প্রতীকী ছবি।
ডলোমাইট দূষণ নিয়ে সুর চড়ল রাজনীতিতেও। রাজ্য সরকার সহযোগিতা না করাতেই মুজনাই স্টেশনের কাছে ডলোমাইটের শেড তৈরি করা যাচ্ছে না বলে দাবি বিজেপির। তৃণমূলের দাবি, বিজেপি আগাগোড়া রেলের হয়ে কথা বলছে।
ভুটান পাহাড় থেকে গাড়িতে ডলোমাইট এসে পৌঁছয় দলগাঁও-বীরপাড়া রেল স্টেশনে৷ তারপর সেই ডলোমাইট ট্রেনে করে পাঠানো হয় ভিন্ রাজ্যে। এই প্রক্রিয়ায় ডলোমাইটের গুঁড়ো বাতাসে ছড়িয়ে দূষণের কবলে গোটা বীরপাড়া। বাসিন্দারা আক্রান্ত হচ্ছেন শ্বাসকষ্ট, চর্মরোগে। নষ্ট হচ্ছে চা বাগান। তাই শেড সরানোর দাবি দীর্ঘদিনের।
রেলের দাবি, মুজনাই রেল স্টেশনের ধারে যেখানে নতুন করে ডলোমাইটের শেড তৈরি হওয়ার কথা, সেখানে প্রয়োজনীয় জমি পাওয়া যাচ্ছে না। রেলের বক্তব্য, ডলোমাইট মজুত করার জন্য অনেকটা জমির প্রয়োজন। রাজ্য সরকার সহযোগিতা করলে জমির অভাব মিটতে পারে। বিজেপির অভিযোগ তা হচ্ছে না। মাদারিহাট-বীরপাড়ার বিজেপি বিধায়ক মনোজ টিগ্গা বলেন, ‘‘মুজনাই স্টেশনে শেড সরিয়ে নিতে রেল উদ্যোগী হয়েছে। এ জন্য নতুন করে লাইনও পেতেছে তারা। রাজ্য সরকারের উচিত ওই স্টেশনের ধারে কিছু জমি অধিগ্রহণ করে তা রেলের হাতে তুলে দেওয়া।’’ বিধায়কের মতে, সরকারের উচিত জেলাশাসকের মাধ্যমে দ্রুত জমি অধিগ্রহণ করা। তবেই ডিসেম্বরের মধ্যে পাকাপাকিভাবে মুজনাই স্টেশনে ডলোমাইটের শেড সরিয়ে নেওয়া সম্ভব হবে।
তৃণমূলের অভিযোগ, বিজেপি আগাগোড়া রেলের হয়ে কথা বলছে, বীরপাড়ায় দূষণ নিয়ে কোনও মাথাব্যথা নেই। মাদারিহাট-বীরপাড়া ব্লকের তৃণমূল নেতা মান্নালাল জৈন বলেন, ‘‘ভোটে জেতার আগে বিধায়ক মানুষকে কথা দিয়েছিলেন ক্ষমতায় এলে এক মাসের মধ্যে তিনি ওই স্টেশন থেকে ডলোমাইটের শেড সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করবেন। ওই কথা তিনি রাখতে পারেননি। এখন রাজ্য সরকারের কোর্টে ঠেলার চেষ্টা করছেন।’’
আলিপুরদুয়ারের জেলাশাসক নিখিল নির্মল অবশ্য জানান, তার কাছে কোনও স্তর থেকে জমি অধিগ্রহণ সংক্রান্ত কোনও নির্দেশ আসেনি। তবে বিষয়টি তিনি খোঁজ নিয়ে দেখবেন। বীরপাড়া বাসিন্দারা অবশ্য ডলোমাইটের শেড সরানোকে কেন্দ্র করে রাজনীতি চান না। তাঁদের বক্তব্য, এলাকার মানুষ ও পরিবেশের দিকে তাকিয়ে অবিলম্বে দলগাঁও-বীরপাড়া স্টেশন থেকে ওই শেড সরিয়ে নেওয়া উচিত।
ডলোমাইটের কবল থেকে বীরপাড়াকে বাঁচাতে এ বছর বারাসত আদালতে জনস্বার্থ মামলা করেন এলাকার এক বাসিন্দা সঞ্জয় মণ্ডল। তিনি বলেন, ‘‘যে কোনও উপায়ে আমরা এই ধুলোর থেকে রেহাই চাই।’’ আলিপুরদুয়ারের ডিআরএম চন্দ্রবীর রমন বলেন, ‘‘দলগাঁও বীরপাড়া রেল স্টেশন থেকে ডিসেম্বর মাসের মধ্যেই শেড তুলে মুজনাই রেল স্টেশনের পাশে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। তার জন্য খুব দ্রুত কাজ চলছে।’’