রামকেলি ধাম। নিজস্ব চিত্র।
কোভিড পরিস্থিতির কারণে এ বছরেও মেলা বন্ধ শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর পীঠস্থান রামকেলিতে। দেশ-বিদেশ থেকে আসা সাধুসন্তদের জমায়েতের বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশ এবং প্রচার শুরু করেছেন মন্দির কর্তৃপক্ষ। উত্তর পূর্ব ভারতের একমাত্র মাতৃ পিণ্ডদানের স্থান এই রামকেলি ধাম। কিন্তু এ বছর সব রকম জমায়েতের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে প্রশাসন।
আগামী ১৫ জুন থেকে রামকেলি ধামে শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু এবং রাধা গোবিন্দ মদনমোহনের বার্ষিক উৎসব শুরু হবে। সাতদিন ধরে চলে পূজাপাঠ এবং উৎসব। মালদহে ইংরেজবাজার ব্লকের মহদীপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ঐতিহাসিক নিদর্শন ক্ষেত্র গৌড় যাওয়ার পথেই রয়েছে রামকেলি ধাম। যেখানে মহাপ্রভু শ্রীচৈতন্যদেবের পদচিহ্ন রয়েছে। এই পদচিহ্নকে ঘিরে গড়ে উঠেছে মন্দির। রয়েছে শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর বিশাল একটি মূর্তিও। রয়েছে রাধাগোবিন্দ মদনমোহনের বিগ্রহও। যাঁকে ঘিরে প্রতি বছর জুন মাসের ১৫ তারিখ থেকে শুরু হয় উৎসব। কিন্তু এ বছর আচার-অনুষ্ঠান হলেও, বন্ধ থাকছে মেলা।
কথিত আছে প্রায় পাঁচশো বছর আগে রামকেলিতে পদার্পণ করেছিলেন মহাপ্রভু শ্রীচৈতন্যদেব। সেখানে একটি গাছের তলায় দীর্ঘক্ষণ বিশ্রাম নিয়েছিলেন মহাপ্রভু । সেই গাছকে ঘিরেই মহাপ্রভুর বেদী তৈরি করা হয়েছে। এবং মহাপ্রভু শ্রীচৈতন্যদেবের পদচিহ্নকে ঘিরে তৈরি হয়েছে মন্দির। মহাপ্রভু শ্রীচৈতন্যদেব এখানে এসেই রূপ গোস্বামী এবং সনাতন গোস্বামীকে কৃষ্ণ মন্ত্রে দীক্ষা দিয়েছিলেনঁ। তাদের উদ্যোগে গড়ে উঠেছিল মদন মোহনের মন্দির। এবং এখান থেকেই সনাতন ধর্মের প্রচার করার আদেশ দিয়েছিলেন মহাপ্রভু।
রামকেলি ধামের মদনমোহন মন্দির কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, প্রায় পাঁচশো বছর আগে ১৫ জুন মহাপ্রভু শ্রীচৈতন্যদেব রামকেলিতে পদার্পণ করেছিলেন। সেই দিনটিকে ধরেই এখানে উৎসব পালিত হয়ে থাকে। সাতদিন ধরে বিশাল মেলা চলে এবং উৎসব হয়। কিন্তু করোনা সংক্রমণের জেরে গত বছর থেকেই মেলা বন্ধ। দূর-দূরান্ত থেকে বহু সাধু-সন্তেরা এখানে আসেন। কিন্তু করোনা সংক্রমণ এবং লকডাউন পরিস্থিতির মধ্যে কোনও রকম জমায়েত করতে দেওয়া হবে না।