ফাইল চিত্র।
উত্তর দিনাজপুর জেলার দলের দুই বিক্ষুব্ধ নেতাকে কলকাতায় তলব করলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। বিজেপি সূত্রের খবর, ২১ জুন দিলীপের সহায়ক জেলা কমিটির সদস্য বলরাম চক্রবর্তী ফোন করে দ্রুত তাঁদের কলকাতার হেস্টিংসয়ের কার্যালয়ে গিয়ে দিলীপের সঙ্গে দেখা করার কথা বলেন। বিজেপির কিসান মোর্চার জেলা সম্পাদক সুখেন সেনকেও দলের রাজ্য নেতৃত্ব দ্রুত কলকাতায় গিয়ে দিলীপের সঙ্গে দেখা করতে বলেছেন।
২০ জুন রায়গঞ্জের সুপারমার্কেট এলাকার একটি হোটেলের সভাকক্ষে দলের জেলা ও ব্লক নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন দিলীপ। সেই বৈঠক চলাকালীন আচমকা বলরাম ও সুখেন ওই সভাকক্ষে ঢুকে দিলীপের সামনে দলের জেলা ও রাজ্য নেতাদের একাংশের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ তুলে ক্ষোভে ফেটে পড়েন। দিলীপের সামনেই গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব চরমে ওঠে বলে অভিযোগ। বিজেপির অন্দরমহলের খবর, এর পরেই এই তলব।
বলরাম বলেন, “দিলীপবাবু সমস্ত অভিযোগ শোনার জন্য আমাকে ও সুখেনবাবুকে কলকাতায় ডেকেছেন।’’
বলরামের অভিযোগ, দিলীপের বৈঠকে জেলা নেতৃত্ব প্রাক্তন সভাপতি বিশ্বজিৎ লাহিড়ী-সহ জেলা কমিটির সদস্যদের একাংশকে ডাকেননি। পাশাপাশি, বিধানসভা নির্বাচনের মুখে বিশ্বজিৎকে বেআইনি ভাবে সভাপতির পদ থেকে সরানো হয়েছে বলেও তাঁর দাবি। রাজ্য নেতৃত্বের তরফে পাঠানো বাসুদেব সরকারের নিয়োগপত্রে দিলীপের সই নেই। প্রসঙ্গত, এ সব অভিযোগ তুলেই ওই দিন বলরাম ও সুখেন দিলীপের সামনে ক্ষোভে ফেটে পড়েন। বাসুদেবের অবশ্য বক্তব্য, “জেলার দু’একজন স্বঘোষিত অবাঞ্ছিত নেতার মনগড়া ও ভিত্তিহীন অভিযোগকে জেলা নেতৃত্ব গুরুত্ব দিচ্ছেন না।”
অন্য দিকে, বিজেপির এক গোষ্ঠীর ‘পশ্চিমবঙ্গ দিবস’ পালন, আর এক গোষ্ঠীর উত্তরবঙ্গকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল করার দাবি নিয়ে ডামাডোলে সামাজিক মাধ্যমে সরব হয়েছেন মালদহের বিজেপি নেতারাও। বিরোধীরা বলছেন, বিধানসভা ভোটে মানুষের রায়কে মাথা পেতে নিতে পারছে না বিজেপির একাংশ। সে কারণেই এ সব করে অস্থিরতা তৈরির এই অপচেষ্টা।
বিজেপির মালদহ জেলা কমিটির প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক এবং মুর্শিদাবাদ জেলার প্রাক্তন দলীয় পর্যবেক্ষক মানবেন্দ্র চক্রবর্তী ফেসবুকে পোস্ট করেছেন, ‘‘ঘটা করে পশ্চিমবঙ্গ দিবস পালন হচ্ছে। আবার উত্তরবঙ্গকে আলাদা রাজ্যের তকমা দেওয়ার অপচেষ্টা চলছে। শ্যামাপ্রসাদের স্বপ্নের পশ্চিমবঙ্গকে নিয়ে এই দ্বিচারিতা বাংলার মানুষ মেনে নেবে না।...এ সব দাবি দলীয় গাইডলাইনের বাইরে’’ দলের জেলা সভাপতি গোবিন্দচন্দ্র মণ্ডল বলেন, ‘‘চিনের আগ্রাসন থেকে উত্তরবঙ্গকে রক্ষা করতে রাষ্ট্রীয় একতার জন্য হয়তো জনপ্রতিনিধিরা এ সব বলছেন। তবে দল বাংলা ভাগের পক্ষপাতী নয়।’’ এ শুনে মালদহ জেলা তৃণমূল সভাপতি মৌসম নুর বলেন, ‘‘মানুষ ফের তাঁদের জবাব দেবে।’’