ঠেকা: ভুতনি কোশীঘাটে বালির বস্তা ফেলে গঙ্গাভাঙন রোখার চেষ্টা সেচ দফতরের। নিজস্ব চিত্র।
মালদহ জেলায় এবারে গঙ্গা ভাঙন রীতিমতো উদ্বেগজনক। রতুয়ার জঞ্জালিটোলা থেকে জেলার শেষ সীমানা শোভাপুর পর্যন্ত গঙ্গার প্রায় ৭০ কিলোমিটার পথে ৯টি পয়েন্টে ব্যাপক ভাঙন চলছে। এরমধ্যে দু’টি জায়গায় আবার দু-তিন বছর আগে বোল্ডার দিয়ে ভাঙন রোধের কাজ হয়েছিল। এবারের ভাঙনে সে সবও অনেকটাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তার উপর প্রতিদিন গঙ্গার জল বেড়ে চলায় ভাঙন ভয়াবহ আকার নিয়েছে।
এবারে বর্ষার শুরু থেকেই মালদহে গঙ্গা ভয়ঙ্কর রূপ নিয়েছে। সেচ দফতর সূত্রে খবর, উত্তরাখণ্ড, উত্তরপ্রদেশ ও বিহারের আপার ক্যাচমেন্ট থেকে জল নেমে আসায় মালদহে এখন গঙ্গা রীতিমতো ফুঁসছে। দু’দিন আগেই গঙ্গার জল স্তর বিপদসীমা পার করেছে। সোমবার গঙ্গার জল স্তর ছিল ২৫.২০ মিটার, যা চরম বিপদসীমার চেয়ে মাত্র .১০ মিটার কম। জানা গিয়েছে, বিহার থেকে মালদহে গঙ্গা ঢুকেছে রতুয়ার বিলাইমারি গ্রাম পঞ্চায়েতের জঞ্জালিটোলার পাশ দিয়ে। এই জঞ্জালিটোলায় প্রায় সাড়ে চার কিলোমিটার এলাকায় ভাঙন চলছে।
ভাটার দিকে মানিকচক ব্লকের ভুতনির কেশরপুর, বাগেধানটোলা, ডোমহাট, গোপালপুর হয়ে কালিয়াচক ২ ব্লকের জোতকস্তুরী, সকুল্লাহপুর এবং কালিয়াচক ৩ ব্লকের বীরনগর ও পারলালপুরে ভাঙন চলছে। এসব এলাকায় আবাদি জমির পাশাপাশি শতাধিক পরিবারের ঘরবাড়ি ইতিমধ্যে গঙ্গা গ্রাস করেছে। এদিকে, বাগেধানটোলা ও পারলালপুরে গঙ্গা ভাঙনের প্রকোপ এতটাই বেশি যে সেখানে গত তিন বছর আগে বোল্ডার ফেলে ভাঙন রোধের যে কাজ হয়েছিল সেই অংশ ভেঙে জল ঢুকে পড়েছে।
ভাঙনের আতঙ্কে গঙ্গা পাড়ের বাসিন্দাদের রাতের ঘুম উড়ে গিয়েছে। অসহায় বাসিন্দারা বলছেন, ‘‘গঙ্গা ভাঙন যেভাবে বেড়ে চলেছে তাতে সব কিছু আমাদের হাতের বাইরে চলে যাচ্ছে।’’ সেচ দফতরের মালদহ ডিভিশনের নির্বাহি বাস্তুকার প্রণব সামন্ত বলেন, ‘‘গঙ্গা ভাঙন পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। তবে আমরা বালির বস্তা ফেলে, ডিপট্রিজ পদ্ধতি প্রয়োগ করে ভাঙন রোখা চেষ্টা করছি।’’ সেচ ও উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, ‘‘সীমিত আর্থিক ক্ষমতার মধ্যে আমরা ভাঙন ঠেকানোর যথাসাধ্য চেষ্টা করছি।’’