Bangladesh Crisis

সীমান্ত-পথে বন্ধ রয়েছে বহির্বাণিজ্য

মঙ্গলবার সাতসকালেই মহদিপুর এলাকার ‘কোতোয়ালি দরোয়াজা’ খুলে দিয়েছিল বিএসএফ। কিন্তু এই সীমান্ত দিয়ে রফতানি হবে কি না, তা নিয়ে দোলাচল ছিল।

Advertisement

জয়ন্ত সেন 

মহদিপুর শেষ আপডেট: ০৭ অগস্ট ২০২৪ ০৯:৩৯
Share:

বাংলাদেশ থেকে এপারে ভারতে এসে সচিত্র পরিচয় পত্র দেখে নিচ্ছে পুলিশ ও বিএসএফ। হিলি চেকপোস্টে ছবি অমিত মোহান্ত।

বাংলাদেশের পরিস্থিতির জেরে মঙ্গলবার মালদহের মহদিপুর সীমান্তপথে বন্ধ থাকল রফতানি বাণিজ্য। সূত্রের দাবি, রফতানি বন্ধ থাকায় এ দিন বৈদেশিক মুদ্রার নিরিখে বিপুল ক্ষতির পাশাপাশি সরকার পেল না অনেক টাকার ‘ডিউটি ট্যাক্স’ও। রফতানি বন্ধ থাকলেও কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে এ দিন মহদিপুর ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে যাতায়াত হয়েছে। তবে, সংখ্যাটা অন্য দিনের তুলনায় বেশ কম। মূলত চিকিৎসার জন্যই বাংলাদেশের কিছু মানুষ ভারতে ঢুকেছেন। এপারে চিকিৎসা করিয়ে ফিরেও গিয়েছেন বেশ কিছু বাংলাদেশি নাগরিক।

Advertisement

এ দিনও মালদহ জেলার ১৭২ কিলোমিটার বাংলাদেশ সীমান্ত জুড়ে সীমান্তরক্ষী বাহিনীর নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার ছিল। হবিবপুরের টিলাসন, জোতকবি, চাঁপাডাঙা, ইটাঘাঁটি, আদমপুর, আগ্রা হরিশ্চন্দ্রপুর থেকে পান্নাপুর ও কালিয়াচক ৩ ব্লকের মিলিক সুলতানপুর-সহ কাঁটাতারহীন এলাকায় দ্বিগুণ জওয়ান মোতায়েন করা হয়েছে বলে এ দিন বিএসএফের দক্ষিণবঙ্গ ফ্রন্টিয়ার সূত্রে জানা গিয়েছে। কালিয়াচক-৩ ব্লকের গঙ্গার সীমান্তপথে এ দিন স্পিডবোট ও নৌকা নিয়ে টহল দিয়েছেন জওয়ানেরা।

মঙ্গলবার সাতসকালেই মহদিপুর এলাকার ‘কোতোয়ালি দরোয়াজা’ খুলে দিয়েছিল বিএসএফ। কিন্তু এই সীমান্ত দিয়ে রফতানি হবে কি না, তা নিয়ে দোলাচল ছিল। কারণ, রবি ও সোমবার পণ্য নিয়ে বাংলাদেশের পানামা বন্দরে যাওয়া ২৩০টি ট্রাকের পণ্য খালাস করা যায়নি। ফলে, নতুন করে পণ্যবাহী ট্রাক পাঠানো নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। শেষ পর্যন্ত এই সীমান্তে রফতানি বাণিজ্য পুরোপুরি বন্ধই থাকল মঙ্গলবার। তবে দুপুর ১২টার পর থেকে সন্ধে ৭টা পর্যন্ত পণ্য খালাস করে অন্তত ৪০টি ট্রাক এ দিন ওপার থেকে এপারে ফিরেছে। কিছু ট্রাক আজ, বুধবার ফিরতে পারে বলে রফতানিকারী সংগঠন সূত্রে খবর।

Advertisement

ফের কবে এই সীমান্তপথে রফতানি বাণিজ্য সচল হবে, তা নিয়ে চিন্তিত মহদিপুর এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন। তাদের মতে, রফতানি বাণিজ্য থমকে যাওয়ায় বিপুল ক্ষতির মুখোমুখি হতে হচ্ছে। এ দিনও সকাল থেকে মহদিপুর পার্কিং জ়োনে দাঁড়িয়ে ছিল অন্তত ৩০টি পেঁয়াজ-বোঝাই ট্রাক। আশঙ্কা, দু’তিন দিনের মধ্যে রফতানি বাণিজ্য সচল না হলে পচে যেতে পারে পেঁয়াজ। কাঁচালঙ্কা-বোঝাই চারটি ট্রাকও ছিল পার্কিং জ়োনে। জানা গিয়েছে, সন্ধের দিকে সেগুলিকে মালদহ জেলা নিয়ন্ত্রিত পাইকারি বাজারে বিক্রির জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। মহদিপুর এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সম্পাদক হৃদয় ঘোষ বলেন, ‘‘প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রার ক্ষতি হল। পচনশীল পণ্য সামগ্রীর ট্রাক পার্কিং জ়োনে দাঁড়িয়ে রয়েছে। রফতানি সচল না হলে পণ্য পচে যেতে পারে। আমরা বাংলাদেশের আমদানিকারীদের সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছি। কিন্তু পরিস্থিতির কারণে সমস্যা হচ্ছে।’’ চিকিৎসা সংক্রান্ত কাজে এই সীমান্তপথে আসা-যাওয়া অল্প হলেও এ দিন হয়েছে। কলকাতায় চিকিৎসার জন্য স্বামী, শাশুড়ি, মেয়েকে নিয়ে বাংলাদেশের চাঁপাই নবাবগঞ্জ থেকে মহদিপুরে আসেন লিজা চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘‘কয়েক বছর ধরে কলকাতায় আমার চিকিৎসা চলছে। চিকিৎসক আগামী শুক্রবার আবার দেখবেন। তাই দেশের এই পরিস্থিতির মধ্যেও পরিবার নিয়ে ভারতে আসতে হয়েছে। আশা করছি, দ্রুত শান্তি ফিরে আসবে দেশে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement