বাজার-মানব: প্রশাসনের বিধি উড়িয়ে চলছে পুজোর কেনাকাটা। রবিবার কোচবিহারে। নিজস্ব চিত্র।
সরকারি বিধিনিষেধ লঙ্ঘন করায় মালদহ থেকে আলিপুরদুয়ার পর্যন্ত জেলাগুলির বেশ কিছু পুজো বন্ধ করে দিতে নির্দেশ দিলেন করোনা মোকাবিলায় উত্তরবঙ্গের বিশেষ দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক (ওএসডি) সুশান্ত রায়।
যদিও ওইসব জেলা প্রশাসনের বক্তব্য, সরকারি বিধিনিষেধ না মানার কোনও অভিযোগ এখনও পর্যন্ত তারা কোথাও পায়নি। এই পরিস্থিতিতে ওএসডি’র এই নির্দেশ কতটা কার্যকর হবে তা নিয়ে প্রশ্ন প্রশাসনের সব মহলেই।
উত্তরবঙ্গের সব জেলা প্রশাসনেরই বক্তব্য, অভিযোগ না পেলে ব্যবস্থা নেওয়ার কোনও প্রশ্ন ওঠে না। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক আলিপুরদুয়ার জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিকের কথায়, সরকারি বিধিনিষেধ লঙ্ঘনের অভিযোগে কোনও পুজো বন্ধ করতে হলে জনমানসে তার নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। আর রাজ্য প্রশাসন থেকেও এখনও পর্যন্ত পুজো বন্ধের মতো কোনও কড়া বার্তা তাঁদের কাছে আসেনি বলে তিনি জানান। সুতরাং নির্দিষ্ট অভিযোগ না পেলে আগ বাড়িয়ে পুজো বন্ধের কোনও ভাবনা তাঁদের নেই বলেও তিনি জানান।
পুজো ঘিরে করোনার সংক্রমণের আশঙ্কা ঠেকাতে গত কয়েকদিন ধরে প্রশাসনকে সঙ্গে নিয়ে বিভিন্ন জেলার পুজো কমিটির সঙ্গে বৈঠক করেন সুশান্ত রায়। শনিবার আলিপুরদুয়ারে ওই বৈঠকে তিনি সোজাসুজিই বলেন, “অনেক পুজো মণ্ডপে যাচ্ছি। কিন্তু বেশ কিছু জায়গায় সরকারি গাইডলাইন মানা হচ্ছে না। গাইডলাইন মানা না হলে সেই পুজো বন্ধ করে দেওয়া হোক। আমি জেলাশাসকদের সেটাই বলব।”
রবিবার ওএসডি সুশান্ত জানান, উত্তরবঙ্গের সব জেলাশাসককেই তিনি নির্দেশ দিয়েছেন।
কিন্তু তিনি নিজে বললেও উত্তরবঙ্গের একাধিক জেলার শীর্ষ প্রশাসনিক কর্তারা পুজোয় সরকারি গাইডলাইন না মানার বিষয়টি মানতে নারাজ। মালদহের জেলাশাসক রাজর্ষি মিত্র বলেন, ‘‘জেলায় সরকারি গাইডলাইন না মেনে মণ্ডপ হওয়ার কোনও অভিযোগ এখনও আমরা পাইনি। না মানলে অবশ্যই সেই ক্লাবকে সতর্ক করা হবে।’’ কোচবিহার সদর মহকুমাশাসক সঞ্জয় পালও জানান, কোচবিহারে এমন অভিযোগ এখনও পাওয়া যায়নি। পেলে খতিয়ে দেখা হবে।
সরকারি নির্দেশিকা না-মানা আলিপুরদুয়ার জংশনের একাধিক পুজোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে শনিবারের বৈঠকে প্রশাসনের কর্তাদের কাছে আর্জি জানান সুশান্ত। কিন্তু জেলা প্রশাসনের এক কর্তার কথায়, গাইডলাইন না মেনে জেলার কোথাও পুজো হচ্ছে বলে তাঁদের জানা নেই।
তবে জেলাশাসক সুরেন্দ্রকুমার মিনা জানান, শনিবারের বৈঠকেই পুজো কমিটিগুলিকে গাইডলাইন মানতে নির্দেশ দেওয়া হয়।
এরই মধ্যে জলপাইগুড়ির জেলাশাসক অভিষেক তিওয়ারি অবশ্য জানান, কোথাও বিধিভঙ্গের অভিযোগ উঠলে আইন মেনে পদক্ষেপ হবে। তবে শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার ত্রিপুরারি অথর্ব বলেন, “শিলিগুড়িতে আইন মেনেই সবটা করা হচ্ছে। যাঁরা আইন মানবেন না, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”