রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ।—ফাইল চিত্র।
সরকারি সম্পত্তি নষ্ট করা হলে গুলি করার বক্তব্যেই অনড় রইলেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ। সম্প্রতি এ ধরনের হুমকির পর ফের বুধবার কোচবিহারের পুণ্ডিবাড়িতে বিজেপি প্রভাবিত কর্মচারি সংগঠনের যৌথমঞ্চের সভায় সেই কথারই পুনরাবৃত্তি করলেন দিলীপ।
এ দিন দিলীপ সতর্ক করেন, যাঁরা বাস-ট্রেন ও স্টেশন জ্বালাচ্ছেন, ক্ষমতায় এলে গুলি এই ভাবেই শাস্তি দেবেন তাঁরা। তাঁর বক্তব্য, এ নিয়ে কারও কষ্ট হওয়ার কথা নয়। যারা দেশের সম্পত্তি নষ্ট করছে, তিনি তাঁদের কথা বলেছিলেন। দিলীপের কটাক্ষ, তাঁর ওই মন্তব্যে বহু বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিকের ‘রাতের ঘুম ছুটে গিয়েছে’। সেই সঙ্গে এ দিন তিনি জানান, বিজেপি নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে যে মিথ্যে মামলা হচ্ছে, ক্ষমতা পেয়ে প্রথম মন্ত্রিসভাতেই সেইসব মামলা খারিজ করে দেবেন। দিলীপ বলেন, “গত ছয়-সাত বছরে আমাদের ৯২ জন কর্মীকে খুন করা হয়েছে। টিএমসির গুন্ডারা খুন করেছে, না হলে টিএমসির পুলিশ খুন করেছে। শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে গুলি চালিয়ে দেওয়া হচ্ছে।”
এ দিন পুণ্ডিবাড়িতে উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে সভা করার কথা ছিল দিলীপের। কিন্তু পরীক্ষার কারণ দেখিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। পাশাপাশি, এ দিন দিলীপের বক্তব্য শুরু হওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যেই বিদ্যুৎ সংযোগ চলে যাওয়ায় মাইক বন্ধ হয়ে যায়। বিজেপি সভাপতি অভিযোগ করেন, তাঁর সভা যাতে না হয়, সেই চেষ্টা করা হচ্ছে। তিনি দাবি করেন, তৃণমূল সরকার পুলিশের অফিসারদের সঙ্গে চাকর-বাকরের মতো ব্যবহার করেন। তিনি বলেন, “পুলিশ-প্রশাসনকে চাকরের-বাকরের মতো ব্যবহার করা হচ্ছে। ওসি-আইসি, এসডিপিও-এসপিরা বাড়িতে যেমন চাকর-বাকর ঘর মুছে দেয়, তেমন করছেন। সবাই সভা-মিছিল করছে। বিজেপি করলেই নাকি কেঁপে যাবে পশ্চিমবঙ্গ, সরকার পড়ে যাবে। আরে, সরকার তো এমনিই পড়ে যাবে। মানুষ যার সঙ্গে নেই, সে সরকার চালাতে পারে না।” তাঁর কটাক্ষ, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সিএএ-কে আটকানোর জন্য রাস্তায় হেঁটে বেড়াচ্ছেন এক মাস ধরে। এদিকে প্রশাসন ভেঙে পড়েছে।”
দলীয় কর্মীদের চাঙ্গা করতে তিনি বলেন, “অত্যাচারের বিরোধিতা করছি বলে আমার নামে ৩০-৩৫টি কেস দেওয়া হয়েছে। আজকেও হয়ত একটি কেস হবে। আর কিছু দেওয়ার নেই সরকারের। কেস দেয় আমাকে। কত কেস দেবেন আপনারা? যেদিন আমরা ক্ষমতায় আসব, প্রথম ক্যাবিনেট মিটিংয়ে সমস্ত কেস ডিসমিস করব আমরা।” তৃণমূলের কোচবিহার জেলার নেতা তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ দাবি করেন, মানুষের সম্মান নিয়ে ছিনিমিনি খেলছেন দিলীপবাবুরা। তিনি বলেন, “যাঁদের ভোটে জিতে কেন্দ্রে সরকার গঠন হল, তাঁদেরই এখন অনুপ্রবেশকারী বলা হচ্ছে। মানুষকে এমন ভাবে অসম্মান করার অধিকার দিলীপ ঘোষদের নেই।”