বহাল প্রধানেরা, খর্ব হল দায়িত্ব

মঙ্গলবার ইংরেজবাজারের পুরপ্রধান নীহাররঞ্জন ঘোষের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনেন দলেরই ১৫ কাউন্সিলর। সেই তালিকায় আছেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরী, দুলাল সরকার, নরেন্দ্রনাথ তিওয়ারি, আশিস কুণ্ডুর মতো প্রথম সারির নেতারা।

Advertisement

অভিজিৎ সাহা 

মালদহ শেষ আপডেট: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০৫:১১
Share:

কলকাতায় মালদহের দুই পুরসভার কাউন্সিলরেরা। নিজস্ব চিত্র

দলীয় কাউন্সিলরদের অনাস্থা আনার পরেও পদে বহাল থাকলেন দুই পুরপ্রধানই। তবে বিক্ষুব্ধ কাউন্সিলরদের অভিযোগের ভিত্তিতে তাঁদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্তের আশ্বাস দিলেন পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। সোমবার রাতে কলকাতায় মালদহের দুই পুরসভার বিক্ষুব্ধ কাউন্সিলর ও পুরপ্রধানদের নিয়ে পৃথক ভাবে বৈঠক করেন তিনি। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ইংরেজবাজার ও পুরাতন মালদহের পুরপ্রধান নীহাররঞ্জন ঘোষ ও কার্তিক ঘোষকেই পদে বহাল রাখা হয়। তবে নীহারের ক্ষমতা খর্ব করা হয়েছে। পুরসভার অর্থ বিষয়ক ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে উপ-পুরপ্রধান দুলাল সরকারকে। সেই সঙ্গে দুই পুরসভার বিক্ষুব্ধ কাউন্সিলরদের অনাস্থা প্রত্যাহারের নির্দেশ দিয়েছেন ফিরহাদ হাকিম। পুরভোটের আগে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব সামাল দিতে পুরপ্রধানদের পদে বহাল রেখে ও বিক্ষুব্ধদের গুরুত্ব দিয়ে ফিরহাদ হাকিম কৌশলী চাল দিলেন বলে মত দলেরই একাংশের।

Advertisement

মঙ্গলবার ইংরেজবাজারের পুরপ্রধান নীহাররঞ্জন ঘোষের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনেন দলেরই ১৫ কাউন্সিলর। সেই তালিকায় আছেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরী, দুলাল সরকার, নরেন্দ্রনাথ তিওয়ারি, আশিস কুণ্ডুর মতো প্রথম সারির নেতারা। দলেরই পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা আসায় আসরে নামেন জেলা পর্যবেক্ষক গোলাম রব্বানি ও মৌসম নুর। দু’পক্ষকে নিয়ে দফায় দফায় বৈঠক করেন তাঁরা।

এমন অবস্থায় শুক্রবার অনাস্থা আসে পুরাতন মালদহ পুরসভাতেও। ২০টি আসনের মধ্যে তৃণমূলের দখলে রয়েছে ১৯টি আসন। ১৪ কাউন্সিলরই অনাস্থা আনেন পুরপ্রধান কার্তিক ঘোষের বিরুদ্ধে। ফের বৈঠকে বসেন রব্বানি ও মৌসম। তবে দুই পুরসভার সমাধান সূত্রই থাকে অধরা। এর পরেই সমস্যা মেটাতে আসরে নামেন রাজ্য নেতৃত্ব।

Advertisement

এ দিন সন্ধে সাড়ে ৬টা থেকে বিধানসভায় ইংরেজবাজর নিয়ে বৈঠক শুরু করেন পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। ছিলের রব্বানি ও মৌসমও। নীহারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে আশিস, দুলাররা দাবি করেন, বোর্ড মিটিং হয় না। সৌন্দর্যায়ন, বাতিস্তম্ভে কোটি কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে। তদন্তের আশ্বাস দেন ফিরহাদ। তবে নীহারকেই পদে রাখা হয়। পুরসভার অর্থ বিষয়ক ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে দুলালকে। চেয়ারম্যান ইন কাউন্সিলরদের নিয়ে কাজ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে নীহারকে।

পুরাতন মালদহে কার্তিককেই পদে রাখা হলেও তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগেরও তদন্ত হবে বলে জানিয়েছেন ফিরহাদ। নীহার ও কার্তিক বলেন, “আগেই বলেছিলাম দলের সিদ্ধান্ত মেনে নেব। সকলকে নিয়েই কাজ করব।’’ দুলাল বলেন, “অনৈতিক কাজ হওয়ায় দলকে জানিয়েছি। দল ব্যবস্থা নেবে বলেছে।’’ মৌসম বলেন, “সমস্যা মিটেছে। অনাস্থা তুলে নেওয়ার বার্তা দেওয়া হয়েছে কাউন্সিলরদের।”

বছর পার হলেই পুরভোট। তাই সব পক্ষকে গুরুত্ব দিয়ে রাজ্য নেতৃত্ব গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জল ঢালার চেষ্টা করলেন বলে দাবি তৃণমূল শিবিরের।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement