—প্রতীকী চিত্র।
চা বাগানে ম্যালেরিয়া নিয়ন্ত্রণ করতে ডাক পড়ছে ‘তিস্তা’র। জলপাইগুড়ি জেলার বিভিন্ন প্রান্তে চা বাগিচার মেয়ে ‘তিস্তা’-কে এত দিন দেখা গিয়েছে ভোটদান নিয়ে বাসিন্দাদের উৎসাহিত করতে। লোকসভা ভোট ফুরিয়েছে। তবে অলস দিন কাটানো নয়, পিঠে চা পাতার ঝুড়ি, এক হাতে ‘দু’টি পাতা একটি কুঁড়ি’ ধরা জলপাইগুড়ি জেলার নির্বাচনের সরকারি ‘মুখ’ তিস্তা এ বার বাগানে বাগানে গিয়ে জানাবে মশারি টাঙিয়ে ঘুমোনোর আবেদন, বাড়ির আশপাশে মশার লার্ভা জমতে না দেওয়া, কারও জ্বর হলে স্থানীয় প্রশাসনে খবর দেওয়ার বার্তা।
চা বাগানে ম্যালেরিয়ার সংক্রমণ ঠেকাতে জেলা প্রশাসনের সিদ্ধান্ত, ভোটদানে উৎসাহিত করতে জেলার ‘ম্যাসকট’ ‘তিস্তা’-কে ব্যবহার করতে হবে। নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে সব জেলারই নিজস্ব একটি করে ‘ম্যাসকট’ রয়েছে। জলপাইগুড়ির ‘ম্যাসকট’-এর নাম তিস্তা। চা বাগিচার মেয়ে হিসেবে ভাবনা থেকেই ‘তিস্তা’-কে তৈরি করা হয়েছে। কপালে লাল টিপ, এক হাতে সচিত্র পরিচয়পত্র, অন্য হাতে সদ্য তোলা চা পাতা। এই ‘তিস্তা’ জেলায় জনপ্রিয়। বিধানসভা বা লোকসভায় ভোটদানে উৎসাহিত করায় ‘তিস্তা’ পরিচিত মুখও। জেলা
প্রশাসনের সিদ্ধান্ত, ‘তিস্তা’ ছাড়াও বিশিষ্ট খেলোয়াড় এবং ব্যক্তিত্বদেরও সচেতন করার কাজে লাগানো হবে।
জলপাইগুড়ির অতিরিক্ত জেলাশাসক (ভূমি) প্রিয়দর্শিনী ভট্টাচার্য বলেন, “তিস্তা ম্যাসকটকে সচেতনতা প্রসারের কাজে ব্যবহার করার কথা ভাবা হয়েছে। চা বলয়ে সচেতনতা প্রসার জরুরি। বাংলা, হিন্দি, সাদ্রি, নেপালি— বিভিন্ন ভাষায় লিফলেট ছাপাতে বলা হয়েছে, হাট-বাজারে সচেতন করা হবে। প্রতিটি বাগানে সপ্তাহে এক বার করে শ্রমিকদের নিয়ে বৈঠক করতেও বলা হয়েছে কর্তৃপক্ষকে। ব্লক স্তর থেকে বৈঠক হবে।”
ডুয়ার্সের চা বাগানে ম্যালেরিয়ার প্রকোপ বেড়েই চলেছে। জেলা স্বাস্থ্য প্রশাসনকে ‘হট স্পট’ চিহ্নিত করতে বলেছে প্রশাসন। চা বাগান পরিচালকদের তরফে জেলা প্রসাসনকে ম্যালেরিয়ার প্রকোপ হাতের বাইরে চলে যাওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়। তড়িঘড়ি বৈঠক ডাকে প্রশাসন। ম্যালেরিয়া ঠেকাতে চা বাগানে কী করণীয় তার তালিকা করে, একটি সময় সারণিও তৈরির নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন। চা বাগানে কোথায় মশার লার্ভা জন্ম নিচ্ছে খুঁজতে স্বাস্থ্যকর্মীরা এবং চা বাগান কর্তৃপক্ষ যৌথ নজরদারি চালাবেন। প্রতি মাসের চতুর্থ শনিবার গ্রাম পঞ্চায়েতে চা বাগান এবং স্বাস্থ্য দফতরকে বৈঠকে বসতে হবে বলে নির্দেশ প্রশাসনের। এ সবের সঙ্গেই সমান্তরাল ভাবে সচেনতনার কাজ চালাবে ‘তিস্তা’ নামের জেলা প্রশাসনের নির্বাচনী ‘ম্যাসকট’।
জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিকের কথায়, “লোকসভা ভোট পর্ব জলপাইগুড়িতে প্রথম পর্যায়ে মিটেছে। তাই তিস্তার হাতে এখন বিশেষ ব্যস্ততা ছিল না, ম্যালেরিয়া প্রচার তাই ভালই চালাতে পারবে।”