প্রতীকী ছবি।
দু’দিন ধরে ডায়ালিসিস পরিষেবা বন্ধ রায়গঞ্জ মেডিক্যালে। ফলে চিকিৎসা ছাড়াই ফিরে যেতে হচ্ছে কিডনির রোগে আক্রান্তদের। হাসপাতাল সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার বিকেলে আচমকা হাসপাতালের ডায়ালিসিস ইউনিটের রিভার্স অসমোসিস (আরও) প্ল্যান্ট বিকল হয়ে যায়। ওই ইউনিটের টেকনিশিয়ানরা বহু চেষ্টা করেও মেরামত করতে পারেননি।
এই পরিস্থিতিতে শুক্রবার সকালে দু’জন রোগীকে ইউনিট থেকে ছুটি দিয়ে দিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এর পরেই ইউনিটটি অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়। ফলে এ দিন তিন জন রোগী ডায়ালিসিস করাতে এসে ফিরে গিয়েছেন। কবে ওই প্ল্যান্ট মেরামতি করে পরিষেবা স্বাভাবিক হবে, সে বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছু বলতে পারেননি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
হাসপাতালের সুপার গৌতম মণ্ডল বলেন, ‘‘কলকাতার ইঞ্জিনিয়ারদের খবর দেওয়া হয়েছে। কবে থেকে পরিষেবা স্বাভাবিক হবে, তা এখনই বলা হচ্ছে না।’’
শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ডায়ালিসিস ইউনিটে পাঁচটি শয্যা রয়েছে। বিনা খরচের ওই ইউনিট চালু হওয়ার পর থেকে প্রতিদিনই রায়গঞ্জ ছাড়াও জেলার বিভিন্ন এলাকার রোগীরা ডায়ালিসিস করাতে আসেন। এক এক জন রোগী তিন দিন অন্তর সপ্তাহে দু’বার ডায়ালিসিস করাতে ভর্তি হন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, আরও প্ল্যান্টের মাধ্যমে ডায়ালিসিস প্রক্রিয়া চলাকালীন রোগীদের শরীরের দূষিত তরল বার করা হয়। প্ল্যান্টটি বিকল হয়ে পড়ায় ডায়ালিসিস থমকে গিয়েছে।
এ দিন দুপুরে ডায়ালিসিস করাতে এসে ফিরে গিয়েছেন করণদিঘি থানার দোমহনা পঞ্চায়েতের ভুলকির বাসিন্দা মোয়াজ্জেম হোসেন। তিনি জানান, ১১ মাস ধরে তাঁর দু’টি কিডনি ঠিক মতো কাজ করছে না। সেই থেকে সপ্তাহে দু’দিন হাসপাতালে এসে ডায়ালিসিস করাচ্ছেন। তাঁর কথায়, ‘‘ডায়ালিসিস করাতে না পেরে বাড়ি ফিরে আসি। এ দিন অসুস্থ শরীর নিয়ে ৭০ কিলোমিটার বাসে যাতায়াত করতে গিয়ে প্রচণ্ড হয়রানি হয়। দু’-এক দিনের মধ্যে পরিষেবা স্বাভাবিক না হলে আমার মতো গরিব রোগীদের বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে গিয়ে অনেক টাকা খরচ করে ডায়ালিসিস করাতে হবে।’’
রায়গঞ্জের একটি বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টারের কর্ণধার তথা চিকিৎসক শান্তনু দাসের বক্তব্য, ডায়ালিসের অভাবে গুরুতর অবস্থায় থাকা গরিব রোগীদের যাতে ক্ষতি না হয়, সে ব্যাপারে জেলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলি উদ্যোগী হয়েছে।