প্রতীকী চিত্র।
হাত-পা না ধুয়ে ঘরে ঢোকায় বাবা বকেছিলেন। তাতেই বাড়ি থেকে রাগ করে বেরিয়ে যায় ১০ বছরের ছেলে। এর পর খুঁজে হয়রান পরিবার এবং এলাকাবাসী। এলাকায় হুলস্থুল পড়ে যায়। খোঁজ না পেয়ে যখন বাড়ি ফিরেছে শেষে জানতে পারেন আত্মীয়ের বাড়িতে একাকী বিশ্রাম নিচ্ছিল সেই বালক। শনিবার শিলিগুড়ি পুরসভার ১০ নম্বর ওয়ার্ডের ঘটনা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সেই ছেলের বাবার দাবি, এ ভাবে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাবে তিনি ভাবতেও পারেননি। এর আগেও নানা বিষয়ে ছেলেকে বকেছেন। রাগ করলেও বেরিয়ে যাবার ঘটনা ঘটেনি। তিনি বলেন, ‘‘ছোটরা কেন যে এখন অল্পেতেই রেগে যাচ্ছে জানি না। ওদের চলাফেরাতেও পরিবর্তন লক্ষ করা যাচ্ছে।’’
শহরের অভিভাবকদের একাংশের দাবি, স্বাভাবিক সময়ে স্কুলে যাওয়া, খেলায় মত্ত থেকে ছোটদের সময় কাটত। এখন এই পরিস্থিতিতে হয় মোবাইলে ক্লাস করছে, নয়তো কম্পিউটারে গেম খেলছে। সারাক্ষণ মোবাইল, কম্পিউটারে যুক্ত থাকায় অনেকের চলাফেরায় পরিবর্তন ঘটেছে। অনেকে বদমেজাজি, খিটখিটে হয়ে যাচ্ছে। তাই বলে কি মা-বাবা একটু বকবেন না, শাসন করবেন না? প্রশ্ন অভিভাবকদেরই অধিকাংশের। তাঁদের দাবি, এটুকু শাসন না থকলে ছেলেমেয়েরা কম বয়সেই ভুল পথে যেতে পারে। সেজন্য বুঝিয়ে শাসন করাটাও জরুরি। স্কুল বন্ধ। অনলাইনের মধ্যে পড়াশোনা না করলে শিখতেও পারবে না। কিন্তু সেই সব যন্ত্রের মধ্যে সারাক্ষণ ডুব দিয়ে থাকাটাও কাজের কথা নয়, মানেন সব অভিভাবকেরাই।
শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালের শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ সদনকুমার বণিক জানান, ৮০-১০ বছরের ছেলেমেয়েদের মধ্যে এমন সমস্যা দেখা যাচ্ছে। তারা মোবাইল, কম্পিউটারে মেতে থাকলে শারীরিক নড়াচড়া কম হয়। বাইরের পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাওয়া কষ্ট হয়। মা-বাবা স্নেহ, পারিবারিক সমস্যা থাকলেও এই বয়সের ছেলেমেয়ের মধ্যে এমন প্রবণতা দেখা যায়। তিনি বলেন, ‘‘একটানা পড়াশোনা বা মোবাইলের মধ্যে থাকতে না দিয়ে নজর রেখে খেলা, হাসির মধ্যে রাখতে হবে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের মধ্যে না থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।’’