প্রতীকী ছবি
সদ্য জেলায় তিন জন করোনা আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে। এ অবস্থায় জেলার যে সব জায়গায় কোয়রান্টিন কেন্দ্র আছে সেখানে মাথা চাড়া দিচ্ছে ক্ষোভ। বাসিন্দাদের দাবি, কোয়রান্টিনে থাকলেও কেউ নিষেধ মেনে চলেন না। রবিবার সকালেও বুনিয়াদপুরে এলাকায় থাকা কোয়রান্টিন কেন্দ্র নিয়ে সরব হন বাসিন্দারা।
এ দিন সকালে একটি লরি ভাড়া করে ৩৪ জন পরিযায়ী শ্রমিক হরিয়ানা থেকে বুনিয়াদপুরে ঢোকেন। তাঁদের বুনিয়াদপুর বাসস্ট্যান্ডে রাখা হবে, এমন খবর পেয়েই বাসিন্দারা সেখানে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। তাঁদের দাবি, এই শ্রমিকদের স্বাস্থ্যপরীক্ষাও হয়নি। আর বাসস্ট্যান্ডের এই কোয়রান্টিন কেন্দ্রে যাঁদের আগে রাখা হয়েছিল তাঁরা সেই নির্দেশ না মেনে ইচ্ছেমতো শহরে ঘুরেছেন বলে অভিযোগ।
বাসিন্দাদের ক্ষোভ আঁচ করেই ফের লরিতে তুলে তাঁদের গঙ্গারামপুরের উদ্দেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। দুপুরের দিকে আরও একটি লরিতে প্রায় ৫০ জন শ্রমিক জেলায় পৌঁছন। এছাড়াও ছোট, বড় নানা যানবাহনে শতাধিক শ্রমিক এ দিন জেলায় এসেছেন। জেলার বিভিন্ন প্রান্তের বাসিন্দা এইসব শ্রমিকদের স্বাস্থ্যপরীক্ষা না করে সরাসি শুধু হোম কোয়রান্টিনে থাকার মৌখিক নির্দেশ দিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছে প্রশাসন, এমনটাই খবর। আর এতেই ব্যাপক সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা করছেন জেলাবাসী।
একেই সদ্য দক্ষিণ দিনাজপুরে তিন জন করোনা আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে। কুশমণ্ডির এই আক্রান্তদের প্রতিবেশীরা জানাচ্ছেন, হোম কোয়রান্টিনে থাকলেও এই শ্রমিকেরা কোনও বিধিনিষেধই মেনে চলেননি, এমনকি বাইরেও ঘোরাফেরা করেছেন। তার উপর এ সময় একটি বড় সংখ্যায় পরিযায়ী শ্রমিকেরা বাড়ি ফিরছেন। প্রশাসন সূত্রে খবর, এই অধিকাংশ শ্রমিকদেরও হোম কোয়রান্টিনে পাঠানো হবে। কুশমণ্ডির ঘটনার পর স্বভাবতই এ সিদ্ধান্ত নিয়ে আতঙ্ক ছড়িয়েছে গোটা জেলা জুড়েই। কুশমণ্ডির যে তিন জনের করোনা ধরা পড়েছে তাঁদেরও প্রথমে বাড়িতেই রাখা হয়েছিল। কিন্তু তাঁদের লালারসের রিপোর্ট পজিটিভ আসায় ঘুম উড়েছে স্থানীয় বাসিন্দা থেকে প্রশাসনের কর্তা—প্রত্যেকেরই। বাসিন্দারা জানালেন, তাঁরা শুধু বাড়ির সদস্যই নয়, গ্রামের বাসিন্দাদের সঙ্গেও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখেননি। ফলে, এদের মাধ্যমে করোনা কতটা ছড়িয়েছে, সেটার খোঁজ করতেই আরও চিন্তায় প্রশাসন। এখন যে শ্রমিকেরা বাড়ি ফিরছেন, তাঁদের বাড়ি পাঠিয়েও প্রশাসন আবার সেই ‘ভুল’ করছে, এমনটাই দাবি জেলাবাসীর।
যুব তৃণমূলের জেলা সভাপতি অম্বরীশ সরকার বলেন, ‘‘সবাইকে আবেদন জানাচ্ছি, কোয়রান্টিনের নির্দেশগুলি কঠোর ভাবে মেনে চলুন। পরিবারের সদস্য এবং স্থানীয়দের সহযোগিতাও প্রয়োজন। একমাত্র তবেই মোকাবিলা সম্ভব। আর প্রশাসনকেও বলব দ্রুত এই শ্রমিকদের লালারস পরীক্ষা করা হোক।’’ এ নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে প্রশাসনিক কর্তাদের একাধিকবার ফোন করা হলেও কেউ ফোন তোলেননি।