বালুরঘাট জেলা হাসপাতাল পরিদর্শনে ডিএসপি (হেডকোয়ার্টার) বিক্রম প্রসাদ। —নিজস্ব চিত্র।
আরজি কর-কাণ্ডের পর জেলায় জেলায় মহিলাদের নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়ে পুলিশকে আরও বেশি সতর্ক থাকতে দেখা গিয়েছে। আরও বেশি সক্রিয় হয়েছে মহিলা পুলিশকর্মীদের উইনার্স দল। এ সবের মধ্যেই শুক্রবার গভীর রাতে দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাট জেলা হাসপাতালের নিরাপত্তা ব্যবস্থা পরিদর্শনে আচমকা হাজির ডেপুটি পুলিশ সুপার (হেডকোয়ার্টার) বিক্রম প্রসাদ। শুধু জেলা হাসপাতাল নয়, পুলিশের একটি দলকে সঙ্গে নিয়ে বালুরঘাট নার্সিং কলেজ ও অন্য গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলি পরিদর্শন করেন তিনি। রাতে হাসপাতালে নিরাপত্তার জন্য কী বন্দোবস্ত রয়েছে, তা খতিয়ে দেখেন ডিএসপি (হেডকোয়ার্টার)।
দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার সরকারি স্বাস্থ্য পরিষেবার একটি মেরুদণ্ড বলা চলে এই বালুরঘাট হাসপাতালকে। জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ চিকিৎসার জন্য এখানে আসেন। হাসপাতালের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছে একটি বেসরকারি সংস্থা। হাসপাতালের ১০ তলা ভবনের নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছেন ওই সংস্থার ৪২ জন কর্মী। এ ছাড়া হাসপাতাল চত্বরে রয়েছে একটি পুলিশ ক্যাম্প। সেখানে রয়েছেন দু’জন অফিসার ও ১২ জন কনস্টেবল। সঙ্গে জনা ১৭ সিভিক ভলান্টিয়ারও রয়েছেন। ডিএসপি (হেডকোয়ার্টার) জানাচ্ছেন, নিরাপত্তার জন্য কর্মীবল পর্যাপ্ত রয়েছে। কিন্তু তাঁরা কী ভাবে কাজ করছেন, কতটা সক্রিয়, তা খতিয়ে দেখতেই এই আচমকা পরিদর্শন।
তিনি বলেন, “সাম্প্রতিক কালে বিভিন্ন জায়গায় নিরাপত্তা সংক্রান্ত অডিট করা হয়েছে। নার্সিং প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে অডিট করে দেখা গিয়েছে, নিরাপত্তা সংক্রান্ত কিছু উদ্বেগ রয়েছে। হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির বৈঠকেও কিছু উদ্বেগের কথা উঠে এসেছিল। রাতে নিরাপত্তার জন্য পর্যাপ্ত কর্মীবল থাকলেও, তাঁরা কী কাজ করছেন সেটি আচমকা পরিদর্শনে না এলে বোঝা যায় না।” ডিএসপি (হেডকোয়ার্টার) আরও জানান, রাতে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশকর্মীরা ও বেসরকারি সংস্থার নিরাপত্তাকর্মীরা কী ভাবে কাজ করছেন সেটি খতিয়ে দেখা হয়েছে। হাসপাতালের রেজিস্টার কী ভাবে সামলানো হচ্ছে, হাসপাতালের মহিলা কর্মীদের নিরাপত্তা কেমন রয়েছে, সেগুলিও দেখা হয়েছে। তিনি বলেন, “কোথায় কোথায় খামতি রয়েছে, সেগুলিকে চিহ্নিত করা ও নিরাপত্তা আরও মজবুত করার জন্যই পরিদর্শন করা হচ্ছে।”
আরজি কর-কাণ্ডের পর মহিলা পুলিশকর্মীদের উইনার্স দলও যে আরও বেশি সক্রিয় হয়েছে, সে কথাও মানছেন ডেপুটি পুলিশ সুপার। প্রসঙ্গত, এর আগে বারাসত পুলিশ জেলা, বনগাঁ পুলিশ জেলা-সহ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে উইনার্স টিমের টহলদারির ছবি ধরা পড়েছে। রাতে মহিলাদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে গত কয়েক দিন ধরে পুলিশের এই সক্রিয়তা আরও বেড়েছে।