ফালাকাটায় ব্যাঙ্কের সামনে ভিড়। —নিজস্ব চিত্র।
নোট বাতিলের ৫০ দিনের শেষ দিনেও হয়রানির শিকার হতে হল গ্রাহকদের। টাকা কবে স্বাভাবিক হবে, তার উত্তর এখনও নেই। ৫০ দিনের মাথায়ও সকাল ৭টা থেকে ব্যাঙ্কের সামনে পুরুষ-মহিলাদের লাইন অব্যাহত ফালাকাটায়। লাইন পড়েছে এটিএম কাউন্টারের সামনেও। এক দু’টি এটিএম খুললেও বেশিরভাগ এটিএম এখনও বন্ধ ফালাকাটায়। ফালাকাটার ৮ মাইল এলাকার এক মহিলা আশাবিবি পুত্রবধূর চিকিৎসার টাকার জন্য এ দিন সকাল ৭টায় ফালাকাটার স্টেট ব্যাঙ্কের সামনে লাইন দেন। মাথাভাঙার এক নার্সিংহোমে সদ্যোজাত শিশুপুত্র নিয়ে ভর্তি আশাবিবির পুত্রবধূ। প্রসবের পরে জটিল রোগে আক্রান্ত মা ও সদ্যোজাত। তাই শুক্রবার সকাল সাত সকালে টাকার জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে পড়েছেন।
লাইনে দাঁড়িয়েই আশাদেবী বলেন, “যত তাড়াতাড়ি টাকা নিয়ে নার্সিংহোমে যাব তত তাড়াতাড়ি চিকিৎসা শুরু হবে। ব্যাঙ্ক খোলার সঙ্গে সঙ্গে যেন টাকা পেতে পারি, তাই সকালে উঠেই ব্যাঙ্কের লাইনে দাঁড়িয়ে পড়েছি। নার্সিংহোম থেকে জানিয়েছে অনেক টাকার ওষুধ কিনতে হবে।” শুধু আশাদেবীই নয়। সকাল সকাল লাইনে পেনশনের টাকা তুলতে লাইনে দাঁড়ান আলিপুরদুয়ার থেকে আসা অবসরপ্রাপ্ত নার্স মলিনা রায়ও। তিনি ফালাকাটা হাসপাতালের নার্স ছিলেন। এখান থেকেই অবসর নিয়েছেন। তাই ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ফালাকাটা স্টেট ব্যাঙ্কে। এখনও অ্যাকাউন্ট পরিবর্তন করা হয়নি। তিনি বলেন, “অ্যাকাউন্ট এখনও আলিপুরদুয়ারে সরানো হয়নি। তাই ছুটে আসতে হল ফালাকাটায়। অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তুলে দিনে দিনে ফিরে যাওয়ার জন্য খুব সকালে আলিপুরদুয়ার থেকে বাসে উঠে ফালাকাটায় এসেছি। তা ছাড়া, আজ ৫০ দিনের শেষ দিন। আজকের পর সরকার আবার কী ঘোষণা করে দেয়, সেই চিন্তাও আছে।
৫০ দিন শেষ হওয়ার দিন তাই ভিড় বেড়েছে ব্যাঙ্কের লাইনে। অনেক গ্রাহক আশঙ্কা প্রকাশ করে বলছেন, ফের সরকারের কী ঘোষণায় কী হবে, তাই কিছু টাকা তুলে হাতে রাখা ভাল। পলাশবাড়ির নির্মল বিশ্বাস রসিকতা করে বলেন, “৫০ দিনের শেষ দিনে সরকারের পরবর্তী ঘোষণার আগেই কিছু দিন চলার মতো টাকা আজই তুলে রাখছি। তবে আমি আশাবাদী, মানুষ হয়রানিতে পড়বে ৩১ ডিসেম্বরের ঘোষণায় সরকার সে রকম আর কিছু করবে না।”