শোক: কান্নায় ভেঙে পড়েছেন শিশুর পরিজনেরা। নিজস্ব চিত্র।
সাড়ে তিন বছরের ছেলেকে গুলি করে খুনের অভিযোগ উঠেছে বাবার বিরুদ্ধে। বুধবার রাত দেড়টা নাগাদ চিকিৎসাধীন অবস্থায় রায়গঞ্জ মেডিক্যালে শিশুটির মৃত্যু হয়। পুলিশ জানিয়েছে, শিশুটির নাম মহম্মদ সাহিল। বাড়ি, রায়গঞ্জ থানার বাহিন গ্রাম পঞ্চায়েতের ঝিটকিয়া স্টেশন এলাকায়। বৃহস্পতিবার শিশুটির দেহ ময়নাতদন্ত করায় পুলিশ। প্রাথমিক রিপোর্টে শিশুটির মাথার ডানদিকে গুলির আঘাতের চিহ্ন মিলেছে। এদিকে, শিশুটি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর বাবা নাসতার শেখ এলাকা ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছেন বলে পুলিশের দাবি।
রায়গঞ্জ থানার আইসি সুরজ থাপা বলেন, ‘‘অভিযুক্তের খোঁজে তল্লাশি চলছে।’’ পুলিশের দাবি, স্ত্রীর সঙ্গে পারিবারিক বিবাদ বা অন্য কোনও কারণে ওই ব্যক্তি ছেলেকে গুলি করে খুন করেছেন কী না, তা জানতে তদন্ত শুরু হয়েছে। পুলিশ ওই ব্যক্তির বিছানা থেকে একটি গুলির খোলও উদ্ধার করেছে। তদন্তকারী এক পুলিশ কর্তা বলেন, ‘‘অভিযুক্ত ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে অতীতে পুলিশের কাছে কোনও অভিযোগ ছিল না। ওই ব্যক্তি কোথা থেকে আগ্নেয়াস্ত্র পেয়েছিলেন তা দেখা হচ্ছে। উদ্ধার হওয়া গুলির খোল দেখে সেটি সেভেন কিংবা নাইন এমএম পিস্তলের গুলি বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।’’
নাসতার মুম্বইয়ে পরিযায়ী শ্রমিকের কাজ করেন। লকডাউনের জেরে পাঁচ মাস আগে বাড়ি ফেরেন। তাঁর স্ত্রী পারুল খাতুন গৃহবধূ। তাঁদের দুই ছেলের মধ্যে সাহিল ছোট। আজ, শুক্রবার নাসতারের কাজে যোগ দেওয়ার জন্য মুম্বইয়ের উদ্দেশ্যে রওনা হওয়ার কথা ছিলও। পারুলের দাবি, ওইদিন রাত ৯টা নাগাদ নাসতার স্থানীয় একটি চায়ের দোকান থেকে আড্ডা মেরে বাড়িতে ফিরে রাতের খাবার খান। সেইসময় পারুল তাঁর সাহিল ও সাড়ে পাঁচ বছরের সাগরকে নিয়ে শুয়েছিলেন।
পারুল বলেন, ‘‘খাওয়াদাওয়া সেরে বিছানার সামনে দাঁড়িয়ে আগ্নেয়াস্ত্রটি ও নাড়াচাড়া করছিল। তখনই সেটি থেকে গুলি ছিটকে আমার ছোট ছেলের মাথার ডানদিকে লাগে। এরপর সঙ্গে সঙ্গে আমরা ছেলেকে হাসপাতালে ভর্তি করেও বাঁচাতে পারিনি। স্বামী কোথা থেকে আগ্নেয়াস্ত্র পেল তা বলতে পারব না।’’ তাঁর অবশ্য দাবি, তাঁর সঙ্গে স্বামীর বিবাদ থাকতেই পারে। তার জন্য স্বামী ছেলেকে গুলি করে খুন করবে তা তিনি মানতে পারছেন না। নাসতারের বিরুদ্ধে কোনও সমাজবিরোধী কার্যকলাপের অভিযোগ রয়েছে কী না সেটাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।