উদাসীন: মাস্ক খুলে নির্ভয়ে বাজার। রবিবার কোচবিহারে। নিজস্ব চিত্র।
সামাজিক দূরত্ব তো এখন ‘নাম কা ওয়াস্তে’।
মাস্ক না পড়েই বাজারে ঘুরে বেড়াচ্ছেন অনেকে। ভিড়ের মধ্যে ঠাসাঠাসি করে ঢুকেও পড়েছেন সেই অবস্থায়। কেউ বিরক্তির চোখে তাকালে হাত দিয়ে নাক ঢাকছেন। পুজোয় ভিড়ের আশঙ্কায় নানা বিধিনিষেধের কথা বলতে শুরু করেছে পুলিশ-প্রশাসন। কিন্তু তার আগে পুজোর বাজারের এই ভিড় নিয়ন্ত্রণেও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া উচিত বলে মনে করছেন সচেতন লোকজন। কারণ স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদেরই ধারণা, অক্টোবর ও নভেম্বরে আক্রান্তের সংখ্যা হু-হু করে বাড়বে। এর পরেও কেউ কেন সতর্ক হচ্ছেন না, তা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। কোচবিহার সদর মহকুমাশাসক সঞ্জয় পাল রবিবার ব্যবসায়ী ও স্বেচ্ছাসেবীর সংস্থার সদস্যদের নিয়ে বৈঠক করেন। সেখানে ওই বিষয়ে সতর্ক করা হয়। সেই সঙ্গেই এদিন মাস্কবিহীন কাউকে দেখলেই কোভিড পরীক্ষাও করানো হয়।
সদর মহকুমাশাসক বলেন, “পুজোর পাশাপাশি বাজারেও যাতে ভিড় নিয়ন্ত্রণেও নজরদারি রয়েছে। সবাই যাতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাচল করেন, সে-বিষয়ে সতর্ক করা হচ্ছে।” জেলা ব্যবসায়ী সমিতির পক্ষ থেকেও বাজারে মাইকিং করে ক্রেতা-বিক্রেতা সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আবেদন করা হবে। সমিতির চাঁদমোহন সাহা বলেন, “আমরা সবসময়ই ওই প্রচার করছি। এ বার দিনদুয়েকের মধ্যেই বাজার জুড়ে ফের প্রচার করা হবে। নিজেদের সতর্ক হতে হবে। সেটা ভেবেই মাইকিং করা হবে।” বাজারে নজরদারি চালাবে পুলিশও।
কিছুদিন আগেও মাস্ক ছাড়া চলাচল করলে কড়া পদক্ষেপ করতে শুরু করেছিল পুলিশ। অনেকেকে গ্রেফতারও করা হয় সেই সঙ্গে সামাজিক দূরত্ব না মানা হলেও সতর্ক করা হচ্ছিল। অভিযোগ, আনলক পর্ব শুরু হওয়ার পর থেকে সেই কাজে ঢিলেমি শুরু হয়। সেই সুযোগে বেপরোয়া মনোভাব দেখা দেয় বাসিন্দাদের একটি অংশে। এ দিনও ভবানীগঞ্জ বাজারে সে-ই চিত্রই দেখা গেল। এ দিন রবিবার থাকার জন্য পুজোর বাজার করতে অনেকেই ভিড় করেন। ভবানীগঞ্জ বাজারের প্রধান সড়কে ভিড় ছিল অনেকটাই। ওই ভিড়ের একটি বড় অংশের মানুষের মুখে মাস্ক ছিল। অনেকের মুখেই ছিল না। এক ক্রেতা তপন রায় ভবানীগঞ্জ বাজারের প্রধান রাস্তায় হেঁটে যাচ্ছিলেন। তাঁর সঙ্গে পরিবারও ছিল। কেন মাস্ক পরেননি? বললেন, “ও কিছু হবে না।” একটি প্রসাধনীর দোকান থেকে বেরিয়ে আসা এক মহিলা বলেন, “মাস্ক ব্যাগে রেখেছি। পরে নেব।”
প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, “এত কিছু জানার পরেও অনেকে মাস্ক ব্যবহার করছেন না। এতে তো তাঁরা নিজেদেরই ঝুঁকি বাড়াচ্ছেন।”