ধান কেনাবেচা বালুরঘাটের কিসানমান্ডিতে। নিজস্ব চিত্র
তারিখের পরে তারিখ— বলিউডের জনপ্রিয় সিনেমার সংলাপই এখন ঘুরছে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার চাষিদের মুখে মুখে।
কারণ, ধান বিক্রি করতে গেলেও তারিখ মিলছে না বলে অভিযোগ। কবে ধান বিক্রি করতে পারবেন, তার কোনও নিশ্চয়তাও দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ। হচ্ছে হয়রানি। যদিও খাদ্য দফতর অভিযোগ মানতে নারাজ। তাদের যুক্তি, সবাইকে ধান বিক্রির সুযোগ দিতে হলে দ্বিতীয় বার তারিখ পেতে একটু সমস্যা হবেই।
বালুরঘাটের ধান চাষি দুলাল বর্মণ, অশ্বিনী মণ্ডল, সমীর মহন্তের দাবি, নাম নথিভুক্ত করার পরে প্রথম বার ১০ কুইন্ট্যাল ধান বিক্রি করতে পেরেছেন। কিন্তু তাঁদের ঘরে এখনও অনেক ধান পড়ে রয়েছে। অভিযোগ, সেই ধান বিক্রি করতে গেলে বলা হচ্ছে— তারিখ এখনও আসেনি। কবে সেই ধান বিক্রি করতে পারবেন, তা নিয়ে চিন্তায় রয়েছেন তাঁরা। ওই চাষিদের কথায়, ‘‘তারিখ না পেলে বাধ্য হয়ে কম দামেই খোলা বাজারে ধান বিক্রি করে দিতে হবে।’’
জেলার তপন, কুমারগঞ্জ, গঙ্গারামপুর, হরিরামপুর ও বালুরঘাট ব্লকে সব চেয়ে বেশি ধান উৎপাদন হয়। স্থানীয় সূত্রে খবর, তাই ওই সব ব্লকে ধান ক্রয়কেন্দ্রে চাষিদের ভিড় বাড়ছে। প্রশাসনিক সূত্রে খবর, সে সব ব্লকে ধান কেনার গতি বাড়াতে নতুন নিয়ম করছে খাদ্য দফতর। আগে যেখানে দিনে ৪০ জন কৃষকের থেকে ধান কেনা হত, এখন সেখানে ৮০ জন কৃষকের থেকে ধান কেনা হবে। পাশাপাশি এই ব্লকগুলিতে একটি করে ‘মেগা ক্যাম্প’ করারও পরিকল্পনা করেছে খাদ্য দফতর।
প্রশাসন জানিয়েছে, সংশ্লিষ্ট ব্লকগুলির যে এলাকায় মেগা ক্যাম্প করা হলে ব্লকের সমস্ত কৃষকদের সুবিধা হবে, সেখানেই তা করা হবে। ব্লকের জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করে দ্রুত ওই শিবির করা হবে। প্রশাসনিক সূত্রে খবর, আপাতত জেলার কুমারগঞ্জ, তপন, গঙ্গারামপুর ও বালুরঘাটে চারটি মেগা ক্যাম্প করা হবে। হরিরামপুর ব্লকের জন্য ধান ক্রয়কেন্দ্রের সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে।
সরকারি আধিকারিকেরা জানান, ধান ক্রয়কেন্দ্র ছাড়াও জেলা জুড়ে ১৪টি মহিলা স্বনির্ভর দল, ৫৪টি সমবায়ের মাধ্যমেও ধান কেনা হচ্ছে। জেলার ৬৪টি অঞ্চলে ক্যাম্প করে স্বনির্ভর দল ও সমবায়ের মাধ্যমে ধান কেনার কাজ চলছে। জেলার খাদ্য নিয়ামক জয়ন্ত রায় বলেন, ‘‘বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ৪৮ হাজার মেট্রিক টন ধান কেনা হয়েছে। সমস্ত চাষিই যাতে ধান বিক্রি করতে পারেন সে জন্য সব রকম ব্যবস্থা করা হয়েছে।’’