উদ্দাম: নিষেধ না মেনে বাজছে ডিজে। আলিপুরদুয়ারে। নিজস্ব চিত্র
এ যেন গত বারের দুর্গাপুজোর ভাসানের স্মৃতি ফের এক বার ফিরল এ বারের কালীপুজোর ভাসানে। গত বছর দুর্গাপুজোর বিসর্জনের মতোই বুধবার রাতে আলিপুরদুয়ারে কালীপুজোর বিসর্জনে একের পর এক শোভাযাত্রায় তারস্বরে ডিজে বাজানো হয়। সেইসঙ্গে দেদারে ফাটানো হয় শব্দবাজিও। অথচ, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই পুলিশ নীরব দর্শকের ভূমিকা নেয় বলেও অভিযোগ বিভিন্ন মহলের।
এক বছর আগে দুর্গাপুজোর বিসর্জন নিয়ে আয়োজিত অনুষ্ঠানে মন্ত্রী, বিধায়ক ও জেলা পুলিশের শীর্ষ কর্তাদের উপস্থিতিতে তারস্বরে ডিজে বাজিয়ে একের পর এক শোভাযাত্রা যাওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। যা নিয়ে আলিপুরদুয়ার-সহ বিভিন্ন জায়গায় ব্যাপক হইচই হয়। অভিযোগ, তারপরও সেবার কালী পুজোর বিসর্জনে একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হয়। যার জেরে সেই সময় পুলিশকেও কড়া সমালোচনার মুখে পড়তে হয়।
তবে এই বিতর্কের জেরে এ বার দুর্গাপুজোর ভাসানকে ঘিরে শুরু থেকেই সতর্ক ছিল পুলিশ। যার ফলও মিলেছিল। শহরবাসীর কারও কারও কথায়, ‘‘এ বছর দুর্গাপুজোর ভাসানে অনেক শোভাযাত্রায় ডিজে থাকলেও সেগুলির শব্দের মাত্রা অনেকটাই কম ছিল। তবে কয়েকটি ক্ষেত্রে অবশ্য ব্যতিক্রম ঘটেছিল। যার জেরে তিনটি পুজো কমিটির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয় পুলিশ।’’
কিন্তু অভিযোগ, বুধবার কালীপুজোর বিসর্জনে ডিজের দাপট রুখতে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে কার্যত নিষ্ক্রিয় থেকেছে পুলিশ। আর যার জেরে একের পর এক বিসর্জনের শোভাযাত্রায় তারস্বরে ডিজে বাজানো হয়। চলে শব্দবাজির দাপট। তবে ডিজে ও শব্দবাজিতে বুধবার রাতে আলিপুরদুয়ার শহরকে অনেকটাই আলিপুরদুয়ার জংশন টেক্কা দিয়েছে বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের। আলিপুরদুয়ার জংশন রেলওয়ে হাসপাতাল সংলগ্ন রাস্তাতেও একের পর এক বিসর্জনের শোভাযাত্রা থেকে তারস্বরে ডিজে বাজানো ও শব্দবাজি ফাটানোর অভিযোগ ওঠে। অথচ, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই পুলিশ কার্যত নীরব দর্শকের ভূমিকায় ছিল বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের।
আলিপুরদুয়ারের পরিবেশকর্মী অমল দত্তের অভিযোগ, শুধু সর্বজনীন পুজো নয়, বুধবার রাতে বাড়ির পুজোর বিসর্জনের শোভাযাত্রাতেও ডিজের দৌরাত্ম্য ছিল। সেইসঙ্গে পুলিশের সামনেই শব্দবাজি ফাটানো হলেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ফলে প্রচুর মানুষকে, বিশেষ করে প্রবীণদের সমস্যায় পড়তে হয়েছে। পুলিশ একটু সক্রিয় থাকলে এটা হত না। যদিও জেলা পুলিশের কর্তারা অবশ্য অভিযোগ মানতে নারাজ। আলিপুরদুয়ারের পুলিশ সুপার নগেন্দ্রনাথ ত্রিপাঠী বলেন, ‘‘বিসর্জনের শোভাযাত্রায় ডিজের দাপট রুখতে পুলিশ যথেষ্ট সতর্ক ছিল। যেখানে যেখানে অভিযোগ এসেছে, সেখানেই আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা হয়েছে।’’