Dragon fruit production

ড্রাগন ফলের চাষে ‘ভাটা’ ১০০ দিনে

উদ্যান পালন দফতরের দাবি, জেলায় ব্যক্তিগত উদ্যোগে ১০ হেক্টর জমিতে ড্রাগন ফলের চাষ হয়। গত তিন বছর ধরে জেলায় ড্রাগন ফলের চাষের সঙ্গে ২৫-৩০ জন কৃষক যুক্ত রয়েছেন।

Advertisement

অভিজিৎ সাহা

মালদহ শেষ আপডেট: ২৫ মার্চ ২০২৩ ০৫:৫৫
Share:

ড্রাগন ফলের চাষে দুর্নীতির অভিযোগ। প্রতীকী চিত্র।

এপ্রিলেই ফুল ফুটতে শুরু করে ড্রাগন ফলের। অভিযোগ, ফুল তো দূরের কথা, একশো দিনের প্রকল্পে তৈরি হওয়া ড্রাগন ফলের বাগানে এখন কংক্রিটের পিলারও হারিয়ে গিয়েছে। কোথাও আবার শুকিয়ে খাঁ খাঁ করছে বাগান। এমনই ছবি মালদহে। একশো দিনের প্রকল্পে জেলার বহু পঞ্চায়েতেই তিন বছর আগে ড্রাগন ফল চাষ শুরু হয়, দাবি প্রশাসনের। তাঁদের দাবি, লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে পঞ্চায়েতগুলিতে ড্রাগন ফলের বাগান তৈরি হয়। তবে, বছর ঘুরতেই ড্রাগন ফল চাষ নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। বিজেপি একশো দিনের প্রকল্পে ওই চাষের নামে লুট হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে। আর একশো দিনের প্রকল্পের টাকা কেন্দ্র বন্ধ করে দেওয়াতেই চাষ বন্ধ হয়েছে বলে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষের একাংশের দাবি। তবে ব্যক্তিগত উদ্যোগে যাঁরা এই ফলের চাষ করেছেন, তাঁরা কিন্তু ভাল লাভ পেয়েছেন বলে দাবি করছেন।

Advertisement

মালদহের অতিরিক্ত জেলাশাসক বৈভব চৌধুরী বলেন, ‘‘এখন ১০০ দিনের কাজ হচ্ছে না। ১০০ দিনে ড্রাগন ফল চাষে কোথাও কোনও দুর্নীতি হয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হবে।’’

উদ্যান পালন দফতরের দাবি, জেলায় ব্যক্তিগত উদ্যোগে ১০ হেক্টর জমিতে ড্রাগন ফলের চাষ হয়। গত তিন বছর ধরে জেলায় ড্রাগন ফলের চাষের সঙ্গে ২৫-৩০ জন কৃষক যুক্ত রয়েছেন। মালদহের উদ্যান পালন দফতরের উপঅধিকর্তা সামন্ত লায়েক বলেন, “ড্রাগন ফল চাষ করে লাভের মুখ দেখা যায়। তাই কৃষকদের ড্রাগন ফল চাষের উৎসাহ দিতে একাধিক পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।” চাঁচলের ড্রাগন ফল চাষি মহম্মদ নামিমুদ্দিন বলেন, “তিন বছর আগে, এক বিঘা জমিতে ব্যক্তিগত ভাবে ড্রাগন ফলের চাষ শুরু করেছিলাম। এখন চার বিঘা জমিতে ড্রাগন ফলের চাষ করছি। লক্ষাধিক টাকা খরচ করে কম পক্ষে দুই থেকে আড়াই লক্ষ টাকা আয় হচ্ছে।”

Advertisement

ড্রাগন ফলে লাভের আশায় একশো দিনের প্রকল্পেও জেলার বহু গ্রাম পঞ্চায়েতে এই চাষ শুরু হয়। বামনগোলার মদনাবতী, পুরাতন মালদহে মহিষাবাথানি, হবিবপুরের কানতুরকা, ইংরেজবাজারের কোতোয়ালি, নরহাট্টা গ্রাম পঞ্চায়েতে এই চাষে ব্যাপক সাড়া পাওয়া যায়। কিন্তু বর্তমানে ছবিটা অন্য রকম। একশো দিনের কাজের প্রকল্পে তৈরি হওয়া অধিকাংশ ড্রাগন ফলের বাগান শুকিয়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ। কেন? উঠছে সেই প্রশ্ন। মদনাবতী গ্রাম পঞ্চায়েতে তৃণমূলের প্রধান রানু বিশ্বাস রায় বলেন, ‘‘কেন্দ্র একশো দিনের বরাদ্দ দিচ্ছে না। তাই ওই প্রকল্পে ড্রাগন ফল চাষের উদ্যোগী হলেও, লোকে খরচ জোগাতে পারছে না।’’

ড্রাগন ফল চাষের নামে জেলায় ১০০ দিনের প্রকল্পের টাকা লুট হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন বিজেপির উত্তর মালদহের সভাপতি উজ্জ্বল দত্ত। তিনি বলেন, “ব্যক্তিগত ভাবে ড্রাগন ফল চাষ করে অনেক কৃষক লাভবান হয়েছেন। শুধু একশো দিনের প্রকল্পে তৈরি হওয়া ড্রাগন ফলের বাগান শুকিয়ে গিয়েছে। বাগান তৈরির নামে জেলায় কোটি কোটি টাকা তছরুপ হয়েছে।” মালদহ জেলা পরিষদের সহকারি সভাধিপতি ও যুব তৃণমূলের জেলা নেত্রী চন্দনা সরকার বলেন, “কেন্দ্র ১০০ দিনের প্রকল্পের বরাদ্দ না দেওয়াতেই, ড্রাগন ফল চাষের উদ্যোগ জেলায় মুখ থুবড়ে পড়েছে। কেন্দ্র সাধারণ মানুষকে এখন ভাতে মারছে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement