হবিবপুরে বাড়ি বাড়ি না গিয়ে দুয়ারে রেশন কর্মসূচি (বাঁ দিকে)। ইংরেজবাজারের টাউন হলে দুয়ারে সরকারে শেষ দিনে ভিড় (ডান দিকে)। নিজস্ব চিত্র
অবশেষে পরীক্ষামূলক ভাবে শুরু হল ‘দুয়ারে রেশন’ প্রকল্প। শিবির চালানোর জন্য বেঁধে দেওয়া খরচ নিয়ে কিছু ডিলারদের মধ্যে অবশ্য ক্ষোভ ছড়িয়েছে। কোথাও দুয়ারে না গিয়ে পাড়ায় বিলি হল রেশন সামগ্রী।
উত্তর দিনাজপুর
৯টি ব্লকে ১০৫ জন রেশন ডিলারকে নিয়ে পরীক্ষা মূলকভাবে শুরু হল ‘দুয়ারে রেশন’ প্রকল্প। বুধবার জেলার রায়গঞ্জ, কালিয়াগঞ্জ, হেমতাবাদ, ইটাহার, করণদিঘি, ইসলামপুর, চোপড়া, গোয়ালপোখর-১ ও ২ ব্লকের ১০৫টি জায়গায় শিবির করে ১০৫ জন ডিলার বাসিন্দাদের হাতে রেশনের চাল, আটা ও গম তুলে দেন। আগামী এক মাস জেলায় এক জন রেশন ডিলার সপ্তাহে চারটি করে শিবির করে ওই প্রকল্প চালু রাখবেন।
এ দিকে, রাজ্য সরকারের তরফে ওই শিবির চালানোর জন্য বেঁধে দেওয়া খরচ নিয়ে ডিলারদের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়েছে। রাজ্য এমআর ডিলার অ্যাসোসিয়েশনের জেলা সম্পাদক কমল সরকার বলেন, “রাজ্য সরকার এক মাসে এক জন ডিলারকে মোট বরাদ্দ করা চাল, আটা ও গম বাবদ কুইন্ট্যাল প্রতি ৫০ টাকা করে দেওয়ার কথা জানিয়েছে। ওই টাকায় পরিবহণ খরচ, কর্মীদের মজুরি ও তাঁদের খাওয়া খরচ সম্ভব নয়।” জেলা খাদ্য ও সরবরাহ আধিকারিক সুব্রত নন্দী বলেন, “ডিলারদের সঙ্গে আলোচনা করে উপযুক্ত ব্যবস্থা করা হবে।”
মালদহ
বুধবার সকাল সাড়ে ৯’টা। চাঁচলের প্রত্যন্ত গ্রাম মহদিপুরে ফুলজানবিবির দুয়ারে রেশনের আটা, চাল নিয়ে হাজির হলেন খোদ খাদ্য সরবরাহ দফতরের নিয়ামক পার্থ সাহা। বাড়িতেই রেশনের খাদ্য সামগ্রী পেয়ে খুশি ফুলজান। তিনি বলেন, “বাড়ি থেকে রেশন দোকানের দূরত্ব ৩ কিলোমিটার। স্বামী, ছেলে বাড়িতে না থাকলে রেশন আনতে আমাকেই ছুটতে হত। দাঁড়িয়ে থাকতে হত লাইনেও। সেই ঝঞ্ঝাট এখন আর পোহাতে হবে না।”
মালদহেও পরীক্ষামূলক ভাবে ১১৩ জন ডিলারকে নিয়ে শুরু হয় দুয়ারে রেশন। হবিবপুর, পুরাতন মালদহের বহু গ্রামে দেখা গিয়েছে দুয়ারে না গিয়ে পাড়ায় বিলি করতে রেশন খাদ্য সামগ্রী। ডিলারদের একাংশের দাবি, রেশন দোকানগুলিতে দুই থেকে তিন জন করে কর্মী থাকেন। কম সংখ্যক কর্মী নিয়ে অলি-গলিতে ভ্যান নিয়ে খাদ্য সামগ্রী পৌঁছতে সমস্যা হচ্ছে। পার্থ বলেন, “প্রথম দিনে দুয়ারে রেশনে জেলায় ভাল সাড়া মিলেছে।”
দক্ষিণ দিনাজপুর
দক্ষিণ দিনাজপুরে আজ, বৃহস্পতিবার থেকেই দুয়ারে রেশনের মহড়া শুরুর কথা। দুয়ারে সরকার বুধবার পর্যন্ত চলেছে বলেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানান প্রশাসনের কর্তারা। যদিও বৃহস্পতিবার থেকে ৫১ জন ডিলার উপভোক্তাদের দুয়ারে যাবেন বলে খবর। কিন্তু কারা রেশন বিলি করছেন, সেই তালিকা বুধবার পর্যন্ত তৈরি হয়নি বলে খাদ্য দফতর সূত্রে খবর। এম আর ডিলার সংগঠনের নেতারা দাবি করেন, তাঁরা নিজেরা এই তালিকা তৈরি করতে পারেননি। তা খাদ্য দফতরে জানানো হয়েছে। জেলা খাদ্য নিযামক জয়ন্ত রায় বলেন ‘‘এই বিষয়টি সংশ্লিষ্ট বিডিওদের সঙ্গে কথা বলে ঠিক করে নেবেন ডিলাররা।’’ এ মাসে প্রায় ৯০ শতাংশ মানুষ রেশন নিয়েছেন। মহড়া চলবে অক্টোবরের শেষ পর্যন্ত।
তথ্য সহায়তা: গৌর আচার্য, মেহেদি হেদায়েতুল্লা, বিকাশ সাহা, অভিজিৎ সাহা, শান্তশ্রী মজুমদার