ভোরের আলোয় জ্বলছে আগুন। নিজস্ব চিত্র
তরাই, ডুয়ার্সের জঙ্গলের অতি পরিচিত দলছুট একাকী হাতি ‘বাঁয়া গণেশ’-এর হানায় আগুন জ্বলল গজলডোবার ভোরের আলো প্রকল্পের একাংশে। বন দফতর সূত্রের খবর, সোমবার রাতে প্রকল্প এলাকার মধ্যে ঢুকে পড়ে বাঁয়া গণেশ। বুনোটিকে দেখামাত্র বনকর্মীরা তাড়ানোর চেষ্টা শুরু করেন। পটকা ফাটানো শুরু হয়। আর সেই পটকার আগুনের ফুলকি উড়ে গিয়ে পড়ে প্রকল্পের একেবারে পিছনের দিকে শুকনো লম্বা ঘাস এবং ছোট গাছে। সঙ্গে সঙ্গে তাতে আগুন ধরে যায়। দাউদাউ করে আগুন ছড়াতে থাকে। বড় গাছের ডাল, বালি-মাটি ও জলের ব্যবস্থা করে দ্রুত আগুন নেভানোর চেষ্টা শুরু করেন বনকর্মীরা। প্রায় আধ ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। তার মধ্যে আরেক দল বনকর্মী, অফিসারেরা এলাকা ছাড়া করেন বাঁয়া গণেশকে।
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, পর্যটনের মেগা হাব ‘ভোরের আলো’-র পিছনের জঙ্গল, বনবস্তি এলাকায় হাতির দল ঢুকে পড়লেও সরাসরি প্রকল্প এলাকায় হানার ঘটনা দ্বিতীয়বার ঘটল। এর আগে এক দফায় প্রকল্প এলাকার ফেন্সিং, পাকা স্তম্ভ হাতির দল ভেঙে গুঁড়িয়েছিল।
এ বার পাকা রাস্তা ধরে বাঁয়া গণেশ ঢুকে পড়েছিল, ভোরের আলো-র কটেজের দিক থেকে আপালচাঁদের জঙ্গলের দিকের রাস্তায়। টহলদারি দলের তা নজরে আসতেই সেটিকে আটকানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়। প্রকল্পের ভিতরে পুরোপুরি ঢুকে পড়লে ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা ছিল। বনকর্মীদের সঙ্গে পুলিশও ঘটনাস্থলে যান। খবর দেওয়া হয়েছিল দমকলকেও। সোমবারের রাতের পর থেকে এলাকার নজরদারি আরও বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বন দফতর।
বাঁয়া গণেশ পুরুষ হাতিটির শুধু বাঁ দিকের দাঁতটি রয়েছে। হাতির দলের সঙ্গে মারামারি করতে গিয়ে সেটির ডান দিকের দাঁতটি ভেঙে যায়। তার পর থেকে বনকর্মী, অফিসারেরা তাকে বাঁয়া গণেশ নামেই ডাকেন। বছর কুড়ির হাতিটি আক্রমণাত্মক প্রকৃতির জন্য পরিচিত।
বনকর্মীরা জানিয়েছেন, রাতে পটকার আওয়াজ এবং হুট করে আগুন দেখে বাঁয়া গণেশ ঘন জঙ্গলে পালায়।
বৈকুন্ঠপুরের বন বিভাগের বনাধিকারিক উমারানি এন বলেন, ‘‘বাঁয়া গণেশ রাতে ওই এলাকায় ঢুকে পড়েছিল। ওকে তাড়াতে গিয়ে পটকার আগুন ঘাসে, পাতায় আগুন ধরেছিল। তবে বনকর্মীদের তৎপরতায় তা ছড়ায়নি। আমরা এলাকায় নজরদারি বাড়িয়েছি।’’
পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, ‘‘প্রকল্প এলাকা পুরোপুরি নিরাপদ। লাগোয়া জঙ্গল থেকে শীতের মরসুমে হাতির দল যাতে এদিক ওদিক ঢুকে না পড়ে, সেই জন্য ‘পরিখা’ খোঁড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’