—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
ভুটান পাহাড় থেকে ভালুক নেমে এসেছিল জলপাইগুড়ি শহরের পুর এলাকায়। এ বার অচিরেই তা হাতির ক্ষেত্রেও হবে না তো? গত দু’বছর ধরে তিস্তায় হাতির চলাচলের চাপ বাড়তে থাকায় এই প্রশ্নেই হোঁচট খাচ্ছে বন দফতর। শিলিগুড়ি শহরের উপকণ্ঠে ক্রমাগত বাড়ছে বন্য হাতির দল। গজলডোবায় তিস্তা ব্যারাজ থেকে শুরু করে জলপাইগুড়ি সেতুর গোড়া পর্যন্ত তিস্তার চরে একাধিক গ্রামে বেআইনি শস্য এবং আনাজ চাষ এই বিপদ ডাকছে বলেই খবর।
বন দফতর সূত্রে খবর, গত বছর সুন্দরবনের এক মহিলা জলপাইগুড়িতে তিস্তার চরে বাদাম চাষ করেছিলেন। সেই জমিতে এসে হাতির আক্রমণে তিনি মারা যান। দক্ষিণ ২৪ পরগনা ছাড়াও, বীরভূম, মুর্শিদাবাদ থেকে একাধিক চাষি তিস্তার চর বেআইনি ভাবে লিজ় নিয়ে চাষ করছে বলে অভিযোগ। আর তাতেই হাতির বিপদ বাড়ছে জলপাইগুড়ির দিকে। বন আধিকারিকদের আশঙ্কা, ক্রমাগত এই চাপ বাড়তে থাকলে হাতি জলপাইগুড়ি দিয়ে ঢুকে কোচবিহার পর্যন্ত চলে যেতে পারে।
জলপাইগুড়ি বন বিভাগের ডিএফও বিকাশ ভি বলেন, ‘‘নদীগর্ভে চাষ হচ্ছে বলে গত বছরের থেকে হাতি অনেক বেড়েছে। যতবার মহানন্দা অভয়ারণ্যের দিকে ঘুরিয়ে দেওয়া হচ্ছে, সেগুলি আবার ফিরে আসছে জলপাইগুড়ি শহরের দিকে। এই চাষ বন্ধ হওয়া উচিত বলে আমরা প্রশাসনকে জানাচ্ছি।’’ তিস্তাগর্ভে ঘরবাড়ি করে থাকাও শুরু করেছেন বহিরাগতরা। প্রচুর মানুষের চলাচল বেড়েছে এলাকায়। বিদ্যুৎ সংযোগও পাচ্ছেন কেউ কেউ।
গজলডোবা থেকে জলপাইগুড়ি সেতু পর্যন্ত তিস্তার প্রায় ৪৫ কিলোমিটার নদীগর্ভে। বোদাগঞ্জ, বেনিয়াপাড়া, প্রেমগঞ্জের চর, চৌধুরীঘাট, রংধামালির মতো গ্রামগুলির লাগোয়া চরে বর্ষায় সময়টুকু বাদ দিয়ে ধান, বাদাম, আলু ছাড়াও বিভিন্ন আনাজ চাষ শুরু হয়েছে। বন আধিকারিকদের দাবি, বেআইনি চাষের ফলেই বছর বছর আকৃষ্ট হচ্ছে হাতিরা।
সুস্বাদু খাবারের টানে তারা আর এলাকা ছেড়ে যেতে চাইছে না। বন্যপ্রাণ নিয়ে কর্মরত সংস্থা স্ন্যাপ-এর কর্ণধার কৌস্তুভ চৌধুরী বলেন, ‘‘এলাকায় গ্রামবাসীকে নিয়েই অনেকগুলি স্কোয়াড বন দফতরের সঙ্গে করেছি। জলপাইগুড়ির মোবাইল পেট্রলিং পার্টি রেঞ্জটি স্কোয়াডে পরিণত করা খুব প্রয়োজন।’’