বেঙ্গল চেম্বার অব কমার্সের আলোচনা সভা। ছবি: বিনোদ দাস
উত্তরবঙ্গে কৃষিজ পণ্য, বনজ সম্পদের প্রাচুর্য এবং নানা ধরনের সুবিধা থাকলেও, সে সব নিয়ে শিল্প গড়তে বিনিয়োগে এখনও সে ভাবে কোনও প্রয়াস নেই। শুক্রবার শিলিগুড়ির মাল্লাগুড়িতে ‘বেঙ্গল চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ়’-এর উত্তরবঙ্গে শিল্প সম্ভাবনা এবং বিনিয়োগ বিষয়ে আলোচনায় এ প্রসঙ্গ উঠল। এ বিষয়ে উদ্যোগী হওয়ার দাবিও তোলা হয়।
উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহের বক্তব্য—কোচবিহারের টমেটো দিল্লি যাচ্ছে, বাড়তি উৎপাদন চাষিরা ফেলে দিচ্ছেন, হলদিবাড়ির লঙ্কা বাজার না পেয়ে নষ্ট হচ্ছে, আলু ফেলে দিতে হচ্ছে, উত্তরে নানা চালও উৎপন্ন হয়। অথচ, এ সবকে কেন্দ্র করে শিল্প গড়তে কোনও সংস্থা এগিয়ে আসছে না। তাঁর ক্ষোভ, উত্তরের পাট, তামাক ট্রাক ভর্তি করে বাংলার বাইরে যাচ্ছে এবং শিল্পে, ব্যবসায় কাজে লাগছে। তিনি বলেন, ‘‘শুধু আলোচনায় সীমাবদ্ধ না থেকে লগ্নি আনা এবং উত্তরবঙ্গের আর্থিক উন্নয়নে ভূমিকা নেওয়া বিষয়ে দিশা মিলবে বলেই আশাবাদী। উত্তরবঙ্গ মানে নানা ফসল এবং বনজ সম্পদ। তা নিয়ে ভাবনাচিন্তা করা যেতে পারে। এ বিষয়ে আমরা পিছিয়ে রয়েছি।’’
আলোচনায় মন্ত্রী দাবি করেন, আগে যোগাযোগ ব্যবস্থার কথা উঠলেও এখন, রাস্তা ভাল হয়েছে এবং বাগডোগরা বিমানবন্দরের মানোন্নয়ন হতে চলেছে। শিল্পোদ্যোগীদের কাছে তাঁর আবেদন— ‘‘আপনারা এগিয়ে আসুন। জমির সমস্যা নেই। দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, কোচবিহারে তোর্সার ধারে প্রচুর জায়গা রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উত্তরবঙ্গে কিছু করতে চাইছেন। প্রচুর লোক এখান থেকে বাইরে চিকিৎসার জন্য যাচ্ছেন। যদিও এখানে চিকিৎসা ব্যবস্থা আগের চেয়ে উন্নত।’’ শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেব দাবি করেন, তিনি উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী এবং পর্যটনমন্ত্রী থাকার সময় পরিকাঠামো উন্নয়নের নানা কাজ করেছেন। বন-পাহাড়ে ঘেরা উত্তরবঙ্গ বরাবরই পর্যটকদের কাছে আকর্ষণের জায়গা উল্লেখ করে মেয়র জানান, বাগডোগরা বিমানবন্দরের উন্নয়নে মুখ্যমন্ত্রী উদ্যোগী হয়ে সমস্ত রকম সহায়তা করেছেন।
‘বেঙ্গল চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ়’-এর তরফে অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর জেনারেল অঙ্গনা গুহ রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘প্রতি বছর এখানে এই কর্মসূচি রাখা হচ্ছে। উদ্দেশ্য— এখানকার চা, পর্যটন, কৃষির মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর উপরে আলোকপাত করা। সেই সঙ্গে ই-কমার্সের মতো অনেক নতুন দিকও রয়েছে, যেখানে সম্ভাবনা রয়েছে। এ সব নিয়ে যাতে উত্তরবঙ্গের অর্থনৈতিক কাজকর্ম আরও বাড়ানো সম্ভব হয়, সে চেষ্টা করা হচ্ছে।’’
চেম্বারের পক্ষে জানানো হয়েছে, সদস্যদের অনেকের বিনিয়োগ রয়েছে উত্তরবঙ্গের স্বাস্থ্য, শিক্ষাক্ষেত্রে এবং উত্তরের সম্ভাবনা চেম্বার বিনিয়োগকারীদের কাছে পৌঁছে দেবে। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ওমপ্রকাশ মিশ্রের বক্তব্য, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে দক্ষ লোক পেতে শিল্পোদ্যোগীদের আরও সহায়তার হাত বাড়াতে হবে। চেম্বারের ফিসক্যাল অ্যাফেয়ার্স কমিটির চেয়ারম্যান বিবেক জালান জানান, উত্তরের রফতানি পরিকাঠামো উন্নয়নের-প্রক্রিয়া চলছে।