প্রচারে বেরিয়ে কেউ ট্রেনে উঠছেন। কেউ চড়ছেন নৌকায়। কারও ভরসা মোটরবাইক। কেউ আবার সরু বাঁশের সাঁকো পেরিয়ে গ্রামে ঢুকছেন। সবমিলিয়ে ভোটারদের কাছে পৌঁছতে চেষ্টার খামতি নেই কোচবিহারের যুযুধান শিবিরের প্রার্থীদের। উন্নয়নের কৃতিত্ব ও অনুন্নয়নের দায় চাপানো নিয়ে জমে উঠেছে ভোটের তরজা।
সোমবার কোচবিহার দক্ষিণ কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী নিখিলরঞ্জন দে ট্রেনে চেপে ভোট প্রচার চালান। এ দিন সকালে দলের সমর্থকদের নিয়ে কোচবিহার স্টেশন থেকে দিনহাটা-শিলিগুড়িগামী ট্রেনে চাপেন নিখিলরঞ্জনবাবু। ট্রেনের একাধিক কামরা ঘুরে বিজেপি প্রার্থীদের ভোট দেওয়ার আবেদন জানান তাঁরা। পরে কোচবিহার জেলা হাসপাতাল লাগোয়া এলাকায় চিকিৎসকদের জন্য অপেক্ষমান রোগীর আত্মীয় পরিজনদের মধ্যেও প্রচার করেন বিজেপি নেতাকর্মীরা।
সিতাই কেন্দ্রের কংগ্রেস প্রার্থী কেশব রায় প্রতিদিনই সিঙিমারি নদী পেরিয়ে যাতায়াত করছেন ভোট প্রচারের জন্য। যোগাযোগের এই সমস্যা নিয়ে সরব তিনি। ওই ব্যাপারে রাজ্য সরকারকে কাঠগড়াতেও তুলছেন তিনি। কেশববাবু বলেন, “তৃণমূল প্রতিশ্রুতি রাখেনি। দিনহাটা-সিতাইয়ের সেতু তৈরিতে ঢিলেমি হচ্ছে। জল কম বলে বাঁশের সাঁকোয় যাতায়াত হচ্ছে।” মেখলিগঞ্জেও ভোট প্রচারে ইস্যু সাঁকো। ওই কেন্দ্রের ফরওয়ার্ড ব্লক প্রার্থী পরেশ অধিকারী নৌকোয় তিস্তা নদী পেরিয়ে হলদিবাড়ি এলাকায় ভোট প্রচারে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন।
তৃণমূল নেতৃত্বের অবশ্য বক্তব্য, বিরোধীদের ওই সব অভিযোগ পুরোপুরি ভিত্তিহীন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেলমন্ত্রী থাকাকালীন কোচবিহারে একাধিক ট্রেন চালু হয়। সিতাইয়ে সিঙিমারি নদীর ওপর সেতুর কাজ প্রায় সম্পূর্ণ হয়েছে। তুফানগঞ্জের দেওচড়াইয়ে কালজানি সেতুও চালুর অপেক্ষায়। মেখলিগঞ্জে তিস্তার ওপর সেতু তৈরির কাজের সূচনা হয়েছে।
বিরোধীদের অবশ্য অভিযোগ, সম্প্রতি রবীন্দ্রনাথবাবু রায়ডাকের বাঁশের সাঁকো পেরিয়ে তুফানগঞ্জের অন্দরান ফুলবাড়িতে ভোট প্রচারে যান। তুফানগঞ্জের তৃণমূল প্রার্থী ফজল করিম মিঁয়া নৌকা চেপে চর বালাভূতে গিয়ে প্রচার করেন।
রবীন্দ্রনাথবাবু অবশ্য রায়ডাকের সেতুর অনুমোদন হয়েছে বলে আগেই জানিয়েছেন। ফজল করিম মিঁয়া বলেন, চর বালাভূতের সেতুও তৈরি করা হবে। তৃণমূলের অবশ্য দাবি, ৩৪ বছরে যা হয়নি সেরকম অনেক সমস্যাই গত পাঁচ বছরে মিটেছে।