কালী সেজে মালদহের পথে মুর্শিদাবাদের শুভম। নিজস্ব চিত্র
পেশা বদলে কর্মহীন বাবা। স্কুল বন্ধ থাকায় নেই পড়াশোনাও। সংসারের হাল ফেরাতে মুকুট, মালা, পরচুলা, রং মেথে কালী সেজে ইংরেজবাজার শহরে দিন কাটছে মু্র্শিদাবাদের পদ্মা পারের বাসিন্দা স্কুল পড়ুয়া শুভম চৌধুরীর। তার মতোই পুজোয় বাড়তি রোজগারের আশায় মুর্শিদাবাদের পদ্মা পার থেকে গঙ্গা টপকে শহরের রাজপথে গোপাল, কৃষ্ণ সেজে ঘুরছে বহু কিশোর-কিশোরী।
বিধানসভা উপনির্বাচনে মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুরে ৯২ হাজার ভোটে জয়ী হয়ে নজির গড়েছেন প্রাক্তন মন্ত্রী জাকির হোসেন। সেই জঙ্গিপুরে পদ্মা নদীর পারে রয়েছে মিঠিপুর। গ্রামের সিংহভাগই পরিবার বেদে। সাপ ধরে খেলা দেখিয়ে চলত তাঁদের সংসার। বিধি নিষেধের জেরে পেশা বদলেছেন গ্রামবাসীরা। দিনমজুরি কিংবা সং সেজে গ্রামে গ্রামে ঘুরে সংসার চালান বহু মানুষ। করোনা আবহে এখন তেমন কাজ নেই বাড়ির পুরুষদের। পুজোর আনন্দ ফিকে বেদে পাড়ায়।
পুজোয় পরিবারের মুখে হাসি ফোটাতে গোপাল, কৃষ্ণ, কালী সেজে পথে নেমে পড়েছে শুভম, লব, বিট্টুরা। পদ্মা পার থেকে গঙ্গা টপকে মালদহের ইংরেজবাজার শহরের রাজপথে মায়েদের হাত ধরে ঘুরেই দিন কাটছে তাদের। পথের কালী, গোপাল, কৃষ্ণের হাতে খেলনা নেই। আছে স্টিলের থালা। কেউ দ্বিতীয়, কেউ বা আবার তৃতীয় শ্রেণিতে পড়াশোনাও করে।
এমন রূপে কেন? শুভমের মা সাথী বেদ বলেন, “সাপ খেলা দেখাতেন স্বামী। সে কাজ বন্ধ হয়ে যায়। সংসার চালাতে বহুরূপী সেজে ঘুরতেন তিনি। তবে তেমন উপার্জন হত না। তাই নিরুপায় হয়ে ছেলেকে কালী সাজাতে হয়েছে। এখন স্কুলও তো নেই।” মা আরও বলেন, “ছেলেকে দেখে পথ চলতি মানুষ কিছু সাহায্য করছেন। দিনের শেষে ফের ফিরে যাচ্ছি বাড়ি।” চন্দনা বেদ নামে আরেক মহিলা বলেন, “ছোট ছেলেরা বহুরূপী সেজে থাকায় পথ চলতি মানুষদের নজর পড়ছে। তখনই মিলছে সাহায্য।”