছেন ইংরেজবাজার পুরসভার পুরপ্রধান কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরী। বৃহস্পতিবারই এই ঘটনায় দু’জনকে গ্রেফতার করেছিল মালদহ জেলা পুলিশ। তাঁদের মধ্যে মহম্মদ সামি আখতার নামের এক জন বিহারের কাটিহারের বাসিন্দা। অপর জন টিঙ্কু ঘোষ, ইংরেজবাজারের গাবগাছি অঞ্চলের বাসিন্দা। শুক্রবার সকাল পর্যন্ত মোট গ্রেফতারির সংখ্যা হল সাত।
শুক্রবার সকালে হাসপাতাল থেকে দুলালের দেহ ইংরেজবাজারের মহানন্দাপল্লীর বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। তাঁকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে উপস্থিত ছিলেন কৃষ্ণেন্দু এবং জেলা তৃণমূলের অন্য নেতারা। বাড়ি থেকে মরদেহ নিয়ে যাওয়া হবে ইংরেজবাজারে তৃণমূলের পার্টি অফিসে। শুক্রবার দুপুরে দুলালের শেষকৃত্য হওয়ার কথা।
শুক্রবার দুলালকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে এসে কৃষ্ণেন্দু পাঁচ জনের গ্রেফতারির খবর জানিয়ে বলেন, “পাঁচটি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার হয়েছে। মোট ছ’জন ছিল। এক জন পালিয়ে গিয়েছে।” তিনি এ-ও বলেন যে, “ভাড়াটে খুনিদের নিয়োগ করা হয়েছিল। শুনেছি ১০ লক্ষ টাকার ডিল হয়েছিল। পুলিশ গোটা বিষয়টি দেখছে।” পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে কৃষ্ণেন্দু বলেন, “যা বলার মুখ্যমন্ত্রী বলে দিয়েছেন। উনি গোটা বিষয়টি দেখছেন।”
বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ ইংরেজবাজার শহরের ঝলঝলিয়ার কাছে নিজের প্লাইউড কারখানার কাছে দাঁড়িয়েছিলেন দুলাল। তিনি ইংরেজবাজার পুরসভার ২২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ছিলেন। বাইকে চেপে এসে তিন জন দুষ্কৃতী তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় বলে অভিযোগ। একটি গুলি দুলালের মাথার কাছে লাগে। সঙ্কটজনক অবস্থায় তাঁকে মালদহ মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করানো হয়। পরে সেখানেই মৃত্যু হয় তাঁর।
দুলালের মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। তিনি বলেন, “আমার ঘনিষ্ঠ সহযোগী এবং জনপ্রিয় নেতা বাবলা সরকার আজ খুন হয়েছেন। তৃণমূলের গোড়ার দিন থেকে উনি (বাবলা) এবং তাঁর স্ত্রী চৈতালি সরকার দলের জন্য কঠোর পরিশ্রম করেছেন। বাবলা কাউন্সিলর হিসাবেও নির্বাচিত হয়েছেন। এই ঘটনার কথা জেনে আমি দুঃখিত এবং হতবাক। অপরাধীদের দ্রুততার সঙ্গে ধরা উচিত।” এই নিয়ে নবান্নে পুলিশের দিকেও আঙুল তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রশাসনিক বৈঠকের শুরুতে দুলালের খুনের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘অবশ্যই পুলিশের গাফিলতিতে খুন হয়েছে। ওর উপর আগেও আক্রমণ করা হয়েছিল। আগে নিরাপত্তা পেত। পরে সেটা তুলে নেওয়া হয়।” রাজ্যের দুই মন্ত্রী ফিরহাদ এবং সাবিনা ইয়াসমিনকে মালদহে যাওয়ার নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। এর পরেই মালদহে পৌঁছন ফিরহাদ। তার পরে দু’জনের গ্রেফতারির খবর দেন।