কাটছে না জট, প্রতিবাদ-বিক্ষোভে চাষিরা
Protest

farmers: টাকা নিয়ে বন্ড ভিন্‌ রাজ্যের চাষিকে, ক্ষোভ

কৃষকরা অভিযোগ করেন, গত বছর আলু রাখার জন্য হিমঘরে আধারকার্ড জমা দেওয়া হয়।

Advertisement

নমিতেশ ঘোষ

কোচবিহার শেষ আপডেট: ১২ মার্চ ২০২২ ০৭:৩৯
Share:

কোচবিহারের একটি হিমঘরের সামনে অবস্থান আলু চাষিদের। শুক্রবার। ছবি: হিমাংশু রঞ্জন দেব

বন্ডে অসমের মঙ্গলদই গ্রামের এক ব্যক্তির নাম লেখা রয়েছে। তাঁর নামে একশো প্যাকেট আলু রাখার নথিপত্র দিয়েছেন হিমঘর কর্তৃপক্ষ। অথচ কোচবিহারের কৃষকদের অনেকেই হন্যে হয়ে ঘুরেও কোথাও বন্ড পাচ্ছেন না। সেখানে অসমের এক ব্যক্তির নামে বন্ড দেওয়া হল কি করে? অভিযোগ উঠেছে, টাকার বিনিময়ে এমন ভাবেই বন্ড কেনাবেচার খেলা চলছে কোচবিহার জেলায়। সেখানে কৃষকদের বঞ্চিত করা হচ্ছে। ফড়়েরা সব কিছু নিয়ন্ত্রণ করছে। তা নিয়েই আন্দোলনে সামিল হলেন কৃষকরা। শুক্রবার কোচবিহারের চকচকায় কৃষকদের একটি বড় অংশ অনশন অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করেন। একটি হিমঘরে তালাও ঝুলিয়ে দিয়েছেন তারা। কোচবিহারের মহকুমাশাসক রাকিবুর রহমান বলেন, “আলু সংরক্ষণের বিষয়টি নিয়ে বৈঠক হয়েছে। যাতে নিয়ম মেনে প্রত্যেক জায়গায় আলু রাখা হয় সে বিষয়ে নজরদারি শুরু হয়েছে।”

Advertisement

কৃষকরা অভিযোগ করেন, গত বছর আলু রাখার জন্য হিমঘরে আধারকার্ড জমা দেওয়া হয়। সেই আধারকার্ডের নম্বর ধরেই বন্ড তৈরি করে তা বাইরে বিক্রি করে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। চকচকার কৃষক পরিমল দেবনাথ বলেন, “আমরা ছোট কৃষক। আলু রাখার জন্যে বার বার ঘুরেও কোথাও বন্ড পাইনি। অথচ বাইরের কিছু ব্যবসায়ী প্রচুর বন্ড নিয়ে আলু রাখছেন। এটা কোনও ভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।” চকচকার আলু চাষী যুব তৃণমূল নেতা বিকাশ সূত্রধর জানান, তিনি এ বারে আট বিঘা জমিতে আলু চাষ করেন। হিমঘরে তাঁর চারশো প্যাকেট আলু রাখা প্রয়োজন। অথচ তিনি কোনও বন্ড পাননি। তিনি বলেন, “একটি হিমঘর কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দিলেন বন্ড শেষ হয়েছে। তাহলে আমরা কোথায় যাব? আর পরে আমরা জানতে পারলাম প্রচুর বন্ড বাইরের কিছু ব্যবসায়ীকে দেওয়া হয়েছে।”

কোচবিহারে তিরিশ হাজার হেক্টরের বেশি জমিতে আলু চাষ হয়। ওই আলুর একটি অংশ সঙ্গে সঙ্গে বিক্রি হলেও বাকিটা সংরক্ষিত করা হয়। পরে যখন দাম বাড়়ে তা বাজারে ছাড়়া হয়। এক সময় আলুর ব্যবসা পুরোপুরি ফড়়েদের হাতে ছিল। তাঁরা কৃষকদের কাছ থেকে আলু কিনে তা হিমঘরে রেখে প্রচুর টাকা লাভ করত। কিন্তু পরে কৃষকদের একটি বড়় অংশ হিমঘরে আলু রাখতে শুরু করে। অভিযোগ, সেই সময় থেকেই হিমঘরের বন্ড নিয়ে টানাটানি শুরু হয়। আগামী ফড়়েদের একটি অংশ বন্ড কিনে রেখে দেওয়া শুরু করে। প্রশাসন নজরদারি শুরু করলেও তার পরিবর্তন হয়নি বলে অভিযোগ। হিমঘর কর্তৃপক্ষ অবশ্য দাবি করেছেন, তাঁরা নিয়ম মেনেই বন্ড বিলি করছেন।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement