মালদহের মহদিপুর সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশের পথে পেঁয়াজ বোঝাই ট্রাক। নিজস্ব চিত্র।
দুপুর ১২টা ৩৫ মিনিট। বিএসএফের নজরদারিতে মালদহের মহদিপুর আন্তর্জাতিক বাণিজ্যকেন্দ্র থেকে পেঁয়াজ-বোঝাই ট্রাক রওনা দিল ও-পার বাংলায়। পরে বাংলাদেশের পানামা বন্দরে আটকে থাকা পণ্যবাহী গাড়ির চালকেরা ফিরে আসেন এ-পার বাংলায়। বুধবার, কার্যত চেনা ছন্দে ফিরল মহদিপুর আন্তর্জাতিক বাণিজ্যকেন্দ্র। আমদানি-রফতানি চালু হতে স্বস্তিতে ব্যবসায়ীরা। তাঁদের দাবি, সোম ও মঙ্গলবার আমদানি-রফতানি বন্ধ থাকায় প্রায় ৬০ কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে।
আমদানি-রফতানিকারকরা দাবি করেছেন, মহদিপুর সীমান্ত দিয়ে ৩০০-৩৫০ পণ্যবাহী ট্রাক চলাচল করে। এ দিন সীমান্ত দিয়ে ৭৫টি পণ্যবাহী ট্রাক ও-পারে রওনা দেয়। এর মধ্যে ৬০টি ট্রাকই পেঁয়াজের। এ ছাড়া ডাল, শুঁটকি মাছ, গুড়ের ট্রাকও ও-পারে গিয়েছে। মহদিপুর এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের তরফে কার্যকারী সভাপতি হৃদয় ঘোষ বলেন, “দু’দিন আমদানি-রফতানি বন্ধ থাকায় প্রচুর টাকার ক্ষতি হয়েছে। কাঁচামাল বোঝাই ট্রাক ও-পারে রফতানি হয়েছে। পাথর-বোঝাই ট্রাক এখনও সীমান্তে আটকে আছে। ও পারে গাড়ির চালকেরাও ফিরে আসতে শুরু করেছেন।” মালদহের শুল্ক দফতরের সুপার দেশদুলাল চট্টোপাধ্যায় বলেন, “মহদিপুর সীমান্ত দিয়ে রফতানি শুরু হয়েছে। আশা করছি, আগামীতে আমদানি-রফতানিতে গতি আসবে।”
দু’দেশের নাগরিকদের যাতায়াতও এখন স্বাভাবিক মহদিপুর অভিবাসন কেন্দ্রে। সেখানে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশের পরিস্থিতির বর্ণনা করেন আওয়ামি লিগের নেতা মহম্মদ হেলালউদ্দিন। রাজশাহী জেলার আওয়ামি লিগের যুগ্ম সম্পাদক, সাধারণ সম্পাদক, আহ্বায়কের পদ সামলেছেন তিনি, দাবি তাঁর। তিনি বলেন, “রাজশাহীতে তিনটি পুকুরের মাছ লুট হয়েছে। বাংলাদেশ পাকিস্তান আফগানিস্তানে পরিণত হয়েছে। আমি বিরোধী দলের নেতা হওয়ায় আমার উপরে আক্রোশ তৈরি হয়েছে। প্রাণ ভয়ে এ পারে আশ্রয় নিয়েছি।” আভিবাসন কেন্দ্রের দাবি, এখন দৈনিক গড়ে ৫০-৬০ জন মানুষ সীমান্ত পারাপার করছেন। বছরের অন্য সময় দু’তিনশো মানুষ পারাপার করেন। বাংলাদেশে অশান্তির জেরে সীমান্তে সক্রিয় বিএসএফ। মহদিপুর বাণিজ্যকেন্দ্রে কুকুর নিয়ে এই দিন তল্লাশি চালান জওয়ানেরা। বিএসএফের দাবি, কাঁটাতারহীন সীমান্তে জওয়ানের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। নদীপথে স্পিড বোট, নৌকায় তল্লাশি চালানো হচ্ছে। রাতে টহলদারি আরও বাড়ানো হয়েছে।